নৌকাডুবি: এক বাড়িতেই চার জনের লাশ, শোকে পাথর মা
প্রকাশিত:
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০১:১১
আপডেট:
২২ এপ্রিল ২০২৫ ০২:৪৩

একসঙ্গে সবাই যাচ্ছিলেন মহালয়া অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। আউলিয়ার ঘাটে গিয়ে ভিড় ঠেলে নৌকায় উঠেন তিনি। এরমধ্যেই নৌকা ভরাট হয়ে যায়। তাদের সবাইকে রেখেই ওপারে যেতে বাধ্য হন সাত সন্তানের জননী জলেশ্বরী। ওপারে গিয়ে পেছন ফিরে দেখছিলেন ওরা সবাই একসঙ্গে নৌকায় উঠল। নৌকাটি মাঝনদীতে গিয়ে হঠাৎ উল্টে গেলে তিনি এই দৃশ্য দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। পরে একে একে চারজনের মরদেহ উদ্ধারের খবর পান।
জলেশ্বরীর বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়নের হাতিডোবা এলাকায়। স্বামীহারা জলেশ্বরী বাড়িতে রবিন, কার্তিক আর বাবুল এই তিন সন্তানকে নিয়ে থাকতেন। নাতিদের সঙ্গে সারাক্ষণ গল্পগুজব করে কাটত তার দিন। দরিদ্র এই পরিবারের বাড়ির বধূরা যেন হয়ে উঠেছিলেন এক এক দেবী। সাজানো সংসারে তার চাওয়া ছিল না খুব বেশি। সন্তানরা দিনমজুরের কাজ করে যা আয় করতেন তা দিয়েই সুন্দর চলে যেত সংসার। জলেশ্বরীর সাজানো সংসারে আজ দুঃখের ঘন ছায়া। নৌকাডুবিতে দুই পুত্রবধূ আর দুই নাতিকে হারিয়ে পাগলপ্রায় এই বৃদ্ধা।
রবিনের স্ত্রী তারা রানী ও ছেলে বিষ্ণু, বাবুলের ছেলে দীপঙ্কর আর কার্তিকের স্ত্রী লক্ষ্মী রানী নৌকাডুবিতে মারা গেছেন। নৌকাডুবির শুরুতেই তাদের মরদেহ খুঁজে পান স্বজনরা। এক বাড়িতে চারটি মরদেহ শোকে তাদের পাথর করে তুলেছে।
জলেশ্বরীর ছেলে রবিন জানান, ‘তার একমাত্র ছেলে আর ছোট ভাইয়ের ছেলে একসঙ্গে খেলা করত। তাদের ছুটোছুটিতে পুরো বাড়ি মেতে থাকত। এখন সব স্তব্ধ হয়ে গেছে। তার স্ত্রী আর সন্তানসহ পরিবারের চার সদস্যকে হারিয়েছেন তিনি। এখন আর হারাবার কিছু নেই। বিলাপ করে আরও জানান, জানি না কী দোষ করেছিলন, বিধাতা তাকে এই কারণে এত বড় শাস্তি দিলেন। ’
সম্পর্কিত বিষয়:
নৌকাডুবি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: