মঙ্গলবার, ২২শে এপ্রিল ২০২৫, ৯ই বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ৫ গ্রাম


প্রকাশিত:
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:৪৭

আপডেট:
২২ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:১২

 ফাইল ছবি

বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার দুটি ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের মধ্য দিয়ে চলা আড়িয়াল খাঁ নদের অব্যাহত ভাঙনে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন হাজারো মানুষ। বর্ষার প্রথম দিক থেকে ভাঙন শুরু হলেও ভাদ্রের শেষে ভাঙনের ভয়াবহতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। ভাঙনের ফলে বাবুগঞ্জ উপজেলার ৫টি গ্রাম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

প্রতিদিনই নদী তীরের চাষাবাদের জমি, গাছপালা, সড়ক ও বসতঘর ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে আড়িয়াল খাঁ। সর্বশেষ মীরগঞ্জ ফেরীঘাট সংলগ্ন এই দুই ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের চলাচলের সড়কের আধা কিলোমিটার সড়ক ভেঙে নিয়ে গেছে। সড়কের ভাঙনে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ। বিগত ১০দিন ধরে বাসিন্দারা ছোট ট্রলারে বিলীন হয়ে যাওয়া এলাকা পারি দিলেও বিকল্প চলাচলের ব্যবস্থা হয়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে স্থানীয়রা জমি দিলে বেড়িবাধ নির্মাণ করে দেওয়া হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের সিংহের কাঠী, লোহালিয়া গ্রাম এবং চাঁদপাশা ইউনিয়নের রফিয়াদী গ্রামের অনেকাংশ ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ছোট মীরগঞ্জ ভাঙনের মুখে পড়ায় পিছনে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া চাঁদপাশা ইউনিয়নের আরজি কালিকাপুর ও ভবানিপুর গ্রামসহ কমপক্ষে পাঁচ কিলোমিটারজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় রাজু মাতুব্বর বলেন, শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) চলাচলের সড়কটি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিলাম এখানে স্থায়ী বাঁধ দেওয়ার। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড শুধু বালুর বস্তা ফেলেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বস্তাসহ সব ভেঙে নিয়ে গেছে। এখন আমাদের চলাচলের কোনো উপায় নেই।

রাসেল ফরাজী বলেন, মীরগঞ্জ ফেরীঘাট এলাকা, সিংহেরকাঠি, লোহালিয়া, কালিকাপুর, ভবানীপুর, রফিয়াদি, ছোট মীরগঞ্জ বাজার এলাকায় প্রতি বছরই নদী ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙন দেখা দিলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কয়েক বস্তা বালু ফেলে চলে যায়। আমরা চাই স্থায়ী সমাধান করা হোক। নদী ভাঙনের জন্য কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ আমরা পথে বসার অপেক্ষায় আছি।

তিনি বলেন, নদী ভাঙনের কারণে ৪/৫টি গ্রামের শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যেতে পারে না। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়া যায় না।

সাবেক সরকারি কর্মকর্তা শাহেদ আলী বলেন, রাতারাতি ভাঙনের গর্ভে বিলীন হয়ে দুটি ইউনিয়নের বাসিন্দারা অত্যন্ত দুর্ভোগের মধ্যে আছে। নিঃস্ব হয়ে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে হলে পরিকল্পিতভাবে বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। অন্যথায় বছর বছর বালুর বস্তা ফেললে ভাঙনের এই ভয়াবহতা রোধ করা সম্ভব হবে না।

আবুল হোসেন নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, অনেকগুলো গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে নদীতে। এখন আমাদের বাড়িঘর ভাঙনের মুখে। ভাঙন ঠেকাতে কেউ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয় না। ভাঙন ঠেকাতে হলে ভাঙন প্রবণ এলাকায় পাথরের ব্লক ফেলতে হবে। তা কেউ করছে না। আর চেয়ারম্যান-মেম্বাররা আমাদের নিয়ে ভাবেন না।

এদিকে ভাঙনের খবর পেয়ে রোববার মীরগঞ্জ এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম।

বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা রহমান বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙনের স্থানে বিকল্প একটি বাঁধ তৈরি করা হবে। এজন্য জমির প্রয়োজন। আমরা স্থানীয় চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি গ্রামবাসীর সঙ্গে বসে জমির ব্যবস্থা করলেই দ্রুততার সঙ্গে কাজ শুরু হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশাল জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব হাসান বলেছেন, মীরগঞ্জের ভাঙনের স্থানে স্থায়ী বাঁধের পরিকল্পনা রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের। এজন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জমি চাওয়া হয়েছে। গ্রামবাসী বাঁধের জন্য জমি দিলে ভাঙন স্থান থেকে ৩শ ফুট ভিতর দিয়ে স্থায়ী বেড়িবাধ নির্মাণ করা হবে। এতে করে ভাঙন রোধ করা সম্ভব।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top