শুক্রবার, ১৪ই মার্চ ২০২৫, ২৯শে ফাল্গুন ১৪৩১


দক্ষিণ এশিয়ায় বন্যা

বাংলাদেশসহ ৩ দেশে নিহত ১১৪, পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ


প্রকাশিত:
৮ জুলাই ২০২৪ ১৯:০২

আপডেট:
১৪ মার্চ ২০২৫ ০৩:৪৩

ছবি সংগৃহিত

অতিবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের জেরে সৃষ্ট বন্যায় দক্ষিণ এশিয়ার তিন দেশ নেপাল, বাংলাদেশ ও ভারতের আসাম রাজ্যে গত জুন মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ১১৪ জন মানুষ। এছাড়া বন্যার পানি নেমে না যাওয়ায় এই তিন দেশের উপদ্রুত অঞ্চলগুলোতে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।

জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র ও কোশিসহ তিন দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদ-নদীগুলোর পানি ব্যাপকমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়ে দু’কূল ছাপিয়ে ওঠাই এই বন্যার প্রধান কারণ।

দক্ষিণ এশিয়া মূলত বৃষ্টিবহুল অঞ্চল। আর প্রতি বছর এই অঞ্চলে যত বর্ষণ হয়, তার ৯০ শতাংশই ঘটে বর্ষাকালে। ফলে বন্যা বা ভূমিধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ এই অঞ্চলভুক্ত দেশগুলোতে বিরল নয়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ এশিয়ায় বর্ষণের হার বিপজ্জনক হারে বাড়ছে।

চলতি বর্ষা মৌসুমে নেপালের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা ও হড়কা বানে ৪০ জনেও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৪ জন নিহত হয়েছেন গত এক সপ্তাহে।

রাজধানী কাঠমান্ডুর বাসিন্দা রাজকুমার বিকে রয়টার্সকে বলেন, ‘এই বর্ষণ আমাদের জন্য নতুন কোনো ঘটনা নয়, তবে এ বছরের ব্যাপারটি ভিন্ন। চলতি বছরের শুরু থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে নেপালের বিভিন্ন অঞ্চলে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বন্যা বাড়বে, সেই সঙ্গে বাড়বে প্রাণহানিও।’

গত মে মাসের শেষ দিক থেকে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দেওয়া শুরু হয়। তারপর জুন এবং চলতি জুলাই মাসে বন্যাপ্লাবিত অঞ্চলের ব্যাপ্তি আরও বাড়ে। বন্যার শুরু থেকে এ পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন বন্যা কবলিত এলাকায় পানিতে ডুবে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৬ জন মানুষ।

এই পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতির আশা ক্ষীণ। কারণ আসামের প্রধান নদ ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বন্যা ও ভূমিধসে অনেক অঞ্চলের রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় সেসব এলাকায় ঠিকমতো ত্রাণ ও সহায়তা সামগ্রী পাঠানো যাচ্ছে না।

বিশ্বজুড়ে অতিবিপন্ন বন্যপ্রাণীর একটি হলো একশিঙা গণ্ডার। বর্তমানে একমাত্র ভারতেই এই গণ্ডারের দেখা মেলে। আসামের কাজিরাঙা সংরক্ষিত বনাঞ্চলে প্রায় ২ হাজার ২০০টি একশিঙা গণ্ডারসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রানী রয়েছে।

সেই কাজিরাঙা সংরক্ষিত বনেও ঢুকেছে বন্যার পানি। আসামের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে বন্যায় এ পর্যন্ত ৪টি একশিঙা গণ্ডার এবং বেশ কিছু হরিণের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে ব্রহ্মপুত্র ও তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যা শুরু হয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও। দেশের ৬৪টি টি জেলার ১৬টিতে ঢুকেছে বন্যার পানি। এসব জেলার বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে পানিবন্দি আছেন অন্তত ২০ লাখ মানুষ।

আব্দুল গফুর নামে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার স্থানীয় এক কাউন্সিলর এএফপিকে বলেন, ‘আমরা এখানে বন্যার মধ্যে বসবাস করছি। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবারের বন্যার গতি-প্রকিৃতি বিপজ্জনক। গত তিন দিনে ব্রহ্মপুত্রের পানি ৬ থেকে ৮ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে।’

‘আমরা বন্যার্তদের মধ্যে খাদ্য সরবরাহ করছি। তবে সুপেয় পানির সংকট এখানে বেশি।’

সূত্র : বিবিসি



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top