শুক্রবার, ১৪ই মার্চ ২০২৫, ৩০শে ফাল্গুন ১৪৩১


আমরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করছি শান্তিরক্ষার জন্য


প্রকাশিত:
২৩ ডিসেম্বর ২০২২ ০১:৫৬

আপডেট:
১৪ মার্চ ২০২৫ ১২:৫৩

ছবি সংগৃহিত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা শান্তিতে বিশ্বাসী। যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জন্ম। আমরা জানি যুদ্ধের কী ভয়াবহ পরিণতি। আমরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করছি আগ্রাসনের জন্য নয়, শান্তিরক্ষার জন্য।

বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর ‘মিডশিপম্যান ২০২০ আলফা’ ও ‘ডাইরেক্ট এন্ট্রি ২০২২ ব্রাভো’ ব্যাচের শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূল প্রতিপাদ্য ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়’- বিষয়টি উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা স্বাধীন দেশে দক্ষ, শক্তিশালী ও আধুনিক নৌবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন। তার পরামর্শে নারায়ণগঞ্জ ড্রাইডক অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ১৯৭২ সালে প্রথম যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণ করে। তিনি যুগোস্লাভিয়া ও ভারত থেকে ৫টি আধুনিক রণতরী সংগ্রহ করেন। ১৯৭৪ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে নেভাল অ্যাসাইন প্রদান করেন। নৌবাহিনীর বৃহত্তম প্রশিক্ষণ ঘাঁটি বানৌজা ঈশাখাঁসহ ৩টি ঘাঁটি এবং ৩টি জাহাজ কমিশনিং করেন। এই দিনেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বানৌজা সুরমায় প্রথম নৌবাহিনীর মহড়া পরিদর্শন করেন। তার প্রচেষ্টায় যুক্তরাজ্য থেকে যুদ্ধজাহাজ সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

তিনি বলেন, আমরা ১৯৯৬ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই নৌবাহিনীকে যুগোপযোগী করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেই। বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন, যুদ্ধজাহাজ সংগ্রহ এবং বিদ্যমান জাহাজগুলোর অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধি করি। খুলনা শিপইয়ার্ডসহ অন্যান্য শিপইয়ার্ডগুলো নৌবাহিনীকে হস্তান্তর করি। শুধু নিজেদের জন্য জাহাজ নির্মাণের বাইরে তারা জাহাজ রপ্তানি করে বর্তমানে স্বাবলম্বী প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর ১৯৭৪ সালের প্রতিরক্ষানীতির আলোকে ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন শুরু করি। গত ১৪ বছরে নৌবাহিনীতে ৪টি ফ্রিগেট, ৬টি করভেট, ৪টি লার্জ পেট্রোল ক্রাফট, ৫টি পেট্রোল ক্রাফট এবং ২টি ট্রেনিং শিপসহ মোট ৩১টি যুদ্ধজাহাজ সংযোজন করি। দক্ষ কমান্ডো ও উদ্ধারকারী দল হিসেবে ‘স্পেশাল ওয়ারফেয়ার ডাইভিং অ্যান্ড স্যালভেজ কমান্ড’ এবং নৌবাহিনীর এভিয়েশন উইং প্রতিষ্ঠা করি। ২০১৭ সালে ২টি সাবমেরিন সংযোজনের মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ ত্রি-মাত্রিক নৌবাহিনী প্রতিষ্ঠা করি।

তিনি বলেন, চলমান আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে আরও ২টি নতুন মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট সংযোজন করেছি। তাছাড়া দুটি ইউটিলিটি হেলিকপ্টার শিগগিরই সংযোজন করা হবে। আমাদের নৌবাহিনীর জন্য খুলনা শিপইয়ার্ডে ৩টি ল্যান্ডিং ক্রাফ্ট ট্যাঙ্ক নির্মাণ কাজ চলছে। যুদ্ধ জাহাজ, অক্সিলারি জাহাজ, অত্যাধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি নৌবাহিনীতে প্রতিনিয়ত সংযোজিত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের নৌবাহিনী চট্টগ্রাম, মোংলা সমুদ্রবন্দরসহ সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় বাণিজ্যিক জাহাজ, ফিশিং ট্রলার, বোট এবং ব্লু-ইকোনমি সংশ্লিষ্ট মেরিটাইম প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা দিচ্ছে। আমরা মোংলা কমান্ডার ফ্লোটিলা ওয়েস্ট (কমফ্লোট ওয়েস্টে)-এর অবকাঠামো উন্নয়ন করে দিচ্ছি। নৌবাহিনীতেও ডিজিটাল প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটিয়েছি।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেলর সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কক্সবাজারের পেকুয়ায় স্থায়ী সাবমেরিন ঘাঁটি নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এটি শিগগিরই উদ্বোধন করা হবে। এখান থেকে আমাদের সমুদ্র এলাকা ও নির্মাণাধীন মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর সংলগ্ন ইকোনোমিক জোনের সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হবে। তাছাড়া দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শের-ই-বাংলা ঘাঁটির নির্মাণ কার্যক্রমও অনেক দূর এগিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ এক সোনালি সম্ভাবনার মহাসড়কে এসে দাঁড়িয়েছে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের যুগ পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এ স্মার্ট বাংলাদেশ হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ; ক্ষুধা-দারিদ্র্য-নিরক্ষরতামুক্ত অসাম্প্রদায়িক উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।


সম্পর্কিত বিষয়:

সশস্ত্র বাহিনী

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top