বেপরোয়া শাবি’র ভিসি-শিক্ষক !
প্রকাশিত:
২৫ জানুয়ারী ২০২২ ২১:৪৮
আপডেট:
১৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:০২

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৩ জানুয়ারি থেকে আন্দোলন শুরুর পর বেরিয়ে আসছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একের পর এক অনিয়ম আর কান্ড-কারখানা। সবশেষ এমনই এক কান্ডে বেরিয়ে এলো এক শিক্ষকের নাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে ফেনসিডিল সরবরাহ করতে গিয়ে আটক হলেন জাহিদুর রহমান নামে এক নিরাপত্তাকর্মী।
সোমবার রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন সংলগ্ন টিচার্স ডরমেটরিতে এক শিক্ষককে ফেনসিডিল দিতে যান নিরাপত্তাকর্মী জাহিদুর। এ সময় শিক্ষার্থীদের কাছে হাতে-নাতে ধরা পড়েন তিনি। জাহিদৃুরকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ছবি দেখিয়ে সেই শিক্ষক সম্পর্কে নিশ্চিত হন শিক্ষার্থীরা। শাবি শিক্ষার্থীদের বরাত দিয়ে অনলাইন গণমাধ্যম ঢাকা পোস্ট জানায়, ওই শিক্ষকের নাম অধ্যাপক ড. মাজহারুল হাসান মজুমদার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান।
নিরাপত্তা কর্মী জাহিদুর জানায়, দায়িত্ব পালনে ক্যাম্পাসে এলে অসুস্থতার কথা বলে তাকে ওষুধ নিয়ে আসতে বলেন ওই শিক্ষক। শাবি শিক্ষকের বলে দেয়া এক লোক তার কাছে একটি প্যাকেট দেন। ছাত্র-ছাত্রীরা জাহিদুরের পথ রোধ করে অনুসন্ধান করলে বেরিয়ে আসে প্যাকেটের ভেতরে থাকা ফেনসিডিল। শিক্ষার্থীদের হাতে ধরা পড়া জাহিদুরকে নিয়ে যাওয়া হয় টিচার্স ডরমেটরিতে সেই শিক্ষকের কাছে, তবে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে ধরা পড়া গার্ডকে তুলে দেয়া হয় পুলিশের হাতে। ফেনসিডিলসহ গার্ড আটকের কথা জানান সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ উত্তরের ডিসি আজবাহার আলী শেখ। শাবি ক্যাম্পাসে এমন তুলকালাম কান্ড সম্পর্কে জানতে অধ্যাপক ড. মাজহারুল হাসান মজুমদারের যোগাযোগের চেষ্টা করেও সফল হতে পারেননি গণমাধ্যমকর্মীরা। তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এর আগে ২০২১ সালের ৯ এপ্রিল বিভাগের অনলাইন ক্লাস চলাকালে অধ্যাপক ড. মাজহারুল হাসান মজুমদারের সিগারেট খাওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে জন্ম দেয় নানা আলোচনা-সমালোচনার।
খাবার নিয়ে প্রক্টর
২৪ জানুয়ারি সোমবার সন্ধ্যার দিকে উপাচার্যের বাসভবনে খাবার নিয়ে ঢুকতে চান শাবি’র প্রক্টর ড. আলমগীর কবীরসহ প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। তবে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে ফিরে যান তারা। শিক্ষার্থীরা জানান, ভিসি’র বাসভবনের ভেতরে অবস্থানকারী কেউ অসুস্থ হলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে ছাত্র-ছাত্রীরা। খাবার প্রয়োজন হলে তার ব্যবস্থা করে দেবে শিক্ষার্থীরাই। এরপর ভিসি’র বাসভবনে প্রবেশ করতে না পেরে খাবার নিয়ে ফিরে যান শিক্ষরা।
জাবি ছাত্রীদের জন্য দুঃখ প্রকাশ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিয়ে ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। ২৪ জানুয়ারি সোমবার, দুপুরের দিকে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের কাছে ফোন করে ক্ষমা চান তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ তার বক্তব্যের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।’
মোবাইলফোনে শাবি উপাচার্য জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে বলেন, ‘তার বক্তব্য সম্পাদনা (এডিট) করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। এতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে জাবির শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই মর্মাহত হয়েছেন। তিনি এ বিষয়টি অনুধাবন করেছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা তাকে ক্ষমা করে দেবেন।’
সম্প্রতি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের একটি অডিও ক্লিপ সামাজাকি যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই অডিওতে শোনা যায় শাবি উপাচার্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কটূক্তি করেছেন। ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের সহজে কেউ বিয়ে করতে চায় না’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এসএন/জুআসা/২০২২
সম্পর্কিত বিষয়:
শাবি শিক্ষককে ফেনসিডিল সরবরাহ করতে গিয়ে আটক ফেনসিডিল দিতে যান নিরাপত্তাকর্মী জাহিদুর শাবি অধ্যাপক ড. মাজহারুল হাসান মজুমদার
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: