শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন তীব্র
উপাচার্যকে বাসভবনে ঘেরাও; মশাল মিছিল ও কুশপুতুল দাহ
প্রকাশিত:
২৪ জানুয়ারী ২০২২ ২১:৪৩
আপডেট:
২৪ জানুয়ারী ২০২২ ২২:১২

তীব্র হয়ে উঠছে শাহজালার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন। শিক্ষামন্ত্রীর সাথে বৈঠকে কোন ফল না আসায় শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আরও বেগবান হয়ে উঠছে। রোববার ২৩ জানুয়ারি, বিকালের দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া উপাচার্যের বাসভবনে কাউকে ঢুকতে না দেয়ার ঘোষণা দেন তারা। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের বাসভবনের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার কথা জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন।
তৃতীয় দিনের মত রোববার রাত সাড়ে ১০টায় মশাল মিছিল করে শাবি শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চ থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে আবারও মুক্তমঞ্চে এসে শেষ হয়। মশাল মিছিল শেষে উপাচার্যের কুশপুতুলে আগুন দেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের আমরণ অনশন কর্মসূচির ১০০ ঘণ্টা পূর্ণ হয় রোববার ২৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায়। অনশনে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী। অনশনের ১০০ ঘণ্টা পূর্ণ উপলক্ষে শাবি ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী মিছিল করার ঘোষণাও দেয় তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে আমাদের বাধ্য করা হচ্ছে আরও কঠোর কর্মসূচির দিকে যেতে। শিক্ষার্থী নাফিজা আনজুম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেব। এ সময় পুলিশ ছাড়া আর কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, আমরা অবরুদ্ধ করছি, বিষয়টি ঠিক এমন নয়; আমরা উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে কাউকে ঢুকতে দেব না। আমরা এখানে বসে অনশন করছি, আর সবাই গিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করবেন, সেটা হয় না। এ কারণে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে 'অযৌক্তিক' বলে বর্ণনা করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, অনিয়ম ও দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ ছাড়া অতি উৎসাহী হয়ে অযৌক্তিক দাবিতে তড়িৎ সিদ্ধান্ত নেয়া রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব নয়।
এদিকে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে সরকারের সহযোগিতা চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয় ১৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার। ওই দিন রাতে প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে খারাপ আচরণের অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের কয়েকশ ছাত্রী। শনিবার আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায় ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এর বিচার চেয়ে পরদিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরোধ করে শাবি শিক্ষার্থীরা। সেখানে শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে পুলিশ। তাদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডও ছোড়া হয়। ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও হল ছাড়ার ঘোষণা দেয় প্রশাসন।
শাহজালার বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে দেশে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও।
এসএন/জুআসা/২০২২
সম্পর্কিত বিষয়:
শাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের বাসভবনের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন শাবিতে মশাল মিছিল আমরণ অনশন কর্মসূচি শাবি ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী মিছিল আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর হামলা শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে পুলিশ বিক্ষোভ হয়েছে দেশে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: