মঙ্গলবার, ২২শে এপ্রিল ২০২৫, ৯ই বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


চুইঝাল চাষে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন যশোরের ৭০০ যুবক


প্রকাশিত:
৩১ আগস্ট ২০২৩ ১৮:২৯

আপডেট:
২২ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:২২

ছবি সংগৃহিত

চুইঝাল খুলনা বিভাগের জনপ্রিয় একটি মসলা। এটি সাধারণত পরগাছা ও গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ থেকে তৈরি হয়। গরু এবং খাসির মাংস রান্নায় এটি বেশি ব্যবহার করা হয়। এ চুইঝাল চাষ হচ্ছে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার খানপুর, মুন্সি খানপুরসহ পাঁচটি গ্রামে। এই প্রজেক্টের সঙ্গে জড়িত পাঁচটি গ্রামের প্রায় ৭শ বেকার যুবক।

করোনা মহামারীর সময় যখন চাকরি হারিয়ে মানুষ ঘরে বসে ছিলেন তখন বেকারত্ব দূর করতে চুইঝাল চাষের উদ্যোগ নেন মুন্সি খানপুর গ্রামের ডিপ্লোমা কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান সবুজ (৩০) নামে এক যুবক। এরপর মুন্সি খানপুর, শ্যামকুড়, তেঘরি, ধলিগাতিসহ প্রায় পাঁচটি গ্রামের ৭শ বেকার যুবককে নিয়ে গড়ে তোলেন 'খানপুর চুইঝাল প্রজেক্ট'।

উদ্যোক্তা মাসুদুর রহমান সবুজ জানান, তার বাবা হাজী আনসার মোড়লের চুইঝালের ব্যবসা থেকে তার মাথায় চুইঝালের চাষ করার আইডিয়া আসে। এরপর গ্রামের পতিত বাগান ও জমিতে আম গাছ, সুপারি গাছ, কাঠাল গাছ, জাম গাছে এ চুইঝালের চারা রোপণ করেন। প্রথমে তিনি ২০টি চারা রোপণ করে এ চাষ শুরু করেছিলেন। এরপর তার দেখাদেখি মুন্সি খানপুরসহ আশেপাশের পাঁচটি গ্রামের ৪শ বিঘা জমিতে প্রায় ৭শ' যুবক এ চুইঝাল চাষ শুরু করেন। গড়ে ওঠে 'খানপুর চুইঝাল প্রজেক্ট'। বর্তমানে এ প্রজেক্টে চুইঝাল গাছের সংখ্যা রয়েছে প্রায় ১৭ হাজার। প্রজেক্ট দেখাশোনার জন্য রয়েছে ১৩ সদস্যের কমিটি।

উদ্যোক্তা সবুজ জানান, মোট লাভের ৩০ শতাংশ বাগান মালিক পাবে এমন চুক্তিতে পতিত বাগানগুলোতে এ চুইঝাল গাছ রোপণ করা হয়েছে। এবং চুইঝাল প্রজেক্ট থেকে লাভের অংশ প্রজেক্টের সদস্যদের মধ্যে সমানভাবে বন্টন করে দেওয়া হয়।

চুইঝাল চাষ প্রজেক্টের উদ্যোক্তা মাসুদুর রহমান সবুজ বলেন, 'আমি শুধু নিজে স্ববালম্বী হতে চাইনি, আমি চেয়েছি আমার মতো আরও দশজন বেকার যুবক স্বাবলম্বী হোক। আমাদের দক্ষিণাঞ্চলে চুইঝালের ব্যাপক চাহিদা থাকায় লাভজনক চাষ এটি। খরচও কম এর পেছনে শ্রমও কম লাগে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে সবুজ বলেন, আমাদের লক্ষ্য এ গ্রামের একটা বাগান পতিত থাকবে না। প্রথম দিকে কেউ আমাদের বাগান দিতে চায়নি। সবাই পাগল বলতো। তবে এখন আমরা লাভের ৩০ শতাংশ বাগান মালিককে দিয়ে বাগান কন্টাক্ট নিয়ে চুইঝালের চাষ করছি।

চুইঝাল প্রজেক্টের প্রজেক্ট পরিদর্শক মনজুরুল সুমন বলেন, আমরা শিক্ষিত হয়ে আগানে বাগানে চুইঝালের চাষ করছি এটা অনেকে প্রথমে হাস্যকরভাবে নিয়েছিল। এখন সবাই বাহবা দিচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে ব্যসায়ীরা চুইঝাল গাছ কিনতে আসে আবার অনেকে চারা সংগ্রহ করতে আসে।

চুইঝাল প্রজেক্টের সদস্য হাবিব দফাদার বলেন, আমরা চুইঝালের প্রজেক্ট করে স্বাবলম্বী। তবে আমাদের সরকারি সাহায্য সহোযোগিতা প্রয়োজন। আমরা পুঁজির অভাবে বড় পরিসরে এ চাষ করতে পারছি না। তবে চুইঝাল চাষ নিয়ে আমাদের এ অঞ্চলে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, মসলা হিসেবে সুপরিচিত চুইঝাল অনেক আগে থেলেই যশোরের মনিরামপুর ও কেশবপুর অঞ্চলে চাষ হচ্ছে। তবে বৃহৎ পরিসরে এর আগে কোথাও চাষ হয়নি। মনিরামপুরের মুন্সি খানপুর গ্রামের ডিপ্লোমা কৃষিবিদ সবুজের নেতৃত্বে বৃহৎ পরিসরে চুইঝালের চাষ হচ্ছে। তাদেরকে আমরা প্রযুক্তিগত পরামর্শ দিচ্ছি। এটি একটি লাভজনক চাষ।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top