বৃহঃস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১


বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা স্থিতিশীল সম্পর্ক চাই : জয়শঙ্কর


প্রকাশিত:
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৪২

আপডেট:
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৫৯

ফাইল ছবি

ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে স্থিতিশীল সম্পর্ক চায় বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী দেশ এবং আমরা তাদের সঙ্গে স্থিতিশীল সম্পর্ক রাখতে চাই।

একইসঙ্গে বাংলাদেশে যা ঘটেছে তা দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এছাড়া প্রতিবেশী দেশগুলো একে-অপরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এস জয়শঙ্কর এসব কথা বলেছেন বলে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে হওয়া রাজনৈতিক পরিবর্তন সেই দেশের “অভ্যন্তরীণ বিষয়” কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে যে স্থিতিশীল সম্পর্ক ছিল তা অব্যাহত রাখতে ভারত আগ্রহী বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মঙ্গলবার বিকেলে এনডিটিভিকে জানিয়েছেন।

তিনি বহুলপ্রচলিত সেই প্রবাদবাক্যের ওপরই জোর দিয়ে বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলো ‘একে অপরের ওপর নির্ভরশীল’।

এনডিটিভি বলছে, বিস্তৃত এই সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার চলমান যুদ্ধ এবং সেই সংঘাতে দিল্লির সম্ভাব্য শান্তিরক্ষাকারী ভূমিকা, সেইসাথে ভারতে মুসলিমদের দুর্দশা নিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সমালোচনামূলক মন্তব্য, গাজা যুদ্ধ এবং তৃতীয় মেয়াদে প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির বিদেশ সফরের বিষয়ে কথা বলেন এস জয়শঙ্কর।

বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারতের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘(বাংলাদেশে) যা ঘটছে তা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী দেশ এবং আমাদের পক্ষ থেকে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে স্থিতিশীল সম্পর্ক রাখতে চাই। আমাদের ভালো বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে আমাদের জনগণের মধ্যেও সম্পর্ক ভালো আমি সম্পর্কটা এভাবেই রাখতে চাই।’

ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গত আগস্ট মাসের শুরুতে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে চলে যান। তার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে।

অন্যদিকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর একইদিন বিকেলে শেখ হাসিনাকে বহনকারী সামরিক বিমান দিল্লির কাছে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের হিন্ডন বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। সেখানে ছিলেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। তিনি সেসময় হাসিনার কথাও বলেন।

রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে হাসিনা ভারত থেকে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে যাবেন বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু ব্রিটিশ হোম অফিস সূত্র এনডিটিভিকে বলেছে, তাদের যে অভিবাসন আইন রয়েছে; সেখানে কোনো ব্যক্তির যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ করে এসে রাজনৈতিক বা সাধারণ আশ্রয় নেওয়ার বিধান নেই।

এর বদলে শেখ হাসিনাকে এখন ভারতেই আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আর এরপর থেকে হাসিনা আপাতত চল্লিশ দিনেরও বেশি সময় ধরে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার হেফাজতে রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

গত মাসে এস জয়শঙ্কর ভারতীয় পার্লামেন্টকে বলেছিলেন, শেখ হাসিনা ‘খুব স্বল্প নোটিশে’ দিল্লির উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়ে পালানোর অনুমতি চেয়েছিল। পার্লামেন্টে সর্বদলীয় ব্রিফিংয়ে তিনি বলেছিলেন, নিজের পরবর্তী পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য শেখ হাসিনাকে সময় দিতে চায় ভারত সরকার।

যার মধ্যে রাজনীতি থেকে অবসরের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

গত সপ্তাহে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, তার দেশও ভারতের সাথে আগের মতোই ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়, কিন্তু সেই সম্পর্ক হতে হবে “ন্যায্যতা এবং সমতার” ভিত্তিতে। এছাড়া সরকার প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছ থেকে অভিনন্দন ফোনকল পেয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।

এছাড়া হাসিনার ভারতে পলায়নের পর নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনূস সাবেক এই সরকারপ্রধানের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ তাকে (হাসিনাকে) ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত ভারত যদি তাকে রাখতেই চায়, তবে এক্ষেত্রে শর্ত থাকবে- তাকে চুপ থাকতে হবে।’

এই মন্তব্যের মাধ্যমে ড. ইউনূস স্পষ্টতই গত ১৩ আগস্ট শেখ হাসিনার বক্তব্যের কথাই উল্লেখ করেছেন। ওই সময় শেখ হাসিনা ‘ন্যায়বিচার’ দাবি করেছিলেন এবং বলেছিলেন, সাম্প্রতিক ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’, হত্যা ও ভাঙচুরের সাথে জড়িতদের অবশ্যই তদন্ত, চিহ্নিত এবং শাস্তি দিতে হবে।

হাসিনার এই বক্তব্য বাংলাদেশে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল এবং এরপর থেকে তিনি (হাসিনা) আর কোনো প্রকাশ্য বক্তব্য বা বিবৃতি দেননি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top