বৃহঃস্পতিবার, ১৭ই এপ্রিল ২০২৫, ৪ঠা বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


বলছেন জাতিসংঘের মহাসচিব

গাজা এক মৃত্যুপুরী, অন্তহীন মৃত্যুর চক্রে বেসামরিক নাগরিকরা


প্রকাশিত:
৯ এপ্রিল ২০২৫ ১০:৪৭

আপডেট:
১৭ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:৩০

ছবি সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা প্রায় ১৮ মাস ধরে চালানো এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি। হামলার পাশাপাশি ইসরায়েল গাজাতে সর্বাত্মক অবরোধও জারি রেখেছে।

এমন অবস্থায় ফিলিস্তিনের এই উপত্যকাকে মৃত্যুপুরী বলে আখ্যায়িত করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এছাড়া গাজার বেসামরিক নাগরিকরা অন্তহীন মৃত্যুর চক্রে রয়েছে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মঙ্গলবার গাজা উপত্যকায় মানবিক বিপর্যয় সম্পর্কে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন এবং গাজায় মানবিক সাহায্যের সরবরাহের ওপর ইসরায়েলি অবরোধের নিন্দা জানিয়েছেন।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে গুতেরেস বলেন, “এক মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় এক ফোঁটাও সাহায্য আসেনি। খাবার নেই। জ্বালানি নেই। ওষুধ নেই। বাণিজ্যিক সরবরাহ নেই। সাহায্য শেষ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে, ভয়াবহতার দ্বার আবার খুলে গেছে। গাজা এক মৃত্যুপুরী এবং সেখানকার বেসামরিক নাগরিকরা অন্তহীন মৃত্যুর চক্রে রয়েছেন।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, সংঘাতে মানবিক বিরতির ফলে গুরুত্বপূর্ণ ত্রাণ প্রচেষ্টা পরিচালনার পাশাপাশি বন্দিদের মুক্তি সম্ভব হয়েছিল। তিনি বলেন, “সর্বোপরি, আমরা জানি যুদ্ধবিরতি ভালো ফল বয়ে আনে।”

গুতেরেস এদিন জেনেভা কনভেনশনের উদ্ধৃতিও দিয়েছেন। মূলত এই কনভেনশন সংঘাতের সময় যেকোনও দখলদার শক্তিকে খাদ্য, চিকিৎসা সেবা এবং জনস্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করতে বাধ্য করে।

গুতেরেস বলেন, “দখলদার শক্তি হিসেবে, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ইসরায়েলের দ্ব্যর্থহীন বাধ্যবাধকতা রয়েছে, যার মধ্যে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনও রয়েছে।”

জাতিসংঘের এই মহাসচিব আরও বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ইসরায়েলকে ত্রাণ পরিকল্পনায় সম্মত হতে হবে এবং গাজার বেসামরিক জনগণের কাছে সাহায্য পৌঁছানোর অনুমতি দিতে হবে।

তবে তিনি বলেন, “আজ এর কিছুই হচ্ছে না। কোনও মানবিক সরবরাহ গাজায় প্রবেশ করতে পারছে না। এদিকে ক্রসিং পয়েন্টে, খাদ্য, ওষুধ এবং আশ্রয় সরঞ্জাম ও পণ্যের সরবরাহ কেবলই স্তূপীকৃত হচ্ছে এবং গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম আটকে আছে।”

গুতেরেস গাজার মানবিক কর্মীদের “বীর” হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। মূলত এসব কর্মীরা সহায়তা প্রদানের জন্য তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাজায় কাজ করে চলেছেন।

দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের সঙ্গে মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রায় ১৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৩ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top