রবিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৫, ৭ই বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


ভয়ঙ্কর সিজোফ্রেনিয়া কী

কীভাবে বুঝবেন আপনার সিজোফ্রেনিয়া আছে কিনা


প্রকাশিত:
২৫ জানুয়ারী ২০২৩ ২১:৫৬

আপডেট:
২৫ জানুয়ারী ২০২৩ ২২:০২

 ফাইল ছবি

সিজোফ্রেনিয়া অচেনা কোনো রোগ নয়। হয়তো আমাদের আশেপাশে কিংবা আপনজনদের মধ্যেই আছে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি। হয়তো আমাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ এই রোগে আক্রান্ত। যেহেতু শরীরের কোনো অসুখ নয়, তাই চট করে ধরা মুশকিল। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির ছোট ছোট আচরণ কিংবা ব্যবহার ধীরে বদলে যেতে থাকে। সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ ও কারণ জানা থাকলে প্রতিকার সহজ হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

সিজোফ্রেনিয়া কাকে বলে?

মানসিক রোগ অনেক ধরনের হতে পারে। তার মধ্যে একটি হলো সিজোফ্রেনিয়া। এতে আক্রান্ত হলে রোগীর বাস্তব চিন্তা কমে গিয়ে বিভ্রম বেশি হয়। সে এমন কিছু শুনতে পায় বা দেখতে পায় যা আদৌ ঘটেনি। এটি মূলত সাইকোটিক ডিজঅর্ডার। এ ধরনের অসুখে আক্রান্ত রোগী কখনো মানতে চায় না যে সে অসুস্থ। সে নিজেকে সম্পূর্ণ সুস্থ দাবি করবে।

সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি কী করে?

সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি ধীরে ধীরে একা হতে থাকে। তাদের আচরণ আমূল বদলে যায়। নিজের চিন্তা, মন, ইচ্ছা কিংবা অনুভূতি কোনোকিছুই তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। কোনো কারণ ছাড়াই সে হাসতে কিংবা কাঁদতে পারে। কল্পনায় সে এক ভিন্ন জগৎ তৈরি করে নেয়। সেই কাল্পনিক জগৎ তার জীবনে প্রভাব ফেলে। তবে সে কখনোই নিজের অসুস্থতার কথা বুঝতে চাইবে না। সে মনে করবে যা ঘটছে তাই স্বাভাবিক।

ডিল্যুশন বা বিভ্রান্তি

সিজোফ্রেনিয়ার রোগী এমন কিছু বিশ্বাস করে যার বাস্তব ভিত্তি নেই। এ ধরনের রোগী ভ্রান্ত ধারণা নিয়ে বাঁচে। যে জিনিসের অস্তিত্ব নেই, মস্তিষ্ক সেটি নিজ থেকে তৈরি করে ফেলে। অশরীরী কারও সঙ্গে কথা বলা বা দেখতে পাওয়া, কেউ সব সময় তার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে এমন অনেক ভ্রান্ত ধারণা তাদের মধ্যে থাকে।

পেশী অসাড় হয়ে যেতে পারে

সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত রোগী যদি দীর্ঘ সময় এক জায়গায় বসে থাকে তবে ধীরে ধীরে তার পেশী অসাড় হয়ে যেতে পারে। যে কারণে সেখান থেকে নড়ার জন্য সে শারীরিক শক্তি হারিয়ে ফেলে। এ ধরনের লক্ষণ দেখলেও তাই সতর্ক হতে হবে। এছাড়াও কাজে মনোযোগ দিতে না পারা, সহজে সিদ্ধান্ত নিতে না পারা, ভুলে যাওয়াও হতে পারে সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ।

আরও কিছু লক্ষণ

সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর আবেগ অনেকটাই কমে যেতে পারে। যেমন কারও মৃত্যুতেও সে দুঃখ পায় না। পরিবার ও সমাজ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে চায়। নিজের যত্ন নেয় না। কথা বলতে চায় না। জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে ভাবে না। শক্তি কমে আসে।

সিজোফ্রেনিয়া হওয়ার কারণ

সিজোফ্রেনিয়া কেন হয় তার কারণ নির্দিষ্ট করে বলতে পারেন না কোনো বিশেষজ্ঞেই। এটি অনেক কারণেই হতে পারে। তবে কিছু কারণ রয়েছে যেগুলো এই রোগের জন্য দায়ী হতে পারে। যেমন মা কিংবা বাবার এই রোগ থাকলে সন্তানের ক্ষেত্রে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে প্রায় বিশ শতাংশ। আর দুইজনেরই থাকলে সন্তানের ক্ষেত্রে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়। আবার আমাদের ব্রেইনে কিছু কেমিক্যাল থাকে যেগুলো এই রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে নিয়মিত নয় ফলে তাদের আচরণে প্রভাব পড়ে। অন্যদিকে পরিবেশগত কারণেও এটি ধীরে ধীরে তৈরি হতে পারে। শিশু যদি একটি অসুস্থ পারিবারিক পরিবেশে বড় হয় তবে সেক্ষেত্রেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আপনার পরিচিত কেউ অথবা নিজের ভেতরেও যদি এ ধরনের লক্ষণ দেখতে পান তবে সতর্ক হোন। মনে রাখবেন, শরীরের মতো মনেও অসুখ হতে পারে। মনের অসুখ দেখা যায় না বলে একে অবহেলা করবেন না। দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিলে এবং সেই অনুযায়ী চললে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top