বেলুন-মুখোশে রঙিন পহেলা বৈশাখ : উৎসবে আনন্দে আত্মহারা শিশুরা
প্রকাশিত:
১৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৪৮
আপডেট:
১৬ এপ্রিল ২০২৫ ০০:০১

পহেলা বৈশাখ মানেই শুধু বড়দের উৎসব নয়, বরং এ দিনটা শিশুদের জন্য যেন এক স্বপ্নের রাজ্য। রমনা পার্ক, শাহবাগ, টিএসসি কিংবা চারুকলার শোভাযাত্রায় দেখা গেল সবচেয়ে বেশি প্রাণচাঞ্চল্য যাদের মধ্যে—তারা এই ছোট্ট মানুষগুলো। কেউ মুখে রং মেখে এসেছে, কেউ হাতে ধরা লাল-নীল বেলুন, কারও মাথায় ফুলের টায়রা। রাস্তার ধারে মুখোশের দোকানে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে শিশুরা। চোখ-মুখে শুধুই বিস্ময় আর উচ্ছ্বাস!
সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগ, টিএসসি এবং রমনা পার্কসহ একাধিক বিনোদন কেন্দ্র ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।
রমনা পার্কের ভেতর ঢুকতে গিয়েই দেখা গেল লম্বা লাইন— যেখানে বড়দের হাত ধরে এসেছে অসংখ্য শিশু। দিনটি ঘিরে ঘোরাঘুরিতে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ দেখা গেছে ছোটোদের মধ্যেই! যাদের হাতে ছিলো রঙিন খেলনা, মুখে হাসি আর চোখে আনন্দের ঝিলিক।
শহরের গরম, ভিড় কিংবা ক্লান্তি কিছুই তাদের থামাতে পারেনি। বরং পরিবারের সঙ্গ পেয়ে আনন্দটা যেন দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
নগরজুড়ে বৈশাখের সাজ, বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ভিড়, আর সব কিছুর মাঝে শিশুদের এই প্রাণচঞ্চলতা যেন মনে করিয়ে দেয়—বাংলা নববর্ষ কেবলই আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি অনুভবের উৎসব। আর সেই অনুভবে সবচেয়ে খাঁটি রঙ মেশায় এই ছোট্ট মানুষগুলোর নিঃশর্ত আনন্দ।
রমনা পার্কে দুই সন্তানকে নিয়ে ঘুরতে আসা এক অভিভাবক বলেন, “আমার দুই ছেলে সকাল থেকেই শুধু বলছে—‘চলো বৈশাখ দেখতে যাবো।’ ওর এই খুশি দেখে আমরা পুরো পরিবার মিলে বেরিয়ে পড়লাম। শহরের কোলাহল আর পড়াশোনার চাপে শিশুদের স্বাভাবিক আনন্দ প্রায়ই হারিয়ে যায়। বৈশাখের এই দিন তাদের জন্য যেন নতুন রং নিয়ে আসে। আর এই বাচ্চাগুলোর জন্যই মনে হয় বৈশাখ এত প্রাণবন্ত।”
সন্তান নিয়ে ঘুরতে আসার অনুভূতি জানিয়ে সাবিনা রহমান নামক অন্য এক বলেন, “পুরো বছর তো কাজ নিয়ে দম ফেলার সময় নেই। এই একটা দিন মেয়েকে নিয়ে একটু প্রাণভরে বেড়াতে এসেছি। ওর মুখের হাসিটাই আমার বৈশাখ।”
তিনি বলেন, “ছোটোবেলায় আমরাও এভাবে বৈশাখ করতাম। এখন সন্তানদের সেই আনন্দটা দেখাতে চাই। আজ সারাদিন ঘোরাঘুরি, খেলনা কেনা, ছবি তোলা—ওরা তো খুশিতে পাগল!”
মিরপুর থেকে আসা রাহাত বলেন, “রমনায় এসে মনে হলো শহরের চাপ একটু হলেও ভুলে থাকা যায়। ছেলে মেয়েরা এত আনন্দ করছে দেখে মনে হলো, বৈশাখ মানে কেবল চারুকলা আর মঙ্গল শোভাযাত্রা নয়, এটা পরিবারকে একসঙ্গে আনন্দে রাখার সময়।”
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: