বৃহঃস্পতিবার, ১৩ই মার্চ ২০২৫, ২৮শে ফাল্গুন ১৪৩১


ঠাকুরগাঁওয়ে চাঁদাবাজদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামবাসী


প্রকাশিত:
২ জুলাই ২০২১ ১৭:৪৬

আপডেট:
১৩ মার্চ ২০২৫ ০১:০৯

ভুক্তভোগী লালচাঁন ও তার পরিবার। ছবি-সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁওয়ের বরুণাগাঁও এলাকায় একদল চাঁদাবাজের অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামবাসী। তাদের আতঙ্কে দিশেহারা জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের মানুষ। তাদের অত্যাচারের সাম্প্রতিক ভুক্তভোগী একটি কৃষক পরিবার। চাঁদাবাজদের হুমকিতে বাড়িতেই বন্দিদশায় দিন পার করছে তারা।

ভুক্তভোগী পরিবারের গৃহকর্তা লালচাঁন বলেন, আমরা বের হলেই মেরে ফেলবে। তাই বাসা থেকে বের হতে পারছি না। আমাদের বাজার করে দিচ্ছে প্রতিবেশীরা। থানায় অভিযোগ করেছি। কিন্তু ওরা পুলিশকে ভয় পায় না। চেয়ারম্যান, মেম্বার কাউকেই ভয় পায় না। আমরা প্রাণ ভয়ে আছি।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৮০ শতাংশ জমিতে লালচাঁনের একটি লিচুবাগান আছে। এলাকার কিছু যুবক সেই বাগানের ওপর ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে মালিককে বাগানে ঢুকতে নিষেধ করা হয়। মালিক লালচাঁন তাদের কথায় রাজি হননি। এরই মধ্যে একদিন লিচু পাড়তে গেলে হুমকিদাতারা তাকে ও তার ছেলেকে মারধর করে। পড়ে লালচাঁন সেখান থেকে পালিয়ে ৯৯৯-এর মাধ্যমে পুলিশি সহায়তা নেন ও থানায় একটি অভিযোগ করেন। পরে এলাকাবাসীর সই নিয়ে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে একটি গণপিটিশন দেয়ার ব্যবস্থা করেন ভুক্তভোগী লালচাঁন। এতে অভিযুক্তরা আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয় এবং চাঁদার পরিমাণ বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা দাবি করে। এবার টাকা ছাড়া ঘর থেকে বের হলেই প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি সদস্য খাদেমুল বলেন, ঘটনাটি আমি জানি। লালচাঁনের পরিবার অসহায়। লালচাঁনের বিষয়ে কথা বলতে আমি বেশ কয়বার নয়ন ও আলামিনের (দুই অভিযুক্ত) সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু ওরা শোনেনি। ওরা অনেক বেপরোয়া। কিছুদিন পরপরই তাদের নামে এমন অভিযোগ শোনা যায়। আমাদের পুরো এলাকাই অতিষ্ঠ। ওদের কিছু বলা যায় না। কিছু বললেই মারপিট ও হত্যার হুমকি দেয়। তাই আমি তাদের (ভুক্তভোগী পরিবার) গণপিটিশন দেয়ার পরামর্শ দেই। পরে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক, ডিআইজি ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাবর গণপিটিশন পাঠিয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের প্রতিবেশী বাবুল জানান, লালচাঁন ও তার ছেলেকে এসে তারা মেরেছে। এখন নাকি বের হলেই মেরে ফেলবে। তাই তারা ঘর থেকে বের হচ্ছে না। আমরা মাঝে মাঝে তাদের প্রয়োজনীয় বাজার করে দিচ্ছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক প্রতিবেশী বলেন, মাসখানেক আগে আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা চেয়েছিল। আমি ভয়ে তাদেরকে টাকা দিয়ে দিয়েছি। তাদের ওপরে কথা বলার কেউ নেই।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুকুলের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে আমার কাছে সেভাবে কেউ অভিযোগ করেনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বক্তব্য জানতে চাইলে তারা কেউই কথা বলতে রাজি হয়নি।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীর ইসলাম জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বাই পোস্ট একটি গণপিটিশনও পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সম্পর্কিত বিষয়:

চাঁদাবাজ

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top