গণপিটুনির শিকার খাদ্য কর্মকর্তা
প্রকাশিত:
১১ আগস্ট ২০২২ ১১:১৬
আপডেট:
১২ আগস্ট ২০২২ ০৩:৪৫

বাল্যবিয়ে করতে এসে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন ইসকে আব্দুল্লাহ (৫৪) নামে এক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা। মঙ্গলবার (০৯ আগষ্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুড়িগ্রামের রৌমারীর শৌলমারী ইউনিয়নের বড়াইকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করেন ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালু।
ইসকে আব্দুলাহ দিনাজপুর সদরের সুইহারী (খালপাড়া) গ্রামের মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি ঠাকুরগাঁও জেলার রাণী শংকৈল উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।
শৌলমারী ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য ইউনূছ আলী জানান, ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় শৌলমারী এমআর স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ইসকে আব্দুল্লাহ। এর সুবাদে কেন্দ্রেই পরিচয় হয় এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর সঙ্গে। পরে ওই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মোবাইল নম্বরও নেন ওই কর্মকর্তা। এরপর বিভিন্ন সময়ে মোবাইলে কল দিয়ে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে বরযাত্রী নিয়ে বিয়ে করতে উপস্থিত হন ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে। প্রথম স্ত্রীর ভুয়া অনুমতির প্রত্যয়নপত্র সাথে নিয়ে আসেন। তার সঙ্গে ছিলেন কুড়িগ্রাম সদর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব হাসান ও নাগেশ্বরী উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজেদুর রহমান। কিন্তু তারা বিয়েতে সাক্ষী হতে রাজি হননি। ওই খাদ্য কর্মকর্তার কোনো স্বজনও বিয়েতে হাজির হননি। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীর বিয়ের বয়স না হওয়ায় তর্ক-বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এসময় স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই খাদ্য কর্মকর্তাকে গণপিটুনি দেয়। পরে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে তাকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেন রৌমারী সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালু।
অভিযুক্ত কর্মকর্তার স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাদের ঘরে দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। এক মেয়ের বিয়েও হয়েছে। আরেক মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। ছেলে পড়ে দ্বাদশ শ্রেণিতে। তার স্বামী কিছুদিন ধরে দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য তাকে বিভিন্নভাবে চাপ দেন এবং বিয়েতে সম্মতি না দেওয়ায় তাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন। এ নিয়ে তিনি দিনাজপুর থানায় যৌতুক ও নারী নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন।
খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ইসকে আব্দুল্লাহ জানান, তার প্রথম স্ত্রীর দু’টি অপারেশনের কারণে সে শারীরিকভাবে অপারগ। তাই তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। মেয়ের বয়স কম, এটা জানতেন না তিনি। তাই একটু হট্টগোল হয়েছে।’
ওই শিক্ষার্থীর বাবা অভিযোগ করেন, কুড়িগ্রাম সদরে ৩০ শতক জমিতে বাড়ি করে দেওয়া এবং ১০ ভরি স্বর্ণাঙ্কারসহ মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ইসকে আব্দুল্লাহ তার মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: