যশোরে তিনদিনে বিষাক্ত মদ পানে ১০ জনের মৃত্যু
প্রকাশিত:
২৫ এপ্রিল ২০২০ ২৩:৫২
আপডেট:
১৪ মার্চ ২০২৫ ১২:২৯

যশোরে ৭২ ঘন্টায় মদ পানে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ ঘটনা খতিয়ে দেখতে অভিযান শুরু করেছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, যশোর সদর উপজেলার শেখহাটি কালীতলা এলাকার আরশাদ আলীর ছেলে শাহিনকে (৩৮) শুক্রবার রাত ১২টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার ভোর ৪টায় তার মৃত্যু হয়। মদপানে তার মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতালের ডাক্তার জানিয়েছেন।
যশোর কোতয়ালি থানার ওসি (ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড কমিউনিটি পুলিশিং) সুমন ভক্ত জানান, যশোর শহরের বেজপাড়ার মাহমুদুল হক বিশারতের বাড়ির ভাড়াটিয়া নান্নুর মৃত দেহ ঘরের মধ্য থেকে শুক্রবার দুপুরে উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় তার ঘরে খালি বোতল পাওয়া যায়। সে শহরের একটি মদের দোকানে কর্মচারী ছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় যশোরের ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ঝিকরগাছা উপজেলার কাটাখালি গ্রামের সাহেব আলী (৬০) নামে এক ব্যক্তি। পুলিশ জানায়, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে সাহেব আলী নিজ বাড়িতে মদ সেবন করার সময় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে যশোরের ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি মারা যায়।
যশোর শহরতলীর ঝুমঝুমপুর মান্দারতলা এলাকার শাখাওয়াতের ছেলে চিহ্নিত গাঁজা ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান চুক্কি বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। স্থানীয়রা জানান, শহর থেকে মিন্টু নামে একজন তাকে দেশি মদ এনে দিতেন। অতিরিক্ত মদ পানের কারণে বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়।
যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের ফিরোজের বাড়ির ভাড়াটিয়া মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক চিশতির ছেলে মনিবাবু বৃহস্পতিবার ভোরে হাসপাতালে মারা যায়। হাসপাতালের চিকিৎসক আজিজুর রহমান জানান, মদের বিষক্রিয়ার কারণে মনিবাবু মারা গেছে। তার স্ত্রী হিরা খাতুন সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার মনিবাবু মদ পান করে অসুস্থ হয়। বুধবার রাতে হাসপাতালে নিয়ে গেলে বৃহস্পতিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।
শুক্রবার বিকেলে শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের সাবুর (৪৬) নামে আরো এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তার পরিবার জানায়, বুধবার সে আর মনিবাবু একসাথে মদ পান করেছিল। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবু মারা যায়। যশোর শহরের বারান্দী মোল্যাপাড়ার বাসিন্দা মদের দোকানের কর্মচারী আব্দুর রশিদ বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। একটি পতিতাপল্লীর সামনে থেকে তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার মৃত্যু হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠি ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলার আবু বক্করের ছেলে আক্তারুজ্জামান(৪৫) নিজ বাড়িতে মদপানের পর মারা যায়। শুক্রবার সকালে পরিবারের সদস্যরা তড়িঘড়ি করে তাকে দাফন করে দেন। শুক্রবার বিকালে মনিরামপুরের মোহনপুর গ্রামের প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মোমিন (৪২) বিষাক্ত স্প্রীট পানে মারা যায়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে মুক্তার আলী (৪৫) নামে আরো এক ব্যক্তি মারা যায়। তিনি মোহনপুরের আবুল কাশেমের ছেলে। মনিরামপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মোমিনের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তার পরিবারের দাবি সে অসুস্থ ছিলো।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টা আমারা জেনেছি। এবিষয়ে খোজ খবর নেয়া হচ্ছে। যারা এই ভেজাল মদের কারবার করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: