বান্দরবানের মেঘলা চিড়িয়াখানা থেকে ১১ বন্যপ্রাণী উদ্ধার
প্রকাশিত:
১৭ এপ্রিল ২০২৫ ১২:২১
আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১০:০৮

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র বিভাগ অবৈধভাবে সংরক্ষণের অভিযোগে বান্দরবানের মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের চিড়িয়াখানা থেকে ১১টি বন্যপ্রাণী উদ্ধার করেছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকালে এসব প্রাণী উদ্ধার করে কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে নিয়ে যাওয়া হয়।
জানা গেছে, দীর্ঘ ৩১ বছর ধরে মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন বন্যপ্রাণী খাঁচায় বন্দি করে পর্যটকদের বিনোদনের জন্য প্রদর্শন করা হচ্ছিল। তবে তাদের যথাযথভাবে লালন-পালন করা হচ্ছিল না এবং সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় অনুমতিও ছিল না। ফলে আইন অনুযায়ী এগুলো উদ্ধার করা হয়।
সূত্র জানায়, বান্দরবানের বন ও পাহাড় থেকে উদ্ধার হওয়া প্রাণীগুলোকে সেখানে সংরক্ষণ করা হত। সম্প্রতি ‘ন্যাচার বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন একটি অসুস্থ ভাল্লুকের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করে। ভিডিওটি একজন বিচারকের নজরে এলে গত ১০ মার্চ আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে ওই ভাল্লুকটির চিকিৎসা এবং চিড়িয়াখানায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের বৈধতা বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। এরপর বিষয়টি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র বিভাগের নজরে এলে তারা অভিযান চালিয়ে ১১টি প্রাণী উদ্ধার করে ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে স্থানান্তর করে।
চিড়িয়াখানা বন্ধ ঘোষণায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে ‘ন্যাচার বাংলাদেশ’ সংগঠনের সদস্যরা। তারা বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রাণী সংরক্ষণের নামে মেঘলায় অবৈধ চিড়িয়াখানা চালানোর বিরুদ্ধে কাজ করে আসছিলাম। অবশেষে এটি বন্ধ হওয়ায় আমরা খুশি।’
ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি অফিসার হাতেম মোহাম্মদজুলকারনাইন বলেন, ‘চিড়িয়াখানাটিতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের কোনো পরিবেশ ছিল না। প্রাণীগুলোর মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। চিকিৎসা, পর্যাপ্ত জায়গা ও আলো-বাতাসের অভাবে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এক কথায়, তাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে।’
চট্টগ্রামের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র বিভাগের কর্মকর্তা নুর জাহান বলেন, ‘দেশীয় প্রজাতির প্রাণী সংরক্ষণের কোনো ব্যক্তিগত অধিকার নেই। এটি আইনত অপরাধ। সরকারের লাইসেন্স রয়েছে চিত্রা হরিণের জন্য, কিন্তু সেখানে মায়া হরিণ রাখা হয়েছে, যা অবৈধ। আমরা এসব প্রাণী উদ্ধার করে ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে স্থানান্তর করেছি এবং ভবিষ্যতেও এমন অভিযান চলবে।’
১৯৯৪ সাল থেকে বান্দরবানের মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করে আসছিল জেলা প্রশাসন।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: