1351

04/16/2024 ভুয়া লাইক-কমেন্ট ব্যবসায়ীদের বিপদ

ভুয়া লাইক-কমেন্ট ব্যবসায়ীদের বিপদ

তথ্য প্রযুক্তি ডেস্ক

২৮ আগস্ট ২০২০ ২০:১৭

ফেসবুকে ভুয়া লাইক,কমেন্ট ও শেয়ার বাড়ানোর ব্যবসা ফেঁদে বসেছে অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। ফেসবুক এসব ভুয়া লাইক ব্যবসায়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। যেসব ডেভেলপার ভুয়া লাইক বাড়ানোর অফার নিয়ে কাজ করছে,তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করছে সামাজিক যোগাযোগের প্রতিষ্ঠানটি। ফেসবুক প্ল্যাটফর্ম অপব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে একজোড়া মামলা করে কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ডিজিটাল ট্রেন্ডস ও এনগ্যাজেটের প্রতিবেদনে বলা হয়,ফেসবুকের নীতিমালা ভঙ্গকারী দুটি ডেভেলপারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর মাধ্যমে ভুয়া লাইক ব্যবসায়ীদের পরিষ্কার বার্তা দিতে চাইছে প্রতিষ্ঠানটি।

ফেসবুকের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে,ইনস্টাগ্রাম প্ল্যাটফর্মে ভুয়া লাইকের সেবা দিচ্ছিল নাকরুটকা। এটি মূলত রোবট ও স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারের বিশেষ সেবা,যা ইনস্টাগ্রামে ভুয়া লাইক,কমেন্ট ও ভিউ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এ টুল ব্যবহার করে যিনি ইনস্টাগ্রামে ভুয়া লাইক ও কমেন্ট বিক্রি করছিলেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে ফেসবুক।

এর আগেও ফেসবুক তাদের নীতিমালা ভঙ্গকারী ও তথ্যের অপব্যবহার করা ডেভেলপারদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে। এ বছরের শুরুর দিকে ইনস্টাগ্রামে ভুয়া লাইক বিক্রি করা নিউজিল্যান্ডের একটি কোম্পানি ও স্পেনের একজন ডেভেলপারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল ফেসবুক। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে নিউজিল্যান্ডের ওই কোম্পানি ইনস্টাগ্রামে ভুয়া এনগেজমেন্ট সেবার অফার দিত।

ফেসবুক এর আগে ‘কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা’ কেলেঙ্কারিতে পড়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার শিকার হয়। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে ফেসবুক থেকে অনৈতিক উপায়ে তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার ওই কেলেঙ্কারির ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই চাপে পড়েছিল যুক্তরাজ্যভিত্তিক নির্বাচনী পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি।

যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে প্রথম এ বিতর্কের সূচনা হয়। দ্য নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আমেরিকান নাগরিকদের ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব রেখেছিল তথ্য বিশ্লেষণ করার প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। এ ক্ষেত্রে ফেসবুকের কোটি কোটি ব্যবহারকারীর প্রোফাইল থেকে পাওয়া তথ্য ব্যবহার করা হয়েছিল। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার ওই কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৮ কোটি ৭০ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য বেহাত হয়। এ ঘটনায় ফেসবুকের প্রাইভেসি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির পর থেকে ডেভেলপারদের তথ্য সংগ্রহের ব্যাপারে কঠোর হতে শুরু করে ফেসবুক।

নাকরুটকা ছাড়াও ফেসবুক নতুন করে মোবিবার্ন নামের একটি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ফেসবুক থেকে ক্ষতিকর সফটওয়্যার বা প্রোগ্রামের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করছিল।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা ফেসবুককে আগে থেকেই ফেসবুককে সতর্ক করে বলেছিল, মোবিবার্ন নামের ডেভেলপার ডিভাইস থেকে তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি ফেসবুকের স্পর্শকাতর তথ্যও নিচ্ছে। কেউ যদি মোবিবার্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে অ্যাপ ইনস্টল করেন,তখন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেয় ওই ডেভেলপার। ফেসবুক বলেছে,ওই ডেভেলপারের বিরুদ্ধে তদন্তের সময় তারা পূর্ণ সহযোগিতা করেনি। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এর বাইরে ফেসবুকের ট্রেডমার্ক নকল করে নামের নিবন্ধন করতে দেওয়া ডোমেইন রেজিস্টার সেবাদাতা একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও মামলা করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

সোশ্যাল মিডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,ভুয়া লাইক ব্যবসায়ীদের ধরার পাশাপাশি ফেসবুক ভুয়া অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করতে নতুন একটি পদ্ধতিও তৈরি করেছে। এতে ভুয়া তথ্য শনাক্ত করার পাশাপাশি ভুয়া অ্যাকাউন্ট বের করা যাবে। ফেসবুক প্ল্যাটফর্ম থেকে দুর্বৃত্তদের বের করার প্রচেষ্টা হিসেবে বর্তমান প্রচেষ্টার সঙ্গে নতুন পদ্ধতিও যুক্ত করার কথা বলছে প্রতিষ্ঠানটি।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]