বৃহঃস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১


চড়া দাম শাক-সবজির সঙ্গে চালের দামও বাড়তি


প্রকাশিত:
১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:১৭

আপডেট:
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:৩৭

ফাইল ছবি

বন্যার ধাক্কায় দীর্ঘদিন ধরেই ঢাকার বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের শাক-সবজি; এর সঙ্গে চালের দামও কিছুটা বেড়েছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।

শুক্রবার ঢাকার বেশ কয়েকটি খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ৬০ টাকার নিচে তেমন কোনো সবজি নেই। কিছু কিছু সবজি বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৮০ টাকায়। যে পুঁইশাক ২০ টাকার বেশি বিক্রি হত না, তার দাম এখন ৪০ টাকা বা তার বেশি। ৫-১০ টাকার লাল শাকের আঁটি এখন ১৫-২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

শাক-সবজির এই দামের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে চালের বাড়তি দাম। ঈদের পরে কেজিতে অন্তত দুই টাকা করে বেড়েছে সরু ও মোটা চালের দাম।

দুপুরে রাজধানীর মিরপুরের বড়বাগ কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি মাঝারি আকারের লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। প্রতি কেজি বেগুন ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেড়শ ৬০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। কাচকলা পাওয়া যাচ্ছে প্রতি হালি ৩০ টাকায়।

সবজি বিক্রেতা কবির হোসেন বলেন, বন্যা শুরু হওয়ার পর থেকেই শাক-সবজি ও অন্যান্য তরকারির দাম বাড়তি। প্রায় এক মাস ধরে দাম এভাবে ঘোরাফেরা করছে। কোনো কোনো দিন কেজিতে ১০ টাকা এদিক সেদিক হচ্ছে।

মিরপুর-১ নম্বর কাঁচা মালের আড়ৎ ও কারওয়ান বাজার থেকে সবজি কিনে এনে বিক্রি করা হয় এই বাজারে।
দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ঢাকায় সবজি আমদানিকারক হেলাল উদ্দিন মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও সাভারসহ ঢাকার আশপাশের এলাকাগুলো থেকে সবজির সরবরাহ ছিল। কিন্তু বন্যার কারণে এসব এলাকার সবজি এখন তেমন আসছে না।

মাগুরা, মেহেরপুর, যশোরসহ অন্যান্য উঁচু এলাকা যেখানে বন্যার পানি উঠেনি, ওই সব এলাকা থেকে এসব সবজি আসছে ঢাকায়। সরবরাহ কমে যাওয়া ও পরিবহন খরচ বেশি পড়ায় দীর্ঘদিন ধরে মালের দাম বাড়তি।

বিক্রেতারা জানান, ঈদের আগেও সবজির দাম এমন বাড়তি ছিল। মাঝখানে ঈদের ৩-৪ দিন দাম কিছুটা কমে এখন আবার বেড়ে গেছে।

কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা কামরুল ইসলাম বলেন, প্রতি কেজি চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, কাঠকচু ৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

“আগামী দুই মাসেও সবজির দাম কমে কি না সন্দেহ আছে। নতুন ফসল আসতে আরও দুই মাস লাগবে।”

আরেক বিক্রেতা জুয়েল মিয়া বলেন, এক দিকে পণ্যের দাম বেশি আরেক দিকে ক্রেতা কম। সে কারণে দীর্ঘদিন ধরে তাদের ব্যবসা ‘ভালো যাচ্ছে না’।

ঈদের আগে আদার যে দাম ছিল ঈদের পর তা অনেক বেড়ে গেছে বলে মুদি দোকানিরা জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি সব ধরনের চালের দামও কেজিতে অন্তত ২ টাকা করে বেড়েছে।

বড়বাগের মুদি দোকানি শহীদুল ইসলাম জানান, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪০ টাকা করে আর আমদানি করা পেঁয়াজ ৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। ঈদের পর রসুনের দাম কেজিতে অন্তত ১০ টাকা করে কমেছে, এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়। তবে আদার দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। ঈদের মওসুমে আদার কেজি ছিল ১৪০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা। এখন সেই আদা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৮০ টাকায়। পাইকারিতে হঠাৎ করে দাম বেড়ে গেছে।

সম্প্রতি ডালের দাম কিছুটা কমেছে জানিয়ে তিনি বলেন, মাঝারি দানার ভারতীয় মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, যা ১০ দিন আগে ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। দেশি ছোট দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১১০ টাকায়। এটাও দুই সপ্তাহ আগে ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।
ঈদের পর সব ধরনের চাল কেজিতে ২ টাকা করে বা বস্তায় ১০০ টাকা করে বেড়েছে বলে জানান এই মুদি দোকানি।

তার দোকানে এখন প্রতি কেজি লতা চাল ৫২ টাকা, মিনিকেট ৫৫ টাকা, বিআর আটাশ ৪৫ টাকা, স্বর্ণা চাল ৪০ টাকা, নাজিরশাইল ৫৬ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

সুগন্ধি চালের দাম কিছুটা কমে এসেছে। খুচরায় সুগন্ধি চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকায়, যা এক মাস আগেও ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।

কারওয়ান বাজারে চালের পাইকারি দোকানদার মনসুর আহমেদ বলেন, দাম বাড়ার পর এখন বিআর আটাশের বস্তা ২২৫০ টাকা হয়েছে। নাজিরশাইল প্রতি বস্তা ২৮০০ টাকা, বাসফুল চাল প্রতি বস্তা ২৭৫০ টাকা এবং মিনিকেট প্রতি বস্তা ২৪০০ টাকা থেকে ২৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


সম্পর্কিত বিষয়:

ঢাকা

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top