চীনের ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় যা বলছেন ট্রাম্প
প্রকাশিত:
৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:০৩
আপডেট:
১৮ এপ্রিল ২০২৫ ০৪:৪৪

চীনা পণ্যের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১০৮ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রেক্ষিতে এবার যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের উপর ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে দেশটি। আর এতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসার জন্য এটিই দারুন সময়।’
বুধবার (৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে বিবিসি।
চীন মার্কিন আমদানির উপর ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার ঘোষণা দেওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘আপনার কোম্পানিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরে এটি একটি দুর্দান্ত সময়, যা অ্যাপলসহ রেকর্ড সংখ্যক প্রতিষ্ঠান করছে।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘শূন্য শুল্ক, এবং প্রায় তাৎক্ষণিকভাবে বৈদ্যুতিক সংযোগ এবং অনুমোদন। পরিবেশগত বিলম্ব নেই। অপেক্ষা করো না, এখনই করো!’
এর আগে, চীনের পণ্যের উপর ১০৮ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যা কার্যকর হয়েছে বুধবার (৯ এপ্রিল)। এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের উপর শুল্কহার বাড়িয়েছে চীন। এবার র্কিন পণ্যে ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে দেশটি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) থেকে এই শুল্ক কার্যকর হবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে বিবিসি জানিয়েছে, চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা সমস্ত পণ্যের উপর ৮৪ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করেছে।
ট্রাম্পের নতুন শুল্ক কার্যকরের পর ইউরোপীয় শেয়ারবাজারগুলো নিম্নমুখী ছিল, এখন মার্কিন আমদানিতে চীনের ৮৪ শতাংশ শুল্ক ঘোষণার পরে তা আরও হ্রাস পেয়েছে। ইউকে তালিকাভুক্ত বৃহত্তম সংস্থাগুলোর এফটিএসই ১০০ সূচক আজ পর্যন্ত ৩ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। এছাড়া জার্মান, ফ্রান্সের সুচকও নেমে গেছে।
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল ‘মুক্তির দিন’ হিসাবে আখ্যা দিয়ে চীনের পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব বাণিজ্যিক অংশীদারের ওপর আরোপিত ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্কের অংশ হিসাবেই চীনের ওপর-ও তখন ওই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু এর আগে গত মার্চেও চীনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল।
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ৩৪ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে চীন। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। চীনের এমন শুল্ক আরোপে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ট্রাম্প।
চীনের এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন। তিনি ঘোষণা করেন, যদি চীন ৮ এপ্রিলের মধ্যে মার্কিন পণ্যের ওপর থেকে ৩৪ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার না করে, তবে ৯ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর আরও অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে।
অবশেষে, চীনের কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে ট্রাম্প ৯ এপ্রিল থেকে ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পোস্টে এই পদক্ষেপের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন এবং চীনকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় শোষক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন অনেক লাভবান হচ্ছে, যা আগে চীনসহ অন্যান্য দেশগুলো থেকে শোষণ করা হতো। তেল, সুদের হার ও খাদ্যের দাম কমার পাশাপাশি কোনো ধরনের মূল্যস্ফীতি না থাকার বিষয়টিও ট্রাম্প উল্লেখ করেছেন।
এবার চীনের পাল্টা শুল্ক আরোপ বাণিজ্যযুদ্ধকে আরও গভীর করে তুলতে পারে। এই লড়াই দুটি দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী অর্থনৈতিক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, কারণ দুটি দেশই একে অপরের প্রধান বাণিজ্যিক সঙ্গী।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: