মঙ্গলবার, ২২শে এপ্রিল ২০২৫, ৯ই বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা চান না ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত


প্রকাশিত:
১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:০৭

আপডেট:
২২ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৩৫

ব্রিটেনে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত জিপি হটোভেলি। ছবি: আনাদোলু এজেন্সি

দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের ভিত্তিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা চান না ব্রিটেনে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত জিপি হটোভেলি। বুধবার ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টি কঠোর ভাষায় প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।

গতকাল (বুধবার) স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিরসনে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন হটোভেলি।

স্কাই নিউজের সাংবাদিক তার কাছে একাধিকবার জানতে চান, “একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে কি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব?” উত্তরে হটোভেলি বলেন, “এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে - নিশ্চিতভাবেই না।” লন্ডনে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে জিপি হটোভলি ইসরয়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন লিকুদ পার্টির নেতা ছিলেন।

তিন দশকেরও বেশি সময় আগে ১৯৯৩ সালে অসলো চুক্তি স্বাক্ষরের সময় থেকে ইসরায়েল ও তার প্রধান পৃষ্ঠপোষক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিন সংকটের ‘দুই রাষ্ট্র-ভিত্তিক’ সমাধানের কথা বলে এসেছে। কিন্তু স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে ঝুলিয়ে রেখে বারবার মার্কিন কর্মকর্তাদেরকে মুখে ‘দুই রাষ্ট্র-ভিত্তিক’ সমাধানের বুলি আওড়াতে দেখা গেছে। তবে বাস্তবে আমেরিকা বা ইসরায়েল কেউই যে ফিলিস্তিন নামক কোনো রাষ্ট্রের অস্তিত্ব মেনে নিতে রাজি নয়, গাজা যুদ্ধের সুবাদে সে কথা স্পষ্ট করে দিলেন ইসরায়েলের এই নারী কূটনীতিক।

কয়েক দিন আগে নেতানিয়াহুর এক বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে হটোভেলি বলেন, “বিশ্বকে একথা উপলব্ধি করতে হবে যে গত ৭ অক্টোবর অসলো চুক্তির ইতি ঘটেছে এবং আমাদেরকে নতুন কিছু ভাবতে হবে।” তিনি বলেন, “অসলো চুক্তি এজন্য ব্যর্থ হয়েছে যে ফিলিস্তিনিরা কখনও ইসরায়েলের পাশাপাশি একটি রাষ্ট্র চায়নি, তারা বরং নদী থেকে সাগর পর্যন্ত একটি রাষ্ট্র চায়।”

তিনি কেন ‘দুই রাষ্ট্র-ভিত্তিক’ সমাধানকে সমর্থন করছেন না- স্কাই নিউজের সাংবাদিক আবার ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতের কাছে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। হটোভেলি বলেন, “আপনি কেন বারবার এমন একটি ফর্মুলা নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করছেন - যা কখনও কাজ করেনি? ওই ফর্মুলা তো ফিলিস্তিনিদের মধ্যে হামাসের মতো উগ্রবাদীদের জন্ম দিয়েছে।”

গাজাবাসীকে নতুন করে ‘দীক্ষা দেওয়ার’ সময় এসেছে বলেও মন্তব্য করেন এই ইসরায়েলি কূটনীতিক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি ও জাপানের নাগরিকদেরকে নতুন করে দীক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে ওই দুই দেশের নাগরিকদের ইহুদি-বিরোধী মনোভাব যেভাবে বিলুপ্ত করা হয়েছে, গাজাবাসীর পাঠ্য বই নতুন করে বিন্যাসের মাধ্যমে একই কাজ করতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

উল্লেখ্য, গাজা উপত্যকার নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের ওপর প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে গেলেও কোনো পশ্চিমা দেশ বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন পর্যন্ত তেলআবিবকে আগ্রাসন বন্ধ করার আহ্বান পর্যন্ত জানায়নি।

মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮ হাজার ৬০৮ জন।

গাজার সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগ নারী ও শিশু।

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে নজিরবিহীন সামরিক অভিযান চালায়। ওই অভিযানে ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দি করে। সেদিন থেকেই ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গাজায় ভয়াবহ রক্তাক্ত অভিযান শুরু করে যা এখন পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলছে।

ইসরায়েলে সামরিক অভিযানের বিষয়ে আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের মুখপাত্র খালেদ কাদোমি বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো নৃশংসতার জবাবে এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর এবং আমাদের পবিত্র স্থাপনা আল-আকসায় ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধে উদ্যোগ নেবে। এগুলোই হামাসের এই অভিযানের কারণ।’


সম্পর্কিত বিষয়:

#ইসরায়েল

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top