ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক
প্রকাশিত:
২৬ জুন ২০২৩ ১৮:০৬
আপডেট:
২৩ এপ্রিল ২০২৫ ০২:৫৫

ঈদুল আজহার বাকি আর দুদিন। ইতোমধ্যেই রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন ঘরমুখো মানুষ। ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে বাড়ি ফেরায় এবার আর তেমন বেগ পোহাতে হচ্ছে না ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর এবং চাঁদপুরের মানুষদের।
মহাসড়কের সিংহভাগ অংশ নিয়ন্ত্রণ করা হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিয়নের উদ্যোগে ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে যানজট আর ভোগান্তিবিহীন ঈদযাত্রায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন যাত্রীরা।
হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নের নিয়ন্ত্রণাধীন ৮২১ কিলোমিটার মহাসড়ক এবং আঞ্চলিক সড়কে যানজট নেই, স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন ঘরমুখো মানুষ।
সোমবার (২৬ জুন) সকাল সাড়ে ৯টায় মহাসড়কের কুমিল্লা রিজিয়নের অংশে খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে। বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন যাত্রী, চালক এবং হাইওয়ে পুলিশ।
কাউসার হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, ঢাকার ভেতরে কিছুটা যানজট রয়েছে। তবে ঢাকার বাইরে মহাসড়কে আসার পর কোনো যানজট পাইনি। খুব সহজে কুমিল্লায় এসে পৌঁছালাম। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছি। উত্তর বাড্ডা থেকে কমলাপুর আসতে সামান্য কিছু জ্যাম পেয়েছি। ঢাকা থেকে বের হওয়ার পর একটানে কুমিল্লায় এলাম। মনে হয় সর্বোচ্চ ২ ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে।
রয়েল কোচ নামের একটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত যাত্রীবাহী বাসের চালক শাহাবুদ্দিন বলেন, মহাসড়কে গাড়ির চাপ কম। যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা নেই, যার কারণে খুব কম সময়ে কুমিল্লায় আসতে পেরেছি।
অপরদিকে হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নের পক্ষ থেকে ঈদে ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. রহমত উল্লাহ ঢাকা পোস্টকে সেসব পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।
পুলিশ সুপার বলেন, মহাসড়কে যানের জটলা ও ধীরগতির কারণ নিরূপণ করা হয়েছে। কারণ নির্ণয় করে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সেসব পরিকল্পনায় কাজ করা হচ্ছে মহাসড়কে। ফলে মহাসড়কে কোনও যানজট বা ধীরগতি নেই। আসন্ন ঈদুল আজহায় হাইওয়ে কুমিল্লা অঞ্চলের ৮২১ কিলোমিটার জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে পশুবাহী যানবাহনের নিরাপদ চলাচল ও চাঁদাবাজিমুক্ত মহাসড়ক নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
মানুষের স্বস্তির ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে রিজিয়নের ২২টি থানায় ৬৬টি পেট্রোল টিমের পাশাপাশি কোনো ইমার্জেন্সি সামাল দিতে রাস্তায় ৩০টি কুইক রেসপন্স টিম দায়িত্ব পালন করবে।
তিনি বলেন, ঈদযাত্রায় যেকোনো ধরণের দুর্ঘটনা বা প্রতিবন্ধকতা দূর করতে ৫টি সরকারি ও ১২টি বেসরকারি রেকার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত সংখ্যক অ্যাম্বুলেন্স থাকছে দুর্ঘটনায় হতাহতের সেবার জন্য। ঈদযাত্রায় মহাসড়কে যান চলাচল নির্বিঘ্ন করতে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কোনো যানবাহন না থামানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২টি গোয়েন্দা টিম কাজ করছে ঈদের আগে ও পরের সপ্তাহব্যাপী। একটি পূর্ণাঙ্গ কন্ট্রোলরুমের পাশাপাশি রয়েছে ৫টি সাব কন্ট্রোলরুম। হাইওয়ে পুলিশের সদস্য ছাড়াও বিশেষ ইউনিফর্মে কাজ করছে হাইওয়ে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের ১০০ প্রশিক্ষিত সদস্য। এ পরিসেবা ঈদের ১ সপ্তাহ আগে শুরু হয়েছে। ঈদের পরে এক সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
তবে অঝোরে বৃষ্টি হলে মহাসড়কে পানি জমে যায়, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাগুলো মেরামত না করায় বৃষ্টি হলে কিছু কিছু জায়গায় পানিতে তলিয়ে যায় মহাসড়কের একপাশ। গত বৃহস্পতিবার (২২ জুন) ভোর বৃষ্টির কারণে মহাসড়কের কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় চট্টগ্রাম লেনে সড়কের একপাশে পানি জমে গর্ত হয়ে যায়। ফলে চট্টগ্রাম লেনে চান্দিনা থেকে কুমিল্লা সেনানিবাস পর্যন্ত অন্তত ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দুপুরে পানির চলে যাওয়া শেষ হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ বিষয়ে জানতে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীত চাকমাকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: