ইঁদুর ধরে পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার
প্রকাশিত:
১৭ নভেম্বর ২০২১ ১১:১৪
আপডেট:
১৩ মার্চ ২০২৫ ০৬:৫৩

ইঁদুর মানে এক ধরণের বিরক্তি। ঘরের আসবাবপত্র আর ক্ষেতের ফসলের চির শত্রু ইঁদুর। আর সেই ইঁদুর মারা এক সময় ছিল জয়পুরহাটের আনোয়ার হোসেনের নেশা। সময়ের ব্যবধানে এখন সেটিই হয়েছে তার পেশা।
বাড়ির কিংবা ক্ষেতের ইঁদুর মেরে বিনিময়ে পান চাল অথবা টাকা। তা দিয়েই দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে চলে তার সংসার। ২৫ বছর ধরে ইঁদুর নিধন করে যাচ্ছেন। চার লাখ ইঁদুর মেরে স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার।
জানা যায়, আনোয়ার হোসেনের বাড়ি জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর ভট্টপলাশী গ্রামে। শখের বসে প্রথম ইঁদুর মারা শুরু করেন। ইঁদুরের কাটা লেজ জমা দিয়ে স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে পান পুরস্কার।
তাকে এলাকার সবাই এখন ইঁদুর আনোয়ার নামেই ডাকে। ইঁদুর মেরে জীবিকা নির্বাহের পাশাপাশি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার। এখন ইঁদুর মারাকে পেশা ও নেশা হিসেবে নিয়েছেন তিনি।
জেলার আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর ভট্টপলাশী গ্রামের কৃষকরা জানান, শুধু আমন ধান নয় আলু থেকে শুরু করে সব ধরণের ফসল নষ্ট করে ইঁদুর। চলতি আমন ধানের মৌসুমে ইঁদুরের অত্যাচার অনেক বেশি। আমাদের এই ফসলগুলো ইঁদুরের হাত থেকে রক্ষ করছে আনোয়ার ভাই। ইঁদুর মারার কারণে বিঘা প্রতি ৪ মণ ধান নষ্ট হচ্ছে না।
স্বামীর এসব কাজে সবসময় পাশে থেকে সহায়তা করেন তার স্ত্রী রুবি বেগম। তাদের সংসার ভালোই চলছে।
আনোয়ার হোসেন জানান, এলাকার ৫৭ জনকে ইঁদুর ধরা ও মারার কৌশল শিখিয়েছেন। এখন তারা ইঁদুর ধরে সংসার চালাচ্ছেন। সবাই তাকে ইঁদুর মারার ওস্তাদ হিসেবে মানেন। জেলা ছাড়াও অন্যান্য জেলার অনেককেই তিনি এ শিক্ষা দিয়েছেন।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, দেশের কৃষকের ফসল রক্ষার্থে প্রতি বছর আয়োজন করা হয় জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযান। এ অভিযানে এ পর্যন্ত একাধিক স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার পেয়েছেন আনোয়ার হোসেন। তার মতো আরও আনোয়ার প্রতিটি জেলায় তৈরি হলে কৃষকের ফসলের ক্ষতির পরিমাণ অনেকাংশে কমে যেত। স্থানীয় কৃষি বিভাগ সবসময় তার সঙ্গে আছে এবং আগামীতেও থাকবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: