বৃহঃস্পতিবার, ১৩ই মার্চ ২০২৫, ২৮শে ফাল্গুন ১৪৩১


রোহিঙ্গাদের শিবির ছাড়ার হার বাড়ছে, সঙ্গে নিচ্ছেন শিশুদের


প্রকাশিত:
২৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:৪৩

আপডেট:
১৩ মার্চ ২০২৫ ০২:১৮

ছবি-সংগৃহীত

সম্প্রতি বাংলাদেশের কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে নৌপথে ইন্দোনেশিয়া-মালয়েশিয়ায় যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বাড়ছে। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব অনিশ্চিত যাত্রায় নিজেদের পরিবার ও শিশু সন্তানদেরও সঙ্গে নিচ্ছেন রোহিঙ্গারা; ফলে রোহিঙ্গা শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের শরণার্থী শিবির ত্যাগের হারও বাড়ছে।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সহায়তা প্রদানকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্য আরাকান প্রোজেক্টের পরিচালক ক্রিস লিওয়া বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ থেকে নৌপথে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দুই দেশ ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার উদ্দেশে যখন নৌকাপথে যাত্রা শুরু হলো— সে সময় তরুণ পুরুষ যাত্রীদের হার বেশি ছিল।’

‘কিন্তু এখন রোহিঙ্গাদের মধ্যে সপরিবারে বাংলাদেশ ত্যাগের হার বাড়ছে। ফলে বিপজ্জনক এসব নৌযাত্রায় বাড়ছে রোহিঙ্গা শিশুদের হারও।’

সাধারণত অক্টোবরের শেষ দিক থেকে টেকনাফ উপকূল থেকে যাত্রা শুরু করে রোহিঙ্গা যাত্রীবাহী নৌকাগুলো, মার্চ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। মার্চের পর থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সমুদ্রের অশান্তভাব, ঝড়-বৃষ্টির কারণে বন্ধ থাকে নৌযাত্রা।

ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের প্রশাসনসূত্রে জানা গেছে, চলতি নভেম্বরে মোট ৩৬০ জন রোহিঙ্গা শিশু, ২৯২ জন নারী এবং ২৩৮ জন পুরুষ বাংলাদেশ থেকে নৌকায় প্রদেশটির বিভিন্ন সমুদ্রতীরে এসে পৌঁছেছেন।

রয়টার্সের অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশের টেকনাফ উপকূল থেকে অক্টোবরের শেষ থেকে এ পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার উদ্দেশে পাড়ি জমিয়েছে ৩৪ টি নৌকা। এসব নৌকার মোট ৩ হাজার ৫৭২ জন যাত্রীর ২১ শতাংশই ছিল শিশু এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক। ২০২২ সালে এই হার ছিল ২৭ শতাংশ।

বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান রয়টার্সকে বলেছেন, রোহিঙ্গা শিশুদের শরণার্থী শিবির ত্যাগ করে নৌ পথে যাত্রার প্রবণতা সম্প্রতি শুরু হয়েছে। আগে এমন ছিল না।

‘এই প্রবণতা আগে ছিল না, সম্প্রতি শুরু হয়েছে এবং এর পেছনে যৌক্তিক কারণও রয়েছে। যখন একটি গোটা জাতি রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়ে; যখন তারা দেখতে পায় নিজেদের দেশে তাদের ফিরে যাওয়ার উপায় নেই এবং যে দেশে তারা আশ্রয় নিয়েছে— সেখানকার স্থায়ী নাগরিক তারা হতে পারবে না, তখন স্বাভাবিকভাবেই তারা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ বোধ করে।’

তিনি জানান, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের আলোচনা শুরু হলেও দীর্ঘদিন ধরে তাতে কোনো অগ্রগতি নেই।

‘তাদেরকে আরও বিপদে ফেলেছে জাতিসংঘের সহায়তা কাটছাঁট। বর্তমানে প্রত্যেক রোহিঙ্গাকে মাসে মাথাপিছু আট ডলার করে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, যা আগের তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগ।’

‘এই টাকায় এমনকি প্রতিদিন একটি করে ডিম কেনাও তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। সামনে সহায়তা বৃদ্ধি কিংবা মিয়ানমার তাদের ফিরিয়ে নেবে এমন কোনো সম্ভাবনাও আপাতত দেখা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় তারা আর কী করতে পারে,’ রয়টার্সকে বলেন মিজানুর রহমান।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top