বুধবার, ২রা এপ্রিল ২০২৫, ১৮ই চৈত্র ১৪৩১

Shomoy News

Sopno


স্ত্রী-সন্তানসহ সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা


প্রকাশিত:
৯ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:৪০

আপডেট:
১২ অক্টোবর ২০২৪ ১১:২৯

ছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতার অপব্যবহার, নিয়োগ বাণিজ্য, ঘুষ, অর্থপাচার ও দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খান, ছেলে শাফি মোদাচ্ছের খান ও মেয়ে শাফিয়া তাসনিম খানের নামে পৃথক মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এছাড়া কামালের এপিএস মনির হোসেনকে মামলার আসামি করা হয়েছে।

বুধবার (৯ অক্টোবর) দুদকের কর্মকর্তারা সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকায় এসব মামলা দায়ের করেন।

আসাদুজ্জামান খানকে চার মামলায় আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রায় শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এ বিষয়ে দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তার পরিবারের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৬০ কোটি ৫৫ লাখ ৯৯ হাজার ১৫৬ টাকা। ৩৬টি ব্যাংক হিসাবের অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে মানিলন্ডারিংয়ের যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তার পরিমাণ ৪০০ কোটি ৭৪ লাখ ৬৮ হাজার ১০৯ টাকা। এর মধ্যে কামালের বিরুদ্ধে ১৬ কোটি ৪১ লাখ ৫৭ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ৮টি ব্যাংক হিসাবে ৫৫ লাখ ৯২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৩৬ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন ও মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ রয়েছে। এই মামলার বাদী দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম।

দ্বিতীয় মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খানের সঙ্গে স্বামীকেও আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ— স্বামীর দুর্নীতির টাকায় সম্পদশালী হয়েছেন তাহমিনা। তাহমিনার ১০টি ব্যাংক হিসাবে ৪৩ কোটি ৭৭ হাজার ৭৪৫ টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া, ১৫ কোটি ৪৬ লাখ ৯৪ হাজার ৫৯১ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলার বাদী দুদক উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন।

তৃতীয় মামলার আসামি কামাল ও তার ছেলে শাফি মোদাচ্ছের খান। তাদের বিরুদ্ধে ১৯ কোটি ৮৯ লাখ ৭৮ হাজার ৫০২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। শাফি তার নামে ব্যাংক হিসাব খুলে সেখানে ৮৪ কোটি ৭৭ লাখ ৫৭ হাজার ৫৭২ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন করেছেন। এ মামলার বাদী সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।

চতুর্থ মামলার আসামির কামাল ও তার মেয়ে শাফিয়া তাসনিম। তাদের বিরুদ্ধে ৮ কোটি ৭৭ লাখ ৬৮ হাজার ৪৮৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। শাফিয়ার ব্যাংক হিসাবে ২৬ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার ৫৪২ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন পাওয়া গেছে। এ মামলার বাদী হয়েছেন সহকারী পরিচালক মো. জিন্নাতুল ইসলাম।

পঞ্চম মামলায় আসামি কামালের এপিএস মনির হোসেন। তার বিরুদ্ধে ১৮ কোটি ৮২ লাখ ৫৬ হাজার ১৪২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ব্যাংক হিসাবে ৩১ কোটি ৩১ লাখ ৭০ হাজার ৮৩৪ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন পেয়েছে দুদক। এই মামলার বাদী সহকারী পরিচালক মো. নাছরুল্লাহ হুসাইন।

আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা তৎসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, অভিযোগসংশ্লিষ্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অবসরপ্রাপ্ত) মো. হারুন-অর-রশিদ বিশ্বাস, যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস, উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (সিআইডি) মোল্যা নজরুল ইসলাম, মন্ত্রণালয়ের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্যা ইব্রাহিম হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগসমূহের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ আগস্ট আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তার পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। ২১ আগস্ট কামালের পরিবার এবং তার সাবেক পিএস হারুন অর রশিদ বিশ্বাস, যুগ্মসচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্লা ইব্রাহিম হোসেন, সহকারী একান্ত সচিব মনির হোসেন এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপুসহ আটজনের ব্যাংক হিসাবের সব লেনদেনের তথ্য তলব করে দুদক।

আসামিদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় কারখানার মেকানিক্যাল হেলপার আশরাফুল ইসলাম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হন আসামি শাফি মোদাচ্ছের খান। গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানী উত্তরার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা জেলা পুলিশ। মামলার অন্যান্য আসামিরা এখনো পলাতক রয়েছেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top