রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪শে ভাদ্র ১৪৩১

https://rupalibank.com.bd/


বর্ষাকালে চর্মরোগ বাড়ে কেন, করণীয় কী?


প্রকাশিত:
৭ জুলাই ২০২৪ ১৬:৩৬

আপডেট:
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:১০

ছবি- সংগৃহীত

বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় বর্ষায় ত্বকের রোগ বেড়ে যায়। এসময় অসংখ্য মানুষ চর্মরোগে ভোগেন। বৃষ্টিতে বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকে। একারণে এসময় ত্বকে ছত্রাক বা ফাঙ্গাসজনিত সংক্রমণ বেশি হয়। ত্বক কোমলতা হারায়, হয়ে ওঠে খসখসে। এতে চুলকানি সৃষ্টি হয়।

স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় জীবাণু শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এসময় চর্মরোগ থেকে রক্ষা পেতে তাই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বর্ষায় কী কী চর্মরোগ হয় চলুন জেনে নেওয়া যাক-

অ্যাথলেট ফুট

বৃষ্টির দিনে অতিরিক্ত সময় পা ভেজা থাকলে পায়ের পাতা কিংবা দুই পাতার মাঝখানে চুলকানি বা জ্বালা হতে পারে। একে অ্যাথলেট ফুট বলে। এটি একটি ছত্রাকজনিত রোগ। এ সমস্যা হলে পা ভালোভাবে পরিষ্কার করে শুকনো রাখতে হবে। পাশাপাশি অ্যান্টি ফাংগাল ওষুধ ব্যবহার করতে হবে এবং খোলা জুতা পরতে হবে।

টিনিয়াসিস বা দাদ

বর্ষাকালে ঘাড়, পায়ের পাতা, বগলের নিচে গোল চাকার মতো লালচে ক্ষতস্থান সৃষ্টি হতে পারে। এই সমস্যাকে টিনিয়াসিস বা দাদ বলে। শরীরের নানা ভাঁজে ছত্রাক বা ফাঙ্গাসের কারণে প্রচণ্ড চুলকানির পাশাপাশি কখনো কখনো দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত তৈরি হতে পারে। গলা, মুখ, কুঁচকি, মলদ্বার, বুক ও পিঠে দাদ বেশি দেখা দেয়। এই সমস্যা হলে পরিষ্কার পোশাক পড়তে হবে। কোনোভাবেই ক্ষতস্থানে কাটাছেঁড়া করা যাবে না।

খোসপাঁচড়া

এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ। পরিবারের একজনের হলে অন্যরাও আক্রান্ত হতে পারে। এর চুলকানির তীব্রতা ভয়ংকর। খোসপাঁচড়া হলে সুরক্ষার জন্য পরিবারের সবারই চিকিৎসা নেওয়া উচিত। সারকোপটিস স্ক্যাবি নামের একধরনের পরজীবী ত্বকের বিভিন্ন স্থানে দানা সৃষ্টি করে। শিশুদের ক্ষেত্রে সময়মতো চিকিৎসা না নিলে কিডনি জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।

সেবোরিক ডারমাটাইটিস

বৃষ্টির দিনে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। এটা অনেকটা তৈলাক্ত ও হলুদাভ হয়ে থাকে। আক্রান্ত স্থান প্রচণ্ড চুলকাতে পারে। ফলে চুল পড়া, ত্বকে জ্বালাবোধ ও ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। মূলত ইস্ট নামে একধরনের ছত্রাকের কারণে এমনটা হয়। এটি মাথার ত্বক, ভ্রু, মুখমণ্ডল, নাকের দুই পাশ, বুক ও পিঠের মাঝখানে ছোট ছোট দানার সৃষ্টি করে।

একজিমা ও টিনিয়া ক্যাপিটিস

একজিমার কিছু লক্ষণ হলো ত্বকে জ্বালা, ত্বক ফেটে যাওয়া এবং বারবার চুলকানি হওয়া। আর টিনিয়া ক্যাপিটিস রোগে মাথার ত্বকে দাদ হয়। এই ছত্রাকজনিত রোগের কারণে ভ্রু দাড়িতে ক্ষত স্থান দেখা যেতে পারে।

চর্মরোগ থেকে বাঁচতে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতায় করণীয়

বর্ষায় চর্মরোগ থেকে রক্ষা পেতে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা জরুরি। প্রতিদিন গোসল করার পাশাপাশি নিয়মিত মুখমণ্ডল পরিষ্কার করতে হবে। ব্যক্তিগত চিরুনি, তোয়ালে, সাবান, বিছানা-বালিশ কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করা যাবে না।

পথেঘাটের নোংরা পানি ত্বকে লাগলে বাড়ি ফিরে দ্রুত ধুয়ে ফেলতে হবে। ঘেমে গেলে পোশাক পরিবর্তন করুন। একই পোশাক কয়েকদিন পরবেন না। ত্বক সবসময় শুষ্ক রাখবেন, বিশেষত শরীরের ভাঁজগুলো।

চর্মরোগ দূর করার ঘরোয়া উপায়

বেকিং সোডা ও লেবুর রস

দুই চামচ বেকিং সোডার সঙ্গে এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই মিশ্রণ ক্ষতস্থানে লাগিয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন গোসলের আগে এই পেস্টটি ব্যবহার করলে চুলকানি কমে যাবে।

চন্দন

ত্বকের জন্য দারুণ উপকারি চন্দন। উন্নত মানের চন্দনের গুঁড়ার প্রলেপ চুলকানির স্থানে লাগিয়ে রাখুন। এতে উপকার মিলবে।

নিম

নিমের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে। ত্বকের যেকোনো চুলকানি কমাতে এটি বেশ উপকারি। নিম পাতা বেটে ত্বকে প্রলেপ লাগান। এতে উপকার পাবেন।

নারকেল তেল

ত্বকের ফোলাভাব কমায় নারকেল তেল। এতে ত্বক কোমল হওয়ার পাশাপাশি কমে চুলকানিও। হাতের তালুতে সামান্য নারকেল তেল নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে চুলকানির স্থানে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।

সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন। এরপরও চর্মরোগ না কমলে দ্রুত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top