শরবত বিক্রির ফাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাদেকুল
প্রকাশিত:
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৫:০১
আপডেট:
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২০:০২

রাস্তার পাশে শরবতের দোকানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বই। একথাটা শুনে নিশ্চই অবাক হচ্ছেন? অবাক হওয়ারই কথা এমন দৃশ্য খুব কমই চোখে পড়ে।
বলছি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পশ্চিম বামনাইল গ্রামের ছেলে সাদেকুল ইসলামের কথা। সংসারের টানাপোড়া আর অভাবে কাজে নেমে পড়েছেন ১৯ বছর বয়সী এই ছেলে। তবে তার ইচ্ছে শক্তি আর প্রবল আগ্রহ থাকার কারণে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে নেয়ার অক্লান্ত চেষ্টা করে চলছে।
রাস্তার পাশে একটি শরবতের দোকান নিয়ে বসেছে সে। যখন ক্রেতার ভিড় কমে আসে, তখন দোকানি বইটি মেলে বসেন। সড়কবাতির আলোতে পড়াশোনা করেন। এভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন সে।
কথা বলে জানা গেছে ১১ ভাইবোনের মধ্যে সাদেকুল সবচেয়ে ছোট। অন্য ভাইবোনেরা যে যার মতো থাকেন। ছোটবেলায় সাদেকুলকে হাফেজিয়া পড়ার জন্য রাজশাহী নগরের একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেওয়া হয়। পরে তিনি নগরের উপর ভদ্রা এলাকার মদিনাতুল উলুম কামিল মাদ্রাসা থেকে ২০১৮ সালে বিজ্ঞান বিভাগে দাখিল পাস করেন।
বিজ্ঞান বিভাগের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতে না পারায় উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে এসে বিজ্ঞান ছেড়ে মানবিক বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করেন। ২০২০ সালে তিনি আলিম পাস করেন। এসএসসি ও এইচএসসি সমমানের দুই পরীক্ষায় তাঁর জিপিএ-৫ আছে। তাই ভর্তির সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।
পাঁচ বছর ধরে গরমের মৌসুমে শরবতের ভ্রাম্যমাণ ভ্যান নিয়ে সাদেকুলকে রাজশাহী রেলস্টেশনের পাশে দেখা যায়। এই বেচাবিক্রি থেকে যে আয় হয়, তা দিয়েই তাঁর পড়াশোনার খরচ জোগাড় করেন।
মদিনাতুল উলুম কামিল মাদ্রাসার বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ কে এম সালাহ উদ্দিন বলেন, সাদেকুল ইসলাম খুবই পরিশ্রমী, ভালো ছেলে ও মেধাবী। সে এ শহরে থেকে অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: