মঙ্গলবার, ২২শে এপ্রিল ২০২৫, ৯ই বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


৫১ বছর আগে বঙ্গবন্ধুর পদধূলিতে দুর্গম চর এখন আদর্শ গ্রাম


প্রকাশিত:
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২৩:০৪

আপডেট:
২২ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:৩৫

ফাইল ছবি

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার বাইরে প্রথম লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরপোড়াগাছা ইউনিয়নে যান। সেখানে ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি মহাপ্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও ভূমিহীন ২১০ পরিবারকে তিনি পুনর্বাসন করেন।

সেদিন ৫৯০ একর এলাকা নিয়ে গুচ্ছগ্রাম প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু। নিজ হাতে মাটি কেটে তিনি কিল্লা ও রাস্তা নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। বঙ্গবন্ধুর পদধূলির কারণেই দুর্গম চর এখন আদর্শ গ্রামে পরিণত হয়েছে।

আগামী প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর এই পদক্ষেপ স্মরণীয় করে রাখতে ২০২০ সালে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্মৃতি স্তম্ভ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গুচ্ছগ্রামের কাজ শুরু হয়। এতে নতুন করে ২৮টি পরিবারকে পুনর্বাসন করার কথা রয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে শিশু পার্ক, অডিটোরিয়াম, কাঁচা বাজার শেড, কয়েকটি দোকানঘর ও বিশুদ্ধ পানির ট্যাংক। খুব শিগগিরই এ প্রকল্পটি উদ্বোধন করা হবে বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানায়, বঙ্গবন্ধু আসায় গুচ্ছগ্রামের চেহারা পাল্টে গিয়েছে। এক সময়কার অস্বচ্ছল পরিবারগুলো স্বচ্ছল হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর পদধূলি পড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্মৃতি স্তম্ভ ও গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প দিয়েছেন। আধুনিক বাজার শেড নির্মাণ করা হয়েছে। এজন্য অন্তত একবার এখানকার মানুষজন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরাসরি দেখতে আকুল হয়ে রয়েছেন। ভিডিও কনফারেন্সে এ প্রকল্পের উদ্বোধন না করে প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি আসার জন্য অনুরোধ করছেন স্থানীয়রা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে হেলিকপ্টারযোগে শেখ মুজিবুর রহমান চর পোড়াগাছায় আসেন। এরপর সংক্ষিপ্ত ভাষণ শেষে কোদাল নিয়ে নিজ হাতে মাটি কেটে স্বেচ্ছাশ্রমে তিনি রাস্তা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। বঙ্গবন্ধুর হাতে শুরু হওয়া সেই রাস্তাটি এখন রামগতি-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আর বঙ্গবন্ধুর পদধূলিত সেই স্থানটি 'শেখের কিল্লা' নামে বেশ পরিচিত। কিল্লার পাশে পরবর্তীতে গড়ে উঠেছে দেশের প্রথম গুচ্ছগ্রাম।

২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত শেখের কিল্লা স্থানটি পরিদর্শন করেন। তখন সর্বসম্মতিক্রমে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি রক্ষায় সেখানে শেখের কিল্লার পরিবর্তে 'বঙ্গবন্ধু শেখের কিল্লা' নামকরণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। পরে ২০২০ সালে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা বরাদ্দে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্মৃতি স্তম্ভ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গুচ্ছগ্রামের কাজ শুরু হয়। আগামি ১৩ মার্চ প্রকল্পটি উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী আবদুস শহীদ বলেন, বঙ্গবন্ধু নিজ হাতে মাটি কেটেছিলেন। এরপর রাস্তায় মাটি ফেলে কাজ উদ্বোধন করেছেন। ওই রাস্তাটি এখন রামগতি-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর অনুপ্রেরণায় আজ আমরা নতুন করে বাঁচতে শিখেছি। সেদিন বঙ্গবন্ধুর উপহার পাওয়া কৃষি জমিতে চাষাবাদ করে জীবিকানির্বাহ করছেন তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা দিদার হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নিয়ে ভাবছেন। আমাদের গ্রামটিকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তুলছেন। এটি এখন আদর্শ গ্রামে পরিণত হয়েছে। এখানে স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ ও মন্দীর রয়েছে। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ নেই। একে অপরের সুখ-দুঃখে এগিয়ে আসে। এ গ্রামে অন্তত একবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পদধূলি পড়লে বঙ্গবন্ধুকে হারানোর অনুভূতির কষ্ট কিছুটা কমবে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা একরাম উদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের ২১০ টি পরিবারকে ২৫০ শতাংশ করে জমি দিয়েছেন। নদী ভাঙন ও নোনা পানি থেকে রক্ষা করতে ১০ হাজার ৯০০ মণ গম দিয়ে ৫৯০ একরের গুচ্ছগ্রাম এলাকার চারপাশে বেঁড়িবাধ নির্মাণ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সেই স্মৃতি বিজড়িত এলাকায় পরিকল্পিত উন্নয়ন কাজ করছেন তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আমার কথা হয়েছিল। আমি বঙ্গবন্ধুকে সরাসরি গুচ্ছগ্রাম এলাকাতে দেখেছি। আশা করছি প্রধানমন্ত্রী এখানে আসবেন। এ গুচ্ছগ্রামেই তাকে দেখতে পারবো।

রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ বলেন, গুচ্ছগ্রামে ঘর নির্মাণসহ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এজন্য সেখানে কোনো কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। এর আগে কয়েকবছর বঙ্গবন্ধুর জন্য দোয়া ও তার স্মৃতি চারণ করা হয়েছে।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top