বৃহঃস্পতিবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৫, ১১ই বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


বিশ্বে প্রথমবারের মতো কৃত্রিম মানব ভ্রুণ তৈরির দাবি বিজ্ঞানীদের


প্রকাশিত:
১৬ জুন ২০২৩ ০০:৩০

আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:০৬

প্রতিকী ছবি

মানুষসহ প্রতিটি স্তন্যপায়ী ও মেরুদণ্ডী অন্যান্য বর্গের প্রাণীর ভ্রুণ গঠিত হয় শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর নিষেকের মাধ্যমে। তবে যুক্তরাজ্য ও মার্কিন বিজ্ঞানীদের একটি দল সম্প্রতি দাবি করেছেন, শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর নিষেকক্রিয়া ছাড়াই গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে মানব ভ্রুণ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন তারা।

কৃত্রিম এই ভ্রুণটি অবশ্য স্বাভাবিক ভ্রুণের মতো এখনও পরিপূর্ণ হয়ে ওঠেনি। স্বাভাবিক ভ্রুণে যে সময়ে হৃৎস্পন্দন ও মস্তিষ্কের গঠন শুরু হয়— নতুন ভ্রুণটিতে এখনও তা ঘটেনি। তবে ভ্রুণটির বৃদ্ধি ও বিকাশ অব্যাহত আছে এবং গবেষকরা আশা করছেন— স্বাভাবিকের চেয়ে খানিকটা ধীর গতিতে হলেও একসময় এই ভ্রুণটিতে হৃৎস্পন্দন ও মস্তিষ্কের গঠন শুরু হবে।

গবেষক দলের প্রধান, যুক্তরাজ্যের কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষক ম্যাগডালেনা জেরনিকা গোয়েৎজ বলেছেন, ২০২২ সালে তার নেতৃত্বাধীন গবেষক দল ইসরায়েলের ওয়েইজমান ইনস্টিটিউটের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যৌথভাবে গবেষণা কাজটি করেছে। সেই গবেষণায় একটি ইঁদুরের ভ্রুণ থেকে কোষ নিয়ে তাকে রি-প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে ভ্রুণে পরিণত করতে সফল হয়েছিলেন তারা।

‘তারপর আমাদের মনে হলো— একই পদ্ধতি অনুসরণ করে কৃত্রিম মানব ভ্রুণও তৈরি করা সম্ভব। এক্ষেত্রেও আমরা মানব ভ্রুণ থেকে কোষ সংগ্রহ করে তাকে রি-প্রোগ্রাম করার পদ্ধতি অনুসরণ করেছি,’ ক্যালিফোর্নিয়ায় এক কনফারেন্সে বলেন ম্যাগডালেনা জেরনিকা গোয়েৎজ।

মানব জরায়ুর ভেতরে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর নিষেকের পর নিষিক্ত সেই কোষটির ভ্রুণের আকার পেতে ১৪ দিন সময় লাগে। বুধবারের ওই সম্মেলনে জেরনিকা গোয়েটজ আরও বলেন, গবেষণাগারে তারা যে ভ্রুণটি সৃষ্টি করেছেন— সেটিও স্বাভবিক ভ্রুণের মতোই বিকশিত হবে বলে আশা করছেন তারা।

‘স্বাভাবিক মানবভ্রুণের মতো আমাদের এই ভ্রুণটিও কোষ এবং অ্যামনিওন (এক প্রকার ঝিল্লি) আলাদাভাবে শনাক্ত করার পর্যায়ে পৌঁছেছে। সুতরাং সামনের দিনগুলোতে আরও বিকশিত হয়ে আমাদের ভ্রুণটি একটি পরিপূর্ণ ভ্রুণ হয়ে উঠবে— এটা খুবই স্বাভাবিক।’

‘এবং একই সঙ্গে দারুণ একটি ব্যাপার…. এমন একটি ভ্রুণ আমরা তৈরি করতে পেরেছি— যেখানে ডিম্বাণু ও শুক্রাণু ব্যবহার করা হয়নি,’ ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন জেরনিকা গোয়েটজ।

জেরনিকা গোয়েটজের দাবি, তাদের এই প্রকল্প যদি সফল হয়— সেক্ষেত্রে মানুষের জেনেটিক রোগব্যাধি এবং শারীরিক জটিলতার কারণে গর্ভপাত রোধ বিষয়ক গবেষণা অনেকদূর অগ্রসর হবে।

যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের জেষ্ঠ্য গবেষক রজার স্টার্মি অবশ্য এ ব্যাপারে ততটা আশাবাদী নন। দ্য গার্ডিয়ানকে এই ব্রিটিশ গবেষক বলেন, ‘আমি মনে করি— এই গবেষণাটি এখনও সেই পর্যায়ে পৌঁছায়নি— যেখানে গেলে স্বাভাবিক ভ্রুণ ও কৃত্রিম ভ্রুণের মধ্যকার পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করা যায়।’

‘এমনকি বিজ্ঞানী মহলে তার জেরেনিকা গোয়েটজের এই গবেষণা সম্পূর্ণরূপে গৃহীতও হয়নি। তবে জেরেনিকা এবং তার দলের গবেষণাটি এই কারণে গুরুত্বপূর্ণ যে— জীবনের বিকাশ খুবই রহস্যময় একটি ব্যাপার। বিজ্ঞানের এই ক্ষেত্রটির এখনও অনেক কিছুই আমাদের অজানা। যদি তাদের গবেষণা সফল হয়, সেক্ষেত্রে কিছু প্রশ্নের সমাধান আমরা পাব।’


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top