শুক্রবার, ১৪ই মার্চ ২০২৫, ৩০শে ফাল্গুন ১৪৩১


একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতির দাবিতে সম্মেলন, ব্রাসেলসে স্মারকলিপি


প্রকাশিত:
১২ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:১৬

আপডেট:
১৪ মার্চ ২০২৫ ১৩:০৪

ফাইল ছবি

১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বাংলাদেশে যে গণহত্যা চালিয়েছিল, তাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) স্বীকৃতির দাবিতে ২ দিন জুড়ে সম্মেলন হয়েছে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে। সম্মেলন শেষে ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইইউ’র প্রধান নির্বাহী সংস্থা ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট রবের্টা মেটসোলার দপ্তরে একটি স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়েছে।

গত ৮ এবং ৯ ডিসেম্বর হয়েছে এই সম্মেলন। রাজনীতিবিদ, মানবাধিকারকর্মী এবং বুদ্ধিজীবীদের একটি দল ছিল এই সম্মেলনের আয়োজক। এই দলটি কোনো নির্দিষ্ট দেশের কিনা কিংবা আয়োজকদের মধ্যে কোন কোন দেশের লোকজন আছে, সেসম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ধারণা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে যে স্মারকলিপিটি ইউরোপীয় পার্লামেন্টে দেওয়া হয়েছে, তাতে ১৮০টিরও বেশি বেশি স্বাক্ষর আছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে নিশ্চিত করেছে মেটসোলার দপ্তরের এক কর্মকর্তা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ‘১৯৭১ সালে পাক বাহিনী যখন বাংলাদেশের নিরস্ত্র বেসামারিক লোকজনের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে সে সময় এ সম্পর্কে বিস্তর লেখালেখি হয়েছিল; কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য— যুদ্ধ শেষ হওয়ার অতি অল্প সময়ের মধ্যেই সবাই সেসব সহিংসতা ভুলে গেছে। সেই বিস্তৃতির পরিমাণ এতটাই যে— হামলাকারীদের আন্তর্জাতিক বিচারের সম্মুখীন করার দাবিও তোলা সম্ভব হয়নি বহু বছর।’

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তির পর ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের অংশ ছিল বর্তমান বাংলাদেশ। ’৭০ সালের নভেম্বরে জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভূমিধস জয়ের পর ক্ষমতা হস্তান্তর সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের জেরে ‘৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ভয়াবহ সহিংসতা চালায় পাক সেনাবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদর বাহিনী।

ওই বছর ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান বাহিনীর প্রধান লেফট্যান্ট কর্নেল নিয়াজির নেতৃত্বে যখন ভারত-বাংলাদেশ যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে, তার আগে গত ৯ মাসে বাংলাদেশে নিহত হন ৩০ লাখ মানুষ, সম্ভ্রম হারান অন্তত ২ লাখ নারী এবং বাংলাদেশ পরিণত হয়েছিল কার্যত একটি ধ্বংস্তুপে।

৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা প্রতিরোধ দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। ১৯৪৮ সালের সম্মেলনে গণহত্যা প্রতিরোধে জেনেভা সম্মেলনে যেসব নীতি গ্রহণ করণ করেছিল জাতিসংঘ, সেসবেরই ভিত্তিতে ৯ ডিসেম্বরকে গণহত্যা প্রতিরোধ দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সম্মেলনের আয়োজক দলও সম্মেলনের সমাপ্তি ও স্বারকলিপি প্রদানের জন্য বেছে নিয়েছেন এ দিনটিকেই।

আয়োজকরা অবশ্য ’৭১ সালের হত্যাযজ্ঞের পাশপাশি মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়েও উল্লেখ করেছেন স্বারকলিপিতে। এ সম্পর্কে সেখানে বলা হয়েছে, ‘আমরা এই সম্মেলন থেকে ইইউ বরাবর দাবি জানাচ্ছি— ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে এবং পরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যত হত্যাযজ্ঞ চলেছে, সেসবকে ইইউ গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিক হোক এবং বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে দেশটির সামরিক বাহিনীর ওপর ইইউয়ের তরফ থেকে কার্যকর চাপ প্রদান করা হোক।’


সম্পর্কিত বিষয়:

গণহত্যা

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top