‘রাজা বাবুর’ ওজন ৪০ মণ, দাম হাঁকছেন ২৫ লাখ
প্রকাশিত:
১৪ জুন ২০২৩ ০২:১৫
আপডেট:
২৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৫:৩৮

মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের খাটোপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মফেল ভূঁইয়া। তিনি দেশীয় পদ্ধতিতে বিশাল আকৃতির একটি গরু পালন করেছেন। গরুটির নাম রাখা হয়েছে ‘রাজা বাবু’।
সন্তানের মতো আদর-যত্নে পালন করা রাজা বাবুর দাম ২৫ থেকে ২৮ লাখ টাকা হাঁকছেন মফেল ভূঁইয়া। তবে দাম নিয়ে কড়াকড়ির চেয়ে যারা আদর ও যত্ন সহকারে গরুটি কিনবেন তাদের জন্য বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোয়ালঘর থেকে বের করা হচ্ছে রাজা বাবুকে। যেমন তেজ, তেমন গর্জন। তাকে সামাল দিতে ব্যস্ত মফেল ভূইয়া ও তার দুই সন্তান। ক্যামেরার আলো পড়তেই তেজ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। কোনো রকমে শান্ত করা হয়। মুখের গড়ন আর শরীরের ভাড়ে দুলছে রাজা বাবু। দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়।
কুনিয়া ইউনিয়নের খাটোপাড়া গ্রামের খামারি মফেল ভূইয়া প্রায় সাড়ে ৪ বছর ধরে নিজের সন্তানের মতো আদর-যত্ন করে পালন করছেন রাজা বাবুকে। সম্পূর্ণ দেশি ঘাস আর বিভিন্ন ধরনের ভুসি খাইয়ে গরুটি বড় করেছেন তিনি। গতবার কোরবানির ঈদে গরুটির দাম উঠেছিল ১০ লাখ টাকা। কিন্তু ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় বিক্রি করেননি। এবার আরও যত্ন করে বড় করেছেন রাজা বাবুকে। গরুটির ওজন এখন প্রায় ৪০ মণ বলে দাবি মফেল ভূঁইয়ার।
এ ব্যাপারে মফেল ভূঁইয়া বলেন, সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে ঘাস, ভুসি, খৈল খাইয়ে লালন-পালন করা হয়েছে রাজা বাবুকে। সাবান-শ্যাম্পু দিয়ে প্রতিদিন গোসল করানো হয়। পরম যত্নে গরুটিকে পালন করতে পরিবারের সদস্যরাও কষ্ট করছে। বিশাল আকৃতির গরুটি প্রায় সাড়ে ৯ ফুট লম্বা ও ৬ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন। তাই ন্যায্যমূল্য পেলে বিক্রি করবো। যদি কেউ কিনতে চায়, তাহলে আমার ঠিকানায় আসলেই হবে। সন্তানের মতো লালন করেছি রাজা বাবুকে।
মফেল ভূঁইয়ার ছেলে ফাহিম বলেন, বিশাল আকৃতির রাজা বাবুকে দেখতে প্রতিদিনই শত শত মানুষ ভিড় করে বাড়িতে। অনেকেই সেলফি তোলেন। আমাদের বাড়ি এখন রাজা বাবুর জন্যে পরিচিত হয়ে উঠছে। আমার বাবা অনেক আদর করে তাকে লালন-পালন করেছে। আমরাও গরুটিকে লালন-পালন করতে সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
মফেলের স্ত্রী আলেয়া বেগম বলেন, রাজা বাবুকে লালন-পালন করতে আমাদের অনেক টাকা ঋণ হয়ে গেছে। গত বছর আমরা খামার করেছিলাম সেই খামারের গরু বিক্রি করে কিছু টাকা লস খেয়েছি। আশা করি এবার আমরা সেই লস পুষিয়ে নিতে পারব।
মফেলের বড় মেয়ে ফাহিমা বলেন, গতবারের চাইতে এবার আমাদের গরু অনেক বড় হয়েছে। আশা করি আমরা ভালো দাম পাব।
স্থানীয় বাসিন্দা পারভেজ বলেন, এবার মাদারীপুর জেলার সবচেয়ে বড় গরু এটা। মফেজ ভাইয়ের রাজা বাবুকে লালন-পালন করতে অনেক টাকা ব্যয় করেছে। আশা করি সে এবার সেই ফলটা পাবে। তার পরিশ্রম সফল হবে।
কলেজছাত্র আশিক বলেন, গরুটা দেখতে অনেক সুন্দর। তাই আমি মাঝে মাঝে এসে ছবি তুলি।
কুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অমিত হোসেন কবির বলেন, আমি দেখেছি মফেজ ভাইয়ের কয়েকটি গরুর মধ্যে একটি গরু অনেক বড় হয়েছে। দেখতে অনেক সুন্দর। ওজন প্রায় ৩০-৪০ মণের মতো হবে। বাজারে ভালো দাম থাকলে গরু পালন করতে যা খরচ হয়েছে তা উঠেও কিছু লাভ হাতে থাকবে।
মাদারীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। কুনিয়া ইউনিয়নের মফেজ ভূঁইয়ার খামারে বড় একটি গরু আছে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: