শনিবার, ১৫ই মার্চ ২০২৫, ৩০শে ফাল্গুন ১৪৩১


রানির ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণ ৫০০ মিলিয়ন ডলার


প্রকাশিত:
১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৫:৪১

আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ০১:১৬

 ছবি : সংগৃহীত

ব্রিটেনের সদ্য প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সম্পত্তি নিয়ে নানা কথা প্রচলিত আছে। তার সেই সম্পত্তির পরিমাণ হিসাব করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিখ্যাত ফরচুন ম্যাগাজিন। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী রানির ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণ ৫০০ মিলিয়ন ডলার।

৭০ বছরের বেশি সময় সিংহাসনে আসীন ছিলেন তিনি। ওই সময়েই এই পরিমাণ সম্পত্তি অর্জন করেছেন তিনি। এ ছাড়া ব্রিটিশ রাজপরিবারের ২৮ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা রয়েছে, যাকে রয়্যাল ফার্ম বলা হয়। রাজা ষষ্ঠ জর্জ ও প্রিন্স ফিলিপ এটিকে পারিবারিক ব্যবসাও বলে থাকেন।

৯৬ বছর বয়সে রানির মৃত্যু হয়। তিনি তার আগামী প্রজন্মের জন্য রেখে গেলেন ৫০০ মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি। ছেলে প্রিন্স চার্লস রাজার আসনে বসার পরপরই বিপুল এ সম্পত্তির মালিক বনে যাবেন।

করদাতাদের তহবিল থেকে সার্বভৌম অনুদান আকারে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ পেতেন রানি এলিজাবেথ। ব্রিটিশ সরকার রাজপরিবারকে এ অর্থ দেয়। রাজা তৃতীয় জর্জ ও ব্রিটিশ পার্লামেন্টের মধ্যে এক চুক্তি অনুযায়ী রাজা জর্জ সব সম্পত্তি পার্লামেন্টকে দিয়ে দেন। এর বদলে রাজপরিবারকে ব্রিটিশ সরকার প্রতিবছর একটা অর্থ দেয়। একে আগে ‘নাগরিক তালিকা’ বলা হতো। ২০১২ সাল থেকে এ অর্থকে ‘সার্বভৌম অনুদান’ বলা হচ্ছে।

সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ২০২১-২২ সালে এ সার্বভৌম অনুদানের পরিমাণ ছিল ৮৬ মিলিয়ন পাউন্ড। রানির প্রাসাদ বাকিংহাম প্যালেসের রক্ষণাবেক্ষণ এবং সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এ টাকা রাজপরিবারকে দেওয়া হয়। তবে রানিকে আলাদা করে কোনো টাকা বা বার্ষিক অনুদান দেওয়া হয় না।

রয়্যাল ফার্মের মূল্য ২৮ বিলিয়ন ডলার-
ব্রিটেনের রয়্যাল ফার্ম মনার্ক পিএলসি নামেও পরিচিত। এর আনুমানিক সম্পদমূল্য ২৮ বিলিয়ন ডলার। এ ব্যবসায়িক ফার্মে রানি এলিজাবেথের নেতৃত্বে রাজপরিবারের সদস্যরা রয়েছেন। অনেক ইভেন্ট ও পর্যটনের মাধ্যমে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছর যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে মিলিয়ন পাউন্ড জোগান দেয়। ফার্মের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন চার্লস ও তার স্ত্রী ক্যামিলা, প্রিন্স উইলিয়াম ও তার স্ত্রী কেট মিডলটন, প্রিন্সেস অ্যান, প্রিন্স অ্যাডওয়ার্ড ও তার স্ত্রী সোফি।

তহবিলের বেশির ভাগ অর্থ খরচ করা হয়েছে রাজপ্রাসাদ রক্ষণাবেক্ষণ ও কর্মীদের বেতনের জন্য। গত বছর রানি এলিজাবেথ সিংহাসনে আরোহণের ৭০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানের জন্য বাকিংহাম প্যালেসের সংস্কারকাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ৫৫ লাখ পাউন্ড খরচ করা হয়।

