রোজার পণ্যের পর্যাপ্ত এলসি হয়েছে
প্রকাশিত:
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:০৯
আপডেট:
২০ এপ্রিল ২০২৫ ০২:২৯

আসন্ন রমজান মাসকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের এলসি খুলতে পারছেন না বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে অভিযোগ করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বিষয়টি সঠিক নয় দাবি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রমজানে তেল, চিনি, ছোলা, পেঁয়াজ ও খেজুরের চাহিদা বেশি থাকায় এসব পণ্য আমদানির জন্য পর্যাপ্ত এলসি খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সংস্থাটির মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক। এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র ও পরিচালক সায়িদা খানম।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট সবাই একসঙ্গে কাজ করলে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কোনো ঘাটতি থাকবে না। গত বছরের জানুয়ারির তুলনায় এ বছর অনেক বেশি এলসি খোলা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।
সংস্থাটির মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক জানান, রমজান মাসে তেল, চিনি, ছোলা, পেঁয়াজ ও খেজুরের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। আর বাজার স্বাভাবিক রাখতে এসব পণ্য আমদানিতে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কোনো ব্যাংকে একক কোনো গ্রাহকের সঙ্গে এলসি খোলা নিয়ে সমস্যা হয়, ওটা তাদের নিজস্ব বিষয়। সার্বিকভাবে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে পাঁচ লাখ ৬৫ হাজার ৯৪১ মেট্রিক টন চিনির ঋণপত্র খোলা হয়েছে। এক বছর আগের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল পাঁচ লাখ ১১ হাজার ৪৯৩ মেট্রিক টন। অর্থাৎ এ বছরের জানুয়ারিতে ৫৪ হাজার ৪৪৮ মেট্রিক টন বেশি চিনির ঋণপত্র খোলা হয়েছে।
গত জানুয়ারি মাসে একইভাবে ভোজ্যতেল আমদানির জন্য তিন লাখ ৯০ হাজার ৮৫৩ মেট্রিক টনের ঋণপত্র খোলা হয়েছে। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে এর পরিমাণ ছিল তিন লাখ ৫২ হাজার ৯৬০ মেট্রিক টন। এ বছর দুই লাখ ২৪ হাজার ৫৬৭ মেট্রিক টন ছোলা আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলেছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। গতবছর এর পরিমাণ ছিল দুই লাখ ৬৫ হাজার ৫৯৬ মেট্রিক টন। অর্থাৎ এ বছরের জানুয়ারিতে ছোলার এলসি কিছুটা কমেছে।
এ বছর ৪২ হাজার ৫৬৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে। গত বছরের একই সময় ছিল যার পরিমাণ ছিল ৩৬ হাজার ২২৬ মেট্রিক টন। এ বছর ২৯ হাজার ৪৮২ মেট্রিক টন খেজুরের ঋণপত্র খোলা হয়েছে। আগের বছর যার পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৪৯৮ মেট্রিক টন।
মুখপাত্র বলেন, পণ্য পরিবহন ও সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে রমজানে কোনো পণ্যের ঘাটতি হবে না। এছাড়া রপ্তানি বৃদ্ধিতেও আমরা বিশেষ নজর রেখেছি। গত নভেম্বর মাস থেকে প্রতি মাসে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত মোট রপ্তানি আয় হয়েছে ৩২ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের একই সময় যা ছিল ২৯ বিলিয়ন ডলার।
রেমিট্যান্স ও রপ্তানি মিলিয়ে গত সাতমাসে ৪৪ বিলিয়ন ডলারের আয় হয়েছে বলে জানান মেজবাউল হক। তিনি বলেন, রপ্তানি আয়ের বৈদেশিক মুদ্রা পুরোটা হাতে এসে পৌঁছায়নি। কারণ অন্য রপ্তানি করার পর টাকা পরিশোধের জন্য ১২০ দিন সময় পেয়ে থাকেন বিদেশি আমদানিকারকরা। এটি কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা পরিবর্তনের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই হঠাৎ কোনো নীতিমালায় পরিবর্তন আনা যায় না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, কোভিড ও বৈশ্বিক ঋণের সুদহারের ঊর্ধ্বগতি অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। ফলে আমরা আস্তে আস্তে সংস্কারের দিকে হাঁটছি। সংস্কারের অংশ হিসেবে ভোক্তা ঋণের সুদহার ৯ থেকে ১২ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। অন্যান্য সুদহার পরিবর্তনের বিষয়েও কাজ করা হচ্ছে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: