বান্দরবানে জেএসএস পন্থীদের হামলায় সেনা সদস্য হতাহত
প্রকাশিত:
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৪:৪৮
আপডেট:
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৫:১৫

বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনীর ওপর সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হয়েছেন সেনাবাহিনীর এক ওয়ারেন্ট অফিসার। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন অপর এক সেনাসদস্য। এ ঘটনায় তিন সন্ত্রাসীও নিহত হয়েছে বলে জানায় আইএসপিআর। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর- আইএসপিআর- এর সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খানের বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এবং স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার ২ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে বান্দরবানের রুমা উপজেলার রুমা-রাঙামাটি সীমান্তবর্তী দুর্গম বথিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সেনা কর্মকর্তার নাম হাবিবুর রহমান। তিনি রুমা জোন (২৮) বীর রাইক্ষিয়াংলেক আর্মি ক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার ছিলেন। গুলিবিদ্ধ আহত সেনাসদস্যের নাম মো. ফিরোজ।
আইএসপিআর জানায়, জেএসএসপন্থী সন্ত্রাসীদের একটি দল রুমা উপজেলার বথিপাড়া এলাকায় চাঁদাবাজির উদ্দেশ্যে আসবে- এমন তথ্যের ভিত্তিতে রাইং খিয়াং লেক আর্মি ক্যাম্প থেকে সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবের নেতৃত্বে একটি নিরাপত্তা টহল দল সে এলাকায় যায়। বুধবার ২ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে টহল দলটি বথিপাড়া এলাকায় পৌঁছালে নিকটস্থ একটি জুম ঘর থেকে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত টহল দলের ওপর গুলি বর্ষণ শুরু করে। এ সময় সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন টহল কমান্ডার সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান। আর ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হন সেনা সদস্য ফিরোজ। নিহত এবং আহত সেনা সদস্যদেরকে বৃহস্পতিবার সকালে রুমা থেকে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেয়া হয়।
অভিযানে সেনা টহল দল কর্তৃক সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত একটি এসএমজি, ২৪৯ রাউন্ড তাজা গুলি, তিনটি এমোনিশন ম্যাগাজিন, তিনটি গাদা বন্দুক, গাদা বন্দুকের পাঁচ রাউন্ড গুলি, চার জোড়া ইউনিফর্ম এবং চাঁদাবাজিদের নগদ ৫২ হাজার ৯০০ টাকা জব্দ করা হয়। বর্তমানে সেনা টহল দল ওই এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি জারি রেখেছে এবং স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।
এদিকে ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পটুয়াখালীর নিজ বাড়িতে । নিহত হাবিবুর রহমানের বড় ছেলে হাসিবুর রহমান বলেন, আব্বার সঙ্গে সব সময় কথা বলতে পারতাম না। তিনি যখন ফোন করতেন তখনই কথা বলতে পারতাম। মোবাইলে নেটওয়ার্ক সমস্যা ছিল। গত রাতে আব্বার সঙ্গে কথা হয়। আব্বা বলেন- কোনো ভুল করলে ক্ষমা করে দিও, একটা অভিযানে যাচ্ছি। এরপর আজ সকালে খবর এলো বাবা আর নেই।
নিহত হাবিবুর রহমানের বাবা-মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। এর মধ্যে ছোট ছেলেও সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে কর্মরত আছেন। বিকেল ৩টায় প্রথম জানাজা শেষ করে সেনাবাহীনীর হেলিকপ্টার যোগে তার মরদেহ পটুয়াখালী নিয়ে আসা হবে। পরে বিকেল ৫টায় তার বাড়ির সামনের মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বাড়ির দক্ষিণ পূর্ব কোণে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
এসএন/জুআসা/২০২২
সম্পর্কিত বিষয়:
বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনীর ওপর সন্ত্রাসীদের হামলা নিহত সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান আইএসপিআর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: