মানুষ পরিচয়ের প্রাণীরা অসভ্যতায় বিব্রতবোধ করি না: আফজাল হোসেন
প্রকাশিত:
১৫ মার্চ ২০২৫ ১৩:১৮
আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ১৭:৫৯

বাঁচানো যায়নি মাগুরায় নির্যাতিত সেই শিশুটিকে। চিকিৎসকদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছে পাশবিকতার শিকার একরত্তি। গোটা দেশবাসী শোকে মুহ্যমান। শোক ছুঁয়ে গেছে অভিনেতা আফজাল হোসেনকে।
আজ শনিবার নিজের ফেসবুকে অভিনেতা লিখেছেন, ‘ছোট্ট আছিয়া সামান্য কয়দিনের দুনিয়াদারী করতে এসে বুঝে গেল, এটা নরক। ভালো করেই জেনে গেছে, মানুষ নামের মানুষে জগৎ সয়লাব- আসল মানুষ তেমন নেই।’
এরপর লেখেন, ‘স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাও আরও এক দফা বুঝিয়ে দিলেন, শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মানুষের কৃতজ্ঞতা বা গৌরববোধ নেই- তার বদলে নানা প্রকারে মানুষ প্রমাণ দিতে চায়, কতটা নিকৃষ্ট তারা হতে পারে!’
অভিনেতার কথায়, ‘চলে গেল আছিয়া। জীবিতকালে তাকে সন্মান দেখাতে না পারি, মৃত্যুর পর অনেকটাই বোঝাতে পেরেছি, সন্মান দেখানোয় আমরা কতটা দক্ষ, আন্তরিক। দুঃখজনক হচ্ছে, দক্ষতা, আন্তরিকতা প্রকাশ করতে আমাদের কোনো না কোনো উপলক্ষ্যের প্রয়োজন পড়ে।’
তিনি যোগ করেন, ‘নিপীড়ন, অত্যাচার, অবমাননায় কারও মৃত্যু হলে- তখনই সে জীবন সন্মান, মর্যাদাপ্রাপ্তির উপযুক্ত হয়ে ওঠে। তখনই কেবল সে জীবনের প্রতি সংবেদনশীলতা প্রদর্শনের তাগিদ অনুভব করি। আমরা এই মানুষ পরিচয়ের প্রাণীরা অসভ্যতা, বর্বরতায় খুব একটা বিব্রত, পীড়িত, অসন্মানিতবোধ করি না- বয়স বিবেচনায় বর্বরকাণ্ডে সমাজসহ শিউরে উঠি।’
তার কথায়, ‘কোনো লজ্জা, ঘৃণা বা অতিরিক্ত বেদনার ঘটনা কেউ বেশিদিন মনে রাখে না। আছিয়াকেও মনে থাকবে না কারও কিন্তু নিজের জীবনের বদলে মানুষ ও সমাজের কুৎসিত রূপ সে খুব বড়, স্পষ্ট করে দেখিয়ে দিয়ে গেল। বুঝিয়ে দিয়ে গেল, তার জন্ম হয়তো সাধারণ ঘটনা ছিল কিন্তু ছোট্ট সে জীবন মানুষের দায়িত্ব কর্তব্যে নয়, নিষ্ঠুরতা, অমানবিকতাতেই বিশেষ হয়ে উঠতে পেরেছে।’
সবশেষে লিখেছেন, ‘নিকৃষ্ট ও শ্রেষ্ঠত্বের মাঝখানে ভেদ যে বিশেষ নেই, তা কি বোধগম্য হয়েছে আমাদের? হবে কোনোদিনও?’
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বেলা ১টার দিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শিশুটি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, শিশুটির রক্তে লবণের ভারসাম্যহীনতার কারণে ডায়ালাইসিসও করা হচ্ছিল। তাছাড়া, তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি পর্ষদ গঠন করা হয়েছিল।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: