বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আসছে না ভুটানের পাথর
প্রকাশিত:
৩০ জুলাই ২০২৩ ১৭:৫২
আপডেট:
২২ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:৪১

পবিত্র আশুরায় সরকারি ছুটির পর সচল হয়েছে দেশের একমাত্র চারদেশীয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। রোববার (৩০ জুলাই) সকাল থেকে স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানির কার্যক্রম সচল হয়েছে। ভারতের ফুলবাড়ি স্থলবন্দরে ধর্মঘটের ১১ দিন পর ভারত থেকে পাথর এলেও ১৯ দিন ধরে বন্দরটি দিয়ে ভুটানের পাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে।
স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, পবিত্র আশুরায় একদিন বন্ধ থাকার পর সকাল থেকে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সচল হয়েছে। ভারতের ফুলবাড়ি বন্দরে ধর্মঘটের কারণে ভারত ও ভুটান থেকে পাথর আমদানি বন্ধ থাকার পর ২২ জুলাই থেকে ভারতের পাথর এলেও এখন পর্যন্ত ভুটানের পাথর আসেনি। পাথর আমদানি না হওয়ায় বন্দরটি রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে বন্দর দিয়ে অন্যান্য পণ্য আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক ছিল।
জানা যায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের স্লট বুকিংয়ের নামে প্রতি ট্রাকে ৩-৫ হাজার টাকা আদায় করার প্রতিবাদে ধর্মঘট শুরু করে ফুলবাড়ি বর্ডার লোকাল ট্রাক ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। তাদের দাবি, ভুটানের পাথরবাহী ট্রাক থেকেও টাকা আদায় করতে হবে। ধর্মঘটের কারণে ১১ দিন ভারত থেকে পাথর আমদানি বন্ধ থাকার পর ২২ জুলাই থেকে ভারতের পাথর আসছে। তবে সাময়িকভাবে বন্দরের পাথর ছাড়া বন্ধ থাকলেও ভারত ও নেপাল থেকে গমের ভুসি, আদা, পেঁয়াজ, মসুরের ডাল আমদানি হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে সয়াবিন, কটন, গ্লাস, ওষুধসহ বিভিন্ন পণ্য ভারত ও নেপালে রপ্তানি চলমান রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের ৬ দিনের ছুটির পর ৩ জুলাই থেকে চালু হয়েছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। ১১ জুলাই পর্যন্ত ভারত ও ভুটান থেকে পাথর আমদানি হয়। ১২ জুলাই থেকে ফুলবাড়ী বন্দরে আন্দোলন শুরু হলে তখন থেকেই পাথর আমদানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ধর্মঘটের ১১ দিন পর ২২ জুলাই থেকে ভারত থেকে পাথর আসলেও ১২ জুলাই থেকে ভুটান থেকে পাথর আসা বন্ধ রয়েছে। বন্দরটি পাথর নির্ভর হওয়ায় পাথর না আসায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ইদ্রিস আলী জানান, আমাদের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি পাথরের উপর নির্ভরশীল। এ বন্দরে অন্য সব পণ্য আমদানি-রপ্তানির তুলনায় পাথর আমদানিই হয় বেশি। কয়েক দিন পর আবার ভারত থেকে পাথর আসতে শুরু করেছে। তবে ভুটানের পাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে।
বাংলাবান্ধা কাস্টম সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইদুর রহমান জানান, ভারতে ধর্মঘটের কারণে টানা কয়েকদিন পাথর আমদানি বন্ধ থাকার পর শনিবার বিকেল থেকে পাথর আসা শুরু হয়েছে। তবে ভুটানের পাথর এখনো আসেনি। এক্ষেত্রে ভুটানের সাথে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা সমস্যা সমাধানে চিঠি প্রদান করা হয়েছে। আশা করছি সমস্যা নিরসন হবে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের আমদানি ও রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কুদরত ই খুদা মিলন বলেন, পাথর আসা শুররু হয়েছে। ভারতের ফুলবাড়িতে ¯øট বুকিংয়ের নামে রপ্তানিযোগ্য পাথরের ট্রাক থেকে আকার ভেদে অতিরিক্ত টাকা আদায় করার কারণে সেখানকার ট্রাক মালিকেরা পাথর পাঠানো বন্ধ রেখেছিলেন। যার কারণে ১১ দিন পাথর আমদানি করা সম্ভব হয়নি। পাথর আমদানি করতে না পারায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পাথর আসতে শুরু করেছে। ভুটানের পাথর আসছে না। বিষয়টি নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর এটি। পাথর আমদানি দিয়ে শুরু হয়েছিল বন্দরের আমদানি কার্যক্রম। প্রতিদিন বন্দরটিতে অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি ৪০০-৫০০ ট্রাক পাথর আমদানি হয়ে থাকে। ফুলবাড়িতে ধর্মঘটের কারণে বন্দরের আমদানিকারক ও বন্দর সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: