এখনো জ্বলছে সুন্দরবন, পানি সংকটে নেভানোর কাজ ব্যাহত
প্রকাশিত:
২৪ মার্চ ২০২৫ ১২:০৪
আপডেট:
২৬ মার্চ ২০২৫ ০৩:২৪

সুন্দরবনের পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর এলাকার তেইশের ছিলা নামক স্থানে নতুন করে লাগা আগুনের তীব্রতা কিছুটা কমেছে। তবে পানির উৎস দূরে থাকায় এবং ভাটার কারণে নদী শুকিয়ে যাওয়ায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসকে।
সোমবার (২৪ মার্চ) সকালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আবু বক্কর মুঠোফোনে বলেন, আগুনের প্রকোপ এখন কিছুটা কমেছে। তবে পানির সংকটের কারণে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। রাতে এই দুর্গম এলাকায় কাজ করা খুবই চ্যালেঞ্জিং। আবার ভাটার সময় নদীতে পানি থাকে না, ফলে আগুন নেভানো কঠিন হয়ে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, রাতে জোয়ার থাকায় আমরা পানি ছিটাতে পেরেছি, যার ফলে আগুন কিছুটা কমেছে। তবে মাটির ওপরে শুকনো পাতা ও মরা ডালের স্তর থাকায় আগুন নিভে গেলেও নতুন করে ধোঁয়া বা আগুন দেখা যাচ্ছে। তাই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না কবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে।
এর আগে, রোববার সকালে ড্রোনের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করে বন বিভাগ ধানসাগর টহল ফাঁড়ির অন্তর্গত তেইশের ছিলা এলাকায় আগুন শনাক্ত করে। এরপর বন বিভাগ, ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআরটি), সিপিজি এবং টাইগার টিমের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার লাইন তৈরির কাজ শুরু করে। তবে দুর্গম পরিবেশ, প্রচণ্ড তাপ, ধোঁয়া ও বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় কাজ করতে বেশ বেগ পেতে হয় তাদের।
ওইদিন বিকেলের আগে পর্যন্ত ভাটার কারণে নদীতে পানি না থাকায় পাম্প বসানো সম্ভব হয়নি। পরে সন্ধ্যার আগে মরা ভোলা নদীতে পাম্প স্থাপন করে পাইপ টানার কাজ শুরু করে বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস। রাত সাড়ে ৮টার পর পানি দেওয়া শুরু করলেও কিছুক্ষণের মধ্যে পুনরায় ভাটার কারণে তা ব্যাহত হয়। এরপর মধ্যরাত থেকে জোয়ার এলে আবারও পানি দেওয়া শুরু হয়।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, রাত থেকেই আগুন লাগা এলাকায় পানি দেওয়া শুরু হয়েছে। বন বিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিস একসঙ্গে কাজ করছে। তবে পানির সংকটের কারণে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। ভাটার সময় নদী শুকিয়ে যাওয়ায় পানি দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তারপরও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
টানা দুই দিনে সুন্দরবনের দুটি পৃথক স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দিনরাত কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে দুর্গম এলাকা ও পানির সংকটের কারণে আগুন সম্পূর্ণভাবে নেভাতে সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: