অভিযোগ ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের
ফিলিস্তিনিদের বিতাড়নে পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল
প্রকাশিত:
২৪ মার্চ ২০২৫ ১১:০০
আপডেট:
২৬ মার্চ ২০২৫ ০৩:৪৬

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড থেকে ফিলিস্তিনিদের বিতাড়নে পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল। এমনই অভিযোগ করেছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
এছাড়া গাজায় সমস্ত মৌলিক পরিষেবা বন্ধ করে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কনভেনশন লঙ্ঘন করছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। রোববার (২৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস রোববার ইসরায়েলকে গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করার জন্য “যুদ্ধের অস্ত্র” হিসেবে পানিকে ব্যবহার করার অভিযোগ করেছেন।
বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট আব্বাস বলেন, “দখলদার (ইসরায়েল) আমাদের জনগণের দুর্ভোগ, বাস্তুচ্যুতি এবং প্রকৃতপক্ষে ধীরে ধীরে মৃত্যু আরও বৃদ্ধির জন্য আরেকটি অস্ত্র ব্যবহার করেছে। সমস্ত মৌলিক পরিষেবা বন্ধ করে এই কাজ করছে তারা। বিশেষ করে পানি বন্ধ করে এবং মানবিক সাহায্যের প্রবেশ বন্ধ করে ইসরায়েল এই কাজ করছে যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কনভেনশন এবং আন্তর্জাতিক রেজোলিউশনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”
ফিলিস্তিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, গাজার ক্রমবর্ধমান পানি সংকটের ন্যায্য সমাধান খুঁজে বের করার জন্য “বাস্তবসম্মত এবং মৌলিক পদক্ষেপ” নেওয়ার জন্য আব্বাস আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “বিশ্বকে বুঝতে হবে, গাজার ফিলিস্তিনি শিশুদের নিরাপত্তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কোনও কিছু নেই। এসব শিশুরা এক লিটার পানি পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে, দূষিত পানি পান করে, খাদ্য ও ওষুধ থেকে বঞ্চিত হয়, পানিশূন্যতা ও তৃষ্ণায় মারা যায় এবং বিশ্বের অন্যান্য শিশুদের মতো নিরাপদে বেঁচে থাকার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।”
ফিলিস্তিনি এই প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ইসরায়েল পানিকে ব্যবহার করছে এবং এটি “ফিলিস্তিনিদের জীবন নিয়ন্ত্রণ, তাদের ভূমি থেকে উৎখাত এবং অবৈধ বসতি সম্প্রসারণের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন এবং দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে ক্ষুণ্ন করার জন্য ভূপৃষ্ঠ এবং ভূগর্ভস্থ পানি সমস্ত সম্পদ লুণ্ঠন ও নিয়ন্ত্রণের দশকব্যাপী দীর্ঘ নিয়মতান্ত্রিক নীতির একটি সম্প্রসারণ।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় আগ্রাসন শুরু করেছেল ইসরায়েল। নিরলস এই আগ্রাসনে গাজা উপত্যকায় মোট নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আকস্মিক এই হামলায় গত কয়েকদিনে ৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত, ১০০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন এবং জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি ভেঙে পড়েছে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: