বৃহঃস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১


যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ব্লিঙ্কেনকে ২২ সিনেটরের চিঠি


প্রকাশিত:
৩ আগস্ট ২০২৪ ১৪:০৪

আপডেট:
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:০৫

ফাইল ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে চিঠি দিয়েছেন দেশটির পার্লামেন্ট কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং উচ্চকক্ষ সিনেটের ২২ জন সদস্য। দেশটির মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের সিনেট সদস্য ক্রিস ভ্যান হোলেন এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছেন এ তথ্য।

ক্রিস ভ্যান হোলেন ছাড়াও বাকি যেসব সিনেট সদস্য চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন, তারা হলেন সিনেট সদস্য এডওয়ার্ড জে মার্কি, সিনেট সদস্য ডিক ডারবিন, সিনেট সদস্য কিম কেইন, সিনেট সদস্য জেফ মার্কলে, সিনেট সদস্য ক্রিস মারফি এবং হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্য জিম ম্যাকগভার্ন, বিল কেটিং, সেথ মলটন, লোরি ট্রাহান, জো উইলসন, ডিনা টাইটাস, গ্রেস মেং, গেরি কোনোলি, গ্যাবি অ্যামো, আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও-কোর্টেজ, ইলহান ওমর, নিদিয়া ভেলানজকুইজ, ড্যান কিলডি, বারবারা লি এবং জেমস ময়লান।

চিঠিতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলন ও তার পরবর্তী পরিস্থিতির পাশাপাশি গত জানুয়ারি মাসের জাতীয় নির্বাচনের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মার্কিন জনপ্রতিনিধিরা। তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের শ্রমিকদের দমন-পীড়ন এবং সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলন দমনে র‌্যাবকে ব্যবহার করা নিয়েও। মানবাধিকার লঙ্ঘণের অভিযোগে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই এলিট ফোর্সকে ২০১৭ সালে নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন প্রশাসন। সেই নিষেধাজ্ঞা এখনও প্রত্যাহার করা হয়নি।

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও মানবাধিকার পরিস্থিতিকে আরও সুসংহত করতে এই দেশে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতা দ্বিগুণ করার আহ্বানও জানিয়েছেন তারা।

চিঠিতে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের উদ্দেশে মার্কিন এই আইনপ্রণেতারা লেখেন, “বাংলাদেশের বর্তমান গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ নিয়ে আমরা আপনার উদ্দেশে এই চিঠি লিখেছি। বাংলাদেশের শিক্ষার্থী আন্দোলনকারী এবং দেশটিতে ক্ষমতাসীন সরকারের মধ্যকার সাম্প্রতিক সংঘাত নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন, কারণ ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি যে নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে- যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ এবং অন্যান্য পর্যবেক্ষকদের কাছে সেই নির্বাচন ব্যাপকভাবে সমালোচিত এবং প্রশ্নবিদ্ধ।”

“বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ দেশটির গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করছে। ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন এই সরকার দেশের শ্রমিকদের অনকূলে নীতি গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে এবং অতি সম্প্রতিকালে সরকারি চাকরিতে প্রচলিত কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমন করতে বন্দুক, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার সহ প্রায় এক সপ্তাহ পুরো দেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার ঘটনাও ঘটেছে।”

“এই আন্দোলনে এ পর্যন্ত অন্তত ১৭০ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন হাজারেরও বেশি এবং গ্রেপ্তার হয়েছেন হাজার হাজার। আন্দোলন দমনে দাঙ্গা পুলিশের পাশাপাশি এলিট ফোর্স র‌্যাবেরও ব্যবহার করেছে সরকার, যে বাহিনীকে মানবাদিখার লঙ্ঘণের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। সারা দেশে কারফিউ জারি এবং কারফিউয়ের সময় লোকজনকে দেখামাত্র গুলির নির্দেশও সরকার দিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।”

“যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক আইনের শাসন, গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা, মানবাধিকার সুরক্ষ- প্রভৃতি নীতির ওপর পরাস্পরিক শ্রদ্ধা ও ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সহযোগিতা ও সমর্থনে দেশটি তার নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও গভীর ও ঘনিষ্ট হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির আকারও বড় হয়েছে।”

“এই অবস্থায়, প্রিয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী, আমরা আপনার কাছে এই আহ্বান জানাতে চাই যে বাংলাদশের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করা হোক। বাংলাদেশের পরিস্থিতি দিন দিন উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে।”



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top