গুদাম থেকে ৮৯ মে.মেট্রিক টন খাদ্য গায়েব
প্রকাশিত:
২৭ আগস্ট ২০২২ ১০:১০
আপডেট:
১৩ মার্চ ২০২৫ ০৩:৩৫

সাঘাটা উপজেলা বোনারপাড়া খাদ্য গুদামের পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, এলএসডি) জিয়াউর রহমান জিয়ার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) এ অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে বদলি করা হয়। তার স্থলে পারভেজ হোসেন নামে নতুন এক কর্মকর্তা যোগদান করেন। কিন্তু কর্মকর্তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে নানা তালবাহানা শুরু করলে, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে গত ১৮ আগস্ট দায়িত্ব হস্তান্তর করার দিন খাদ্য গুদামের এই ঘাটতি ধরা পরে। পরে ৫টি গুদাম সিলগলা করে রাখেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পরবর্তীতে মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) শেষ বিকেলে সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহীনের নেতৃত্বে উপজেলা খাদ্য কমিটি সিলগালা খুলে সংরক্ষিত ধান চাল গম নতুন করে হিসাব করেন। হিসাব শেষে ওই ৫টি গুদামে মজুদকৃত ৬৭ মে. টন চাল ২১ মে. টন ধান এবং ৭৫০ কেজি গম কম পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় ৮৯ মে. টন খাদ্য ওই ৫ গুদাম থেকে গায়েব হয়েছে। সেই সাথে ৪ হাজার সরকারি খালি বস্তাও উধাও হয়েছে।
এদিকে গুদামের সাবেক কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান গুদামে রক্ষিত খাদ্যের হিসাব বুঝিয়ে দিতে না পেরে আত্মগোপনে রয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহীন জানান, অনিয়ম যেই করুক, তিনি কখনোই ছাড় পাবেননা। তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন গুদামের সাবেক কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানকে খুঁজছে।
শুক্রবার (২৬ আগষ্ট) সন্ধ্যায় সাঘাটা থানার ওসি মতিউর রহমান জানান, বোনারপাড়া খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, এলএসডি) জিয়াউর রহমান জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগটি গতকাল বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক ওয়ালিউর রহমান জানান, সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে সংরক্ষিত মালামাল উধাও হওয়ার সুযোগ নেই। তারপর তদন্তে খাদ্য ঘাটতি পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। দায়ীদের খুঁজে বের করে যথাযথ আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এদিকে এতোবড় কেলেঙ্কারির পরেও গাইবান্ধা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা অন্তরা মল্লিক গণমাধ্যমের সামনে আসছেন না। এসব বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা অন্তরা মল্লিকের সাথে দিনব্যাপী মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
গাইবান্ধা নাগরিক মঞ্চের আহ্বায়ক এ্যাড, সিরাজুল ইসলাম বাবু জানান, সাঘাটা উপজেলার খাদ্য গুদামের এমন কেলেঙ্কারীর দায় গাইবান্ধা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা অন্তরা মল্লিক এড়াতে পারেন না। তার অধিনে থাকা এই গুদামগুলো নিয়মিত পরিদর্শন না করার অভিযোগ উঠেছে। তার দায়িত্বের অবহেলাও ক্রমান্বয়ে স্পস্ট হয়ে উঠছে।
সম্পর্কিত বিষয়:
খাদ্য
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: