বিভিন্ন সময় দেওয়া ঋণের অনিয়ম তদারকিতে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সোমবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, সম্প্রতি ব্যাংক দুটি থেকে বড় অঙ্কের ঋণ জালিয়াতির তথ্য এসেছে। নিয়ম অনুযায়ী যদি কোনো ব্যাংকের বিরুদ্ধে বড় কোনো অনিয়মের অভিযোগ ওঠে তাহলে তা তদারকির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয়। দুটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ ওঠায় আজ (সোমবার) পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেওয়া হলো।
‘দুটি ব্যাংকের আর্থিক কোনো সমস্যা নেই। তাদের তারল্য যথেষ্ট ভালো রয়েছে। তারা নতুন করে ইনভেস্ট করছে। যেসব অভিযোগ উঠেছে তা তদারকির জন্য এই ব্যবস্থা’— বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র।
ইসলামী ব্যাংকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক আবুল কালামকে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে পরিচালক মুতাসিম বিল্লাহকে।
আবুল কালাম বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক এবং মুতাসিম বিল্লাহ পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের পরিচালক ছিলেন।
জানা যায়, পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই দুই কর্মকর্তা ইসলামী ব্যাংক ও ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদের সব সভায় অংশগ্রহণ করবেন। সেখানে কোনো বক্তব্য থাকলে তারা জানাবেন।
সম্প্রতি বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংকের বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। এ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় সাড়ে নয় হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া হয়।
ইসলামী ব্যাংক থেকে সাত হাজার ২৪৬ কোটি টাকা এবং বাকি অর্থ সোশ্যাল ইসলামী ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে তুলে নেওয়া হয়। যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে এসব ঋণ নেওয়া হয় তার মধ্যে বেশ কয়েকটিতে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করা হয়। এমন নামসর্বস্ব দুই প্রতিষ্ঠানের নামে ইসলামী ব্যাংক থেকে বের করে নেওয়া হয় দুই হাজার কোটি টাকা।
দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) এমন অনিয়মের ঘটনা অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।