শুক্রবার, ১৪ই মার্চ ২০২৫, ৩০শে ফাল্গুন ১৪৩১


ডাক্তারেরা জানালেন সুশান্তের মনে কী ছিল


প্রকাশিত:
৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৬:৫৪

আপডেট:
৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:০০

ছবি-সংগৃহীত

মনের অসুখ সারানোর চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন সুশান্ত সিংহ রাজপুত। যার ফলে তার মানসিক অবস্থার আরও অবনতি হচ্ছিল, এমনকি চিকিৎসা করাও দুরূহ হয়ে উঠেছিল— মুম্বই পুলিশের কাছে দেওয়া বয়ানে এমন তথ্য সামনে এনেছেন দু’জন মনোচিকিৎসক, যারা সুশান্তের মৃত্যুর কিছু দিন আগেও তার চিকিৎসা করেছেন। তারা এ-ও জানিয়েছেন, অভিনেতার চিকিৎসার ব্যাপারে তার বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন।

একটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, পুলিশকে একজন মনোচিকিৎসক জানিয়েছেন, সুশান্তের সঙ্গে তার কথা হয়েছে জুন মাসের ৮ তারিখে, রিয়া যে দিন অভিনেতার ফ্ল্যাট থেকে চলে গিয়েছিলেন এবং সুশান্তের বোন মিতু সিংহ তার সঙ্গে থাকার জন্য ফ্ল্যাটে এসেছিলেন। রিয়া সে দিন তাকে হোয়াটসঅ্যাপে জানান, সুশান্তের মানসিক অবস্থা অনেক খারাপ হয়েছে। আবার যদি ওষুধ চালু করা যায়, সে জন্যও বলেছিলেন রিয়া। ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, হোয়াটসঅ্যাপে প্রেসক্রিপশন লিখে পাঠিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সুশান্ত তার সঙ্গে কথা বলতে চান। সেই মতো রিয়ার ফোন থেকে ভিডিও কল করেন তিনি। চিকিৎসক বলেছেন, ‘‘সুশান্তকে যখন জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আপনি ওষুধ খাচ্ছেন না কেন, উনি কোনও কথা না বলে শুধু হেসেছিলেন। আমি সুশান্তকে ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিই। রিয়াকে বলি, বিষয়টির দিকে তিনি যেন নজর রাখেন। রিয়া আমাকে জানান, সুশান্ত তার কথা শোনেন না, ফলে তার পক্ষে কী করার আছে? আমি ফি চাইলে রিয়া আমাকে জানান, তিনি ফ্ল্যাট ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, সুশান্তের বোনই পরবর্তী সিদ্ধান্তগুলি নেবেন।’’ এর ছয়দিন পরে টেলিভিশনে সুশান্তের মৃত্যুর খবর পান ওই চিকিৎসক।

মুম্বই পুলিশকে ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, গভীর দুশ্চিন্তা, মানসিক অবসাদের ভিতরে ছিলেন সুশান্ত। ২০১৯ সালের নভেম্বরে মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে প্রথমবার সুশান্তের চিকিৎসা করেছিলেন তিনি। সেই সময়ে অভিনেতার ঘুম হচ্ছিল না, খেতে ইচ্ছা করত না, জীবনে কোনও কিছুই ভাল লাগত না তার। সব সময়ে ভীত ছিলেন তিনি, বেঁচে থাকার ইচ্ছেও হারিয়ে ফেলেছিলেন। ওই চিকিৎসক বলেছেন, সুশান্ত তাকে জানিয়েছিলেন, গত ১০ দিন ধরে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন তিনি। অভিনেতার মনের নেতিবাচক ভাবনাগুলি সামনে এলেও এর পিছনে বাইরে থেকে আসা কোনও বড়সড় কারণ তিনি খুঁজে পাননি বলেই জানিয়েছেন ওই মনোচিকিৎসক। সুশান্তকে তিনি জিজ্ঞাসা করেন, আত্মহত্যার কথা মাথায় আসে কিনা, অভিনেতা যা খারিজ করে দেন।

মুম্বই পুলিশকে আর এক জন মনোচিকিৎসক জানিয়েছেন, বাইপোলার ডিসঅর্ডার-এ ভুগছিলেন অভিনেতা। গত নভেম্বর মাসে রিয়াকে সঙ্গে নিয়ে তার কাছে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন সুশান্ত। রিয়াকে তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন, সুশান্তের ভিতরে আত্মহত্যার প্রবণতা রয়েছে কি না, অভিনেত্রী বলেছিলেন, ‘‘হ্যাঁ।’’ সুশান্ত চাইছিলেন, দ্রুত কেউ তাকে সুস্থ করে দিক। তা কোনও ভাবেই সম্ভব ছিল না। ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, কোনও কারণ ছাড়াই বিষন্ন থাকতেন সুশান্ত। তার সঙ্গে কথা বলার সময়ে অনেক দিন কান্নাকাটিও করেছিলেন। ওই চিকিৎসকের বক্তব্য, মস্তিষ্কে বিশেষ কিছু রাসায়নিকের ঘাটতির কারণে এমন পরিস্থিতি আসতে পারে এবং ওষুধের মাধ্যমে তা ঠিক পারে বলেই মনে করেছিলেন তিনি। তবে সুশান্ত কিছুতেই বিশ্বাস করতে রাজি ছিলেন না যে তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন।

সুশান্তের মৃত্যু রহস্য নিয়ে সিবিআইয়ের তদন্তে মনোচিকিৎসকদের এই বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এরই মধ্যে সুশান্তের প্রাক্তন ম্যানেজার শ্রুতি মোদীর আইনজীবী অশোক সারোগি জানিয়েছেন, কাজ করতে যাওয়ার ১০ দিনের ভিতরেই তার মক্কেল জানতে পারেন, অভিনেতা মাদকাসক্ত। তখন তিনি কাজ ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। তবে সুশান্ত তাকে থেকে যেতে বলেন। শ্রুতি তদন্তকারীদের মুখোমুখি হয়েছেন। আজ নিয়ে তৃতীয় দিন রিয়ার বাবা ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। এ দিকে, সিবিআই আজ জানিয়েছে, কোনও কোনও সংবাদমাধ্যমে তাদের তদন্ত নিয়ে অনেক জল্পনা সামনে আসছে। যার ভিত্তিই নেই।

সূত্র: আনন্দবাজার


সম্পর্কিত বিষয়:

সুশান্ত

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top