বৃহঃস্পতিবার, ১৩ই মার্চ ২০২৫, ২৯শে ফাল্গুন ১৪৩১


মেহেরপুরে লিচু বাজারজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা


প্রকাশিত:
১৮ মে ২০২৪ ১৬:৪৩

আপডেট:
১৩ মার্চ ২০২৫ ১৮:৫১

ছবি- সংগৃহীত

মেহেরপুরের বিভিন্ন বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলছে লিচু। প্রতিবছরই জেলার চাহিদা মিটিয়ে এ লিচু বিক্রি হয় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। ইতোমধ্যে আঁটি জাতের লিচু বাজারজাত শুরু হয়েছে। জেলা জুড়ে চলছে লিচু বিক্রির উৎসব। জেলার চাষিরা লিচু বাজারজাতকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

অনাবৃষ্টি, দাবদাহ ও বৈরী আবহাওয়ায় লিচুর উৎপাদন কম হলেও দামে পুষিয়ে নিচ্ছেন বাগান মালিকরা। আঁটি লিচু বিক্রি শুরু হলেও বোম্বাই, আতা বোম্বাই ও চায়না থ্রি জাতের লিচুর পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষিরা। এ জেলার উৎপাদিত লিচুর চাহিদা সারাদেশেই। বিভিন্ন পাইকাররা আসছেন বাগান কিনতে। কৃষি বিভাগ বলছে, লিচুর ন্যায্য দাম পাচ্ছেন চাষিরা। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ক্ষতি পুষিয়ে লাভবান হবেন তারা।

জেলা কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, জেলায় প্রায় ৮০০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। এসব বাগানে লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ৬ হাজার টন।

মেহেরপুর সদর উপজেলার ঝাউবাড়িয়া গ্রামের লিচু চাষি মজিবর রহমান বলেন, দুই বিঘা জমিতে আঁটি ও বোম্বাই জাতের লিচুর বাগান করেছি। এ বাগানে গাছ রয়েছে ৪৫টি। সব গাছে এবার লিচু হয়নি। যে গাছে লিচু হয়েছে তা তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে গুটি ঝরে পড়ায় উৎপাদন কম। তবে এবার লিচুর দাম ভালো থাকায় লাভের আশা করছি।

আজগর আলী নামে এক লিচু চাষি বলেন, প্রতি বছরেই মেহেরপুরের লিচুর চাহিদা দেশব্যাপী। আমাদের উৎপাদিত লিচু জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে থাকি। কিন্তু এ বছর উৎপাদন কম হওয়ায় বাইরের জেলায় পাঠাচ্ছি না। এবার জেলাতেই লিচুর ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে।

গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের লিচু বাগান মালিক হিরোক আলী বলেন, এ বছর লিচুর দাম ভালো। ১০০ লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে ২৫০ টাকা শ কিনছেন। এক কাউন লিচুর বর্তমান বাজার মূল্য ২৫০০ থেকে ২৭০০ টাকা। ফলন বিপর্যয় হলেও লিচু বিক্রি করে লাভবান হচ্ছি।

বরিশাল থেকে লিচু কিনতে আসা পাইকার হাফিজুল ইসলাম বলেন, লিচুর গুটি দেখে ৭টি বাগান কিনেছিলাম। অতিরিক্ত রোদের কারণে লিচুর গুটি ঝরে গেছে। পরে লোকসান হবে ভেবে বাগান মালিকরা আমাদের কিছু টাকা ফেরত দিয়েছেন। তবে লিচুর পরিচর্যা, গাছ থেকে লিচু সংগ্রহের শ্রমিক খরচ ও পরিবহন খরচ বাদ দিয়ে তেমন লাভ থাকছে না।

লিচু সংগ্রহে নিয়োজিত শ্রমিক সাগর আহাম্মেদ বলেন, প্রতি বছর এ সময় লিচুর বাগানে কাজ করি। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ করে মজুরি পাই ৫০০ টাকা। একমাস ধরে লিচুর কাজ চলে। আঁটি লিচু বিক্রি শেষ হলে বোম্বাই ও চায়না থ্রি লিচু বিক্রি শুরু হবে। শুধু সাগর আহম্মেদ নয় বিভিন্ন লিচু বাগানে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন কয়েক হাজার শ্রমিক।

মেহেরপুর জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, মেহেরপুরে প্রায় ৮০০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। এসব বাগানে লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ৬ হাজার টন। কৃষকরা প্রতি কাউন লিচু বিক্রি করছেন ২৫০০ থেকে ২৭০০ টাকা দরে। বর্তমানে আঁটি লিচু বিক্রি শুরু হয়েছে। এরপর বোম্বাই, আতা বোম্বাই ও চায়না থ্রি লিচু বিক্রি শুরু হবে। জেলার চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় লিচু বিক্রি করে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top