আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হত্যার পর এবার বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ
প্রকাশিত:
৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:২৮
আপডেট:
১৭ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:৪৪

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বিএনপি কর্মী সাইজ উদ্দিন দেওয়ানকে (৪০) হত্যার পর এবার তিন বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের বাবুরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ উঠেছে- রায়পুর উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব জিএম শামীমের অনুসারীরা উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহমেদ উল্যা গাজী, উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন খান ও সদস্য আনোয়ার মালের বসতঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন। ভুক্তভোগীরা উপজেলা বিএনিপর সদস্য ফারুক কবিরাজের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উত্তর চরবংশী ইউনিয়নে উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব জিএম শামীম ও উপজেলা বিএনপির সদস্য ফারুক কবিরাজের লোকজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এর জের ধরে দুই দফায় শামীম ও ফারুকের নেতাকর্মীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে ওই ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, কৃষক দলসহ সব অঙ্গসংগঠনের কার্যক্রম বিলুপ্ত করা হয়।
গতকাল সোমবার (৭ এপ্রিল) আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বেড়ি ও বাবুরহাট এলাকায় কৃষক দল নেতা শামীম গাজী ও ফারুক কবিরাজের অনুসারী হিসেবে পরিচতি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক গাজীর লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে একজন নিহত ও অন্তত ১৫ জন আহত হন। ঘটনার সময় বিল্লাল মাঝি, আবু তাহের মাঝি, জিহাদ হোসাইনের বসতবাড়িতে শামীমের অনুসারীরা ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এর জের ধরেই মঙ্গলবার দুপুরে ফের হামলা চালিয়ে শামীম গাজীর অনুসারীরা ফারুক কবিরাজের লোকজনের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। পরে স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে কেউ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেনি। দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষ, হামলা-ভাঙচুর, হত্যা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বিএনপির তিন নেতা জানান, কৃষক দল নেতা শামীম ও বিএনপি নেতা ফারুক কবিরাজের লোকজন ৫ আগস্টের পর দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। এর মধ্যে সাইজ উদ্দিন খুন হয়েছে। তিনি শামীমের অনুসারী ছিলেন। এর জের ধরে শামীমের অনুসারীরা ফারুক কবিরাজের অনুসারীদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, বাড়িঘরে হামলা-আগুন দেওয়ার খবরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এর আগেই দুর্বৃত্তরা পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এর আগের সংঘর্ষ ও নিহতের ঘটনায় কেউ থানায় কোনো মামলাও করেনি। মামলা করলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই এলাকায় এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা সতর্ক রয়েছি।
প্রসঙ্গত, নিহত বিএনপি কর্মী সাইজ উদ্দিন উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চরঘাষিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তিন মাস আগে স্পেন থেকে দেশে আসেন।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: