শনিবার, ১৫ই মার্চ ২০২৫, ১লা চৈত্র ১৪৩১


শত শত কোটি ডলারের মার্কিন অস্ত্র যেভাবে তালেবানের হাতে


প্রকাশিত:
২২ আগস্ট ২০২১ ০১:৫৯

আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ১৭:৫৯

ছবি: ভয়েস অব আমেরিকা

আফগান রাজধানী কাবুল এখন তালেবানের দখলে। তবে শুধু রাজনৈতিক ক্ষমতা নয়, রাতারাতি বিপুল সামরিক শক্তিরও অধিকারী হয়েছে গোষ্ঠীটি।

আফগান বাহিনীকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক সব সমরাস্ত্র এখন তাদের কব্জায়। এখন তাদের পরিত্যক্ত ১১ সামরিক ঘাঁটিসহ ন্যাটো সেনাদের ফেলে যাওয়া সব অস্ত্রই তালেবানের নিয়ন্ত্রণে।

এসব যুদ্ধ সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে সামরিক হেলিকপ্টার-বিমানবহর, অত্যাধুনিক সব বন্দুক, শত শত সামরিক যান, ড্রোন ও নাইটভিশন চশমা প্রভৃতি।

আফগানিস্তানে ২০ বছর ধরে চলা আগ্রাসনের অবসান ঘটিয়ে আফগানিস্তান থেকে সব বিদেশী সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার পরপরই দেশ দখলের প্রস্তুতি শুরু করে তালেবান। নিয়ন্ত্রণ নিতে থাকে একের পর এক শহর। এর মাত্র কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের বেশিরভাগ এলাকা দখল করে নেয় এর যোদ্ধারা।

শত-সহস্র যুদ্ধাস্ত্র ফেলে পালিয়ে যায় আফগান বাহিনী। ১১টি সামরিক ঘাঁটিসহ শত শত কোটি মার্কিন ডলারের সেসব সামরিক সব যন্ত্রপাতি এখন তালেবানের হাতে।

যুক্তরাষ্ট্র বলছে, গত ২০ বছরে তারা আফগান বাহিনীর পেছনে খরচ করেছে ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু তাদের এ প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রপাতি তালেবানের হামলার ঠেকাতে পারেনি বরং মার্কিন সেনাদের কাছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য তালেবানে যোগ দিয়েছে।

মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেন, মার্কিন সামরিক বাহিনী যেসব অস্ত্র আফগান বাহিনীকে দিয়েছিল তা এখন তালেবানের হাতে চলে গেছে। আফগানিস্তান থেকে যখন মার্কিনিদের সরিয়ে আনা হচ্ছিল তখনই তারা এসবের দখল নেয়। এতেই পরিস্কার যে সেখানে মার্কিন সেনা উপস্থিতি কতোটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে বিশাল অস্ত্রভাণ্ডার আর আধুনিক যুদ্ধযান নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বিশেষ প্রশিক্ষণ ছাড়া তালেবান এগুলো পরিচালনা করতে পারবে না বলেই মনে করে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।

দীর্ঘদিন ধরেই কালাশনিকভ ও একে-৪৭ এর মতো অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে এসেছে তালেবান যোদ্ধারা। এখন তাদের হাতে শোভা পাচ্ছে এম-ফোর কার্বাইন এবং এম-১৬ এর মতো অত্যাধুনিক সব সমরাস্ত্র।

শুধু যুদ্ধযান বা অস্ত্রই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের এ টুয়েন্টি নাইন সুপার টুকানো যুদ্ধবিমান, ব্ল্যাকহক, স্কাউট অ্যাটাক, স্ক্যানঈগল মিলিটারি ড্রোন’সহ দুই শতাধিক হেলিকপ্টার পেয়েছে তালেবান। এমনকি ভারতের এম-৩৫ হেলিকপ্টারও দখলে নিয়েছে তারা।

রয়টার্স জানিয়েছে, মাস খানেক আগেও সাত সাতটি ‘ব্রান্ড নিউ’ মার্কিন সামরিক হেলিকপ্টার কাবুলে এসে পৌছেছিল। তখন এসব হেলিকপ্টারের দৃষ্টিনন্দন কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছিল আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সেগুলো এখন তালেবানের অস্ত্র ভাণ্ডারে।

মার্কিন সেনাদের ব্যবহৃত আধুনিক সামরিক যান হামভিতে এখন উড়ছে তালেবানের পতাকা। এমন দুই হাজারের বেশি সাজোয়া যান নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে গোষ্ঠীটি। যেগুলোর প্রত্যেকটির মূল্য প্রায় ৩ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় আড়াই কোটি টাকারও বেশি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, তালেবানের হাতে এসব মার্কিন অস্ত্র থাকার অর্থ হচ্ছে মনস্তাত্ত্বিকভাবে তারাই বিজয়ী। তবে আরেক রিপোর্ট মতে, আফগানিস্তানকে দেওয়া বিমান ও হেলিকপ্টারগুলোর ৪৬টি এখন উজবেকিস্তানে রয়েছে। এসব এয়ারক্র্যাফট ব্যবহার করে দেশটির প্রায় পাঁচশো সেনা উজবেকিস্তানে পালিয়ে যান।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top