ক্রাউন এস্টেটের ইতিহাস-
ক্রাউন এস্টেট মূলত রাজতন্ত্রের মালিকানাধীন জমিগুলোর নাম। নরম্যান বিজয়ের সময় থেকে এগুলো রাজতন্ত্রের সম্পত্তি হয়। রাজা তৃতীয় জর্জ ১৭৬০ সালে ক্রাউন এস্টেট থেকে পাওয়া আয় হস্তান্তর করার জন্য সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলেন। বিনিময়ে রাজা ও তার উত্তরসূরিরা একটি নির্দিষ্ট বার্ষিক অর্থ পাবেন বলে চুক্তিতে বলা হয়েছিল, যেটি মূলত সিভিল লিস্ট নামে পরিচিত। ২০১০ সালে সিভিল লিস্টের নাম পরিবর্তন করে সার্বভৌম অনুদান করা হয়।

আয়ের আরো অন্য উৎস-
রানির আয়ের অন্য এক বিরাট উৎস দ্য ড্যাচি অব ল্যাংকেস্টার। এটি মূলত ব্রিটেন রাজপরিবারের বাণিজ্যিক, কৃষিজাত ও আবাসিক সম্পত্তি। তবে এটি সরকারি সম্পত্তি নয়, বরং উত্তরাধিকার হিসেবে পাওয়া পারিবারিক সম্পত্তি। রাজা ষষ্ঠ জর্জের মৃত্যুর পর বড় মেয়ে হিসেবে এ সম্পত্তি বুঝে পান রানি এলিজাবেথ। তার মৃত্যুর পর এখন এ সম্পত্তির মালিক হবেন প্রিন্স চার্লস। ল্যাঙ্কাশায়ার ও ইয়র্কশায়ারের মতো এলাকায় ১৮ হাজার হেক্টরের বেশি জমি আছে। এ ছাড়া সেন্ট্রাল লন্ডনেও আছে এসব জমি। এসব সম্পত্তি থেকে প্রতিবছর প্রায় দুই কোটি পাউন্ড আয় হয়।

নিরাপত্তা ব্যয়-
অনেকেই বলেন, রাজপরিবারের প্রকৃত খরচ জনসমক্ষে যা প্রচার করা হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি। কারণ, নিরাপত্তার জন্য যে অর্থ ব্যয় হয়, সেটি সার্বভৌম অনুদান দেয় না। এর ব্যয়ভার সাধারণত মেট্রোপলিটন পুলিশ বহন করে থাকে। রিপাবলিক নামের একটি সংস্থা নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধানকে নিয়ে খবরাখবর দিয়ে থাকে। সংস্থাটি অনুমান করছে, নিরাপত্তা খরচসহ রাজতন্ত্রের মোট বার্ষিক খরচ প্রায় ৩৪ কোটি পাউন্ড, যা সার্বভৌম অনুদানের চেয়ে কয়েক গুণ। তবে কিছু কিছু পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মনে করে, পর্যটনের মাধ্যমে রাজতন্ত্র প্রতিবছর অর্থনীতিতে অবদান রাখে। এই খাত থেকে আসা অর্থ রাজপরিবারের নিরাপত্তা ও অন্যান্য খরচের তুলনায় অনেক বেশি।

রানির ব্যক্তিগত সম্পত্তি-
রানির ব্যক্তিগত সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার। বিনিয়োগ, শিল্প সংগ্রহ, গয়না ও রিয়েল এস্টেট থেকে এ বিপুল পরিমাণ টাকা আয় করেছেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। মায়ের কাছ থেকে ৭০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পারিবারিক সম্পত্তিও পেয়েছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে দামি পেইন্টিং, গয়না, স্ট্যাম্প সংগ্রহ, ঘোড়া ইত্যাদি।


সম্পর্কিত বিষয়:

সম্পত্তি

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top