‘বন্য প্রাণী আইন ২০১২’ ভাঙার অভিযোগ
‘শেষ গল্পটা তুমিই’ নাটকের পরিচালকের বিরুদ্ধে ১৫ কোটি টাকার মামলা!
প্রকাশিত:
২৫ জুলাই ২০২২ ১৯:৫৯
আপডেট:
২৫ জুলাই ২০২২ ২০:০১

‘শেষ গল্পটা তুমিই’ নাটকের শুটিংয়ে অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব, পরিচালক অনন্য ইমন ও অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। ছবি-সংগৃহীত
‘শেষ গল্পটা তুমিই’ নাটকের একটি দৃশ্যে খাঁচাবন্দি টিয়া পাখি দেখানোর কারণে পরিচালক অনন্য ইমনের বিরুদ্ধে ১৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে উচ্চ আদালতে মামলা করেছে সরকারের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ‘বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট’। এই মামলার সাক্ষী চারজন—অসীম মল্লিক (বন্য প্রাণী পরিদর্শক), মো. আব্দুল্লাহ-আস-সাদিক (বন্য প্রাণী পরিদর্শক), মো. হাফিজুর রহমান (ফরেস্টার) ও মো. আব্দুল মালেক (জুনিয়র ওয়াইল্ডলাইফ স্কাউট)।
মামলার নথিতে বলা হয়, “বন্য প্রাণীকে খাঁচাবন্দি করা, বেচাকেনা করা, প্রদর্শন করা বা এ জাতীয় অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করা, প্ররোচনা প্রদান ইত্যাদি ‘বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২’ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ‘সিডি চয়েস ড্রামা’ নামে ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত নাটকটিতে খাঁচাবন্দি বন্য প্রাণী প্রদর্শন প্রচলিত আইনে অপরাধ এবং অন্যদেরও সেই অপরাধ করতে উত্সাহিত করছে।
এ বছরের ভালোবাসা দিবসে বাংলাভিশনে প্রচারিত হয়েছিল নাটক ‘শেষ গল্পটা তুমিই’। সুকন্যা দত্তের রচনা ও অনন্য ইমনের চিত্রনাট্য-পরিচালনায় নাটকটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৌসিফ মাহবুব, তাসনিয়া ফারিণ, মিলি মুন্সি, পাপিয়া, আরেফিন, জারা ইসলাম প্রমুখ।
২৪ মার্চ থেকে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিডি চয়েসের ইউটিউব চ্যানেলে দেখা যাচ্ছে নাটকটি। প্রেমের গল্পের এই নাটকের ১৫ মিনিট আট সেকেন্ড থেকে শুরু হওয়া ৫৩ সেকেন্ডের একটি দৃশ্য নিয়েই যত আপত্তি বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের। সেখানে দেখা যায়, বাড়ির ছাদে মা ও বোনের সঙ্গে কথা বলছে নাটকের নায়ক, কথা বলতে বলতেই খাঁচাবন্দি একটি টিয়া পাখিকে খাবার দিচ্ছে।
নাটকের দৃশ্যটি ও মামলার বিষয়ে পরিচালক অনন্য ইমন বলেন, ‘নাটকের চিত্রনাট্যে এমন কোনো দৃশ্য ছিল না। যে বাড়িতে শুটিং করেছি সেখানেই ছিল টিয়া পাখিটি, দৃশ্যায়নের সময় মনে হলো নায়ক কোনো একটা কাজ করতে করতে মা ও বোনের সঙ্গে কথা বললে দৃশ্যটা বেশি বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে দর্শকের কাছে। তা ছাড়া এখানে পাখিকে আদর করে খাওয়ানো হচ্ছে, এটা নিয়ে আইনি ঝামেলায় পড়ে যাব মাথাতেই আসেনি। একই সঙ্গে দৃশ্যটিতে নায়কের মা গাছে পানি দিচ্ছিল, পাখি বন্দি দেখানোয় যদি কপালে তিরস্কার জোটে, তবে গাছে পানি দিতে সবাইকে উত্সাহিত করার জন্য আমার পুরস্কার পাওয়া উচিত। আমার নাটকের বাজেট মাত্র চার লাখ টাকা, ক্ষতিপূরণের দাবি ১৫ কোটি টাকা। পারিবারিক সব সম্পত্তিসহ আমাকে বিক্রি করলেও এত টাকা পাওয়া যাবে না। সম্প্রতি প্রচারিত আরো কিছু নাটক-সিনেমায় খাঁচাবন্দি পাখি আমি দেখেছি, সব বাদ রেখে আমাকেই কেন কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে, সেটাও বুঝতে পারছি না। ’
এর মধ্যে আদালতে হাজির হতে বলা হলেও অনন্য ইমন যেতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘২৬ জুন আমাকে আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়েছিল, কোরবানির ঈদের নাটকের পূর্বনির্ধারিত শুটিং থাকায় যেতে পারিনি। এরপর আমি আইনজীবী নিয়োগ করে ২১ জুলাই আদালতে যাই, তখন বিচারক আমাকে ১ আগস্ট হাজির থাকতে বলেছেন। আশা করছি অনিচ্ছাকৃত এই কর্মকাণ্ডের জন্য আদালত আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ’
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: