মাস্ক না পরলে জেল-জরিমানা
প্রকাশিত:
২২ জুলাই ২০২০ ১৭:৫০
আপডেট:
২২ জুলাই ২০২০ ১৭:৫৫

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে অফিস, হাটবাজার, দোকানপাট, গণপরিবহন, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয়সহ ১১টি ক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করা হয়। এতে কারা কারা মাস্ক পরার বিষয়টি নিশ্চিত করবে, সেটিও বলে দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া আগের নির্দেশনা অনুযায়ী বাইরে চলাচলের ক্ষেত্রে সব সময় মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে ছয় মাসের করাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।
গত ৩০ মে শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এ নির্দেশনা জারি করেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বাইরে চলাচলের ক্ষেত্রে সব সময় মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে, অন্যথায় নির্দেশ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৬১ নং আইন)-এর ধারা ২৪(১), ২ ও ধারা ২৫(১), (ক, খ) এবং ধারা ২৫(২) অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আরো বলা হয়েছে, চলাচল নিষেধাজ্ঞাকালীন জনসাধারণ এবং সব কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক জারীকৃত নির্দেশমালা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। এ ছাড়া রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত অতীব জরুরি ব্যতীত কোনোভাবেই বাইরে যাওয়া যাবে না। তবে সর্বাবস্থায় বাইরে চলাচলের সময় মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
এদিকে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮-এর ধারা ২৪(১)-এ বলা আছে, যদি কোনো ব্যক্তি সংক্রামক জীবাণুর বিস্তার ঘটান বা বিস্তার ঘটিতে সহায়তা করেন বা জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও অপর কোনো ব্যক্তি সংক্রমিত ব্যক্তি বা স্থাপনার সংস্পর্শে আসিবার সময় সংক্রমণের ঝুঁকির বিষয়টি তাহার কাছে গোপন করেন, তাহলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হবে একটি অপরাধ।
২৪ (২) বলা আছে, যদি কোনো ব্যক্তি উপধারা (১)-এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহলে তিনি অনূর্ধ্ব ৬ (ছয়) মাস কারাদণ্ডে, বা অনূর্ধ্ব ১ (এক) লাখ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
একই আইনের ২৫(১)(ক, খ) এ বলা আছে, মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তার ওপর অর্পিত কোনো দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বাধা প্রদান বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন এবং সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের উদ্দেশ্যে মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কোনো নির্দেশ পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন, তাহলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।
২৫(২) তে বলা আছে, যদি কোনো ব্যক্তি উপধারা (১)-এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহলে তিনি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) মাস কারাদণ্ডে, বা অনূর্ধ্ব ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ পরীক্ষার সংখ্যা কমে যাওয়ার পরেও আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনায় দেশে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৭০৯ জন। আর মোট শনাক্ত হয়েছেন দুই লাখ ১০ হাজার ৫১০ জন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মহামারি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করার কার্যকর উপায় হিসেবে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং মাস্ক পরিধান করার পরামর্শ দিয়েছেন।
সম্পর্কিত বিষয়:
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ছয় মাসের করাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: