শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১


সাত মাইল পশুহাটের খাজনা আদায়ে অনিয়মের অভিযোগ


প্রকাশিত:
১৪ মে ২০২৪ ১২:৪৬

আপডেট:
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৫:৫৩

ছবি সংগৃহিত

দক্ষিণ বঙ্গের সবচেয়ে বড় পশুর হাট যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া সাত মাইল পশুহাটের খাজনা আদায় নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবির বকুল ও কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফিরোজ আহম্মেদ টিংকু অবৈধভাবে পশুর হাট থেকে লাখ লাখ টাকা খাজনা আদায় করে নামমাত্র টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দিচ্ছে। ফলে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।

জানা গেছে, শার্শার সাত মাইল পশুহাটে প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার দুই দিন হাট বসে।

দুই দিনের এ হাটে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার গরু, মহিষ, ভেড়া ও ছাগল বেচাকেনা হয়। সরকারিভাবে প্রতিবছর মোটা অংকের টাকায় এ হাট ইজারা দেওয়া হয়।

গত বাংলা সন ১৪২৮ সালে সাত মাইল পশুহাটের ইজারা ডাক ছিল সাড়ে ৮ কোটি টাকা, ১৪২৯ সালে সাড়ে ১৪ কোটি টাকা ও ১৪৩০ সালে এ হাটের ডাক ছিল সাড়ে ১০ কোটি টাকা। তবে নতুন বছর ১৪৩১ সালে এ হাটের কোনো ডাক বা ইজারা হয়নি।

যেকারণে আগের ইজারাদারেরা সরকারি আইন অমান্য করে হাটের খাজনা আদায় করছে।

এ বছর সাত মাইল পশুহাটের কোনো ইজারা না হওয়ায় শার্শা উপজেলা প্রশাসন হাটের খাজনা আদায়ের জন্য সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। এই কমিটিতে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল খালেককে প্রধান করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, বাগআঁচড়া ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, শার্শা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা, বাগআঁচড়া ইউপি সদস্য আবু তালেব, সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য আসমা আক্তার, বাগআঁচড়া ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ও শার্শা সহকারী কমিশনার (ভূমি)।

জানা গেছে, গত চৈত্র মাসে হাটের মেয়াদ শেষ হলেও উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া খাজনা আদায় কমিটি আজও হাটের খাজনা আদায় করতে পারেনি। এ সুযোগে আগের ইজারা কমিটি অনিয়ম ও সরকারি নিয়ম অমান্য করে ব্যবসায়ী, সাধারণ ক্রেতা ও বিক্রেতাদের পকেট কাটছে। হাটে বিক্রির জন্য প্রতি পশু থেকে ১৫০ টাকা খাজনা আদায়ের নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। বরং প্রতি পশুর খাজনা আদায় করা হচ্ছে ৫ শ থেকে দুই হাজার টাকা করে। এ ছাড়া হাটে তিন হাজার ব্যবসায়ীকে প্রতি এক বছরের জন্য তিন হাজার পাশ দেওয়া হয়েছে।

সেখান থেকেও আদায় করা হয়েছে প্রচুর টাকা। সাতমাইল পশুহাটের খাজনা আদায়ে ব্যাপক অনিয়মের বিষয়ে যশোর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন, বাগআঁচড়া ইপরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক। অভিযোগ থেকে জানা যায়, বাগআচড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবির বকুল ও কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফিরোজ আহম্মেদ টিংকু তাদের লোকজন নিয়ে অবৈধভাবে জোর করে পশুহাট থেকে লাখ লাখ টাকা খাজনা আদায় করে নাম মাত্র টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দিচ্ছে। প্রতি হাটে প্রায় ১২/১৫ লাখ টাকা আদায় হলেও সরকারের কোষাগারে জমা পড়ছে মাত্র দুই লাখ টাকা। বাকি টাকা যাচ্ছে আগের ইজারাদারদের পকেটে।

হাটের একাধিক সুত্রে জানা গেছে, শার্শার একজন শীর্ষ জনপ্রতিনিধির মদদে জোর করে সাত মাইল পশুহাট দখল করা হয়েছে। ফলে সাত মাইল পশুহাট থেকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

সাত মাইল পশুহাটের খাজনা আদায়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবির বকুল বলেন, সাত মাইল পশুহাট সম্পর্কে আমার কিছু বলার নেই। এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না।

তবে কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফিরোজ আহম্মেদ টিংক বলেন, এ বছর সাত মাইল পশুহাট ইজারা হয়নি। আমরা শার্শা উপজেলা প্রশাসনকে হাটের খাজনা আদায়ের ব্যাপারে কিছুটা সহযোগিতা করি। তিনি বলেন, হাটের টাকা পয়সার ব্যাপারে আমি জড়িত না।

এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নয়ন কুমার রাজবংশীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন বছরে সাত মাইল পশুহাটের ইজারা বা ডাক হয়নি। তাই সাত সদস্যের খাজনা আদায় কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরকারিভাবে জনবলের অভাবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে খাজনা আদায় করা সম্ভব নয়। হাটে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করে অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top