1464

09/19/2024 করোনা ভাইরাস: যেমন হতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চিত্র

করোনা ভাইরাস: যেমন হতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চিত্র

লাইফস্টাইল ডেস্ক

৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৯:০৫

মহামারীর সময়ে স্কুল খুললে বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। করোনাভাইরাস মহামারীতে লকডাউনের প্রভাবে সবার আগে বন্ধ হয়েছিল দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। সময়ের পরিক্রমায় অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাধারণ ছুটি এখনও বহাল আছে।

বিভিন্ন দেশে স্কুল চালু হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে, এক পর্যায়ে আমাদের দেশেও চালু হবে। তবে তাতে শিক্ষার্থী আর অভিভাবকরা খুশি হলেও দুশ্চিন্তা কিন্তু বাড়বেই।

এই মহামারীর সময়ে কেমন হতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চিত্র? কী হবে আমাদের করণীয়-বর্জনীয়?

ইউনিসেফের প্রতিবেদনের আলোকে জানানো হল এমন কিছু বিষয় সম্পর্কে।

ইউনিসেফের দেওয়া তথ্য মতে, মোট ১৩৪টি দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয় করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে। এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত ১০৫টি দেশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করার দিন নির্ধারণ করেছে, যার মধ্যে ৫৯টি দেশে ইতোমধ্যেই চালু হয়েছে।

মহামারীর বিপর্যয়ের মাত্রা দেশ-ভেদে ভিন্ন। তাই স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় চালু করার সিদ্ধান্তও একেক দেশে একেক সময়ে হবে।

তবে ইউনিসেফের অনুরোধ, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার বিষয়টাই মুখ্য হতে হবে। ঝুঁকির মাত্রার সঙ্গে উপকারিতার মাত্রার হতে হবে ন্যায্য তুলনা।

দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের ওপর এই সিদ্ধান্তের প্রভাব বিবেচনা করতে হবে স্থানীয় পর্যায়ে, অন্য দেশগুলোকে অনুসরণ করলেই হবে না।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালুর সিদ্ধান্তগুলো প্রকৃত অর্থে স্বতন্ত্র কোনো সিদ্ধান্ত থেকে আসছে না। বরং দেশের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কারখানা, গনপরিবহন ইত্যাদি চালু করার সিদ্ধান্তের সঙ্গেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন দেশে।

এমতাবস্থায় ভবিষ্যত প্রজন্মকে সুস্থ রাখতে, পাশাপাশি শিক্ষক ও অভিভাবকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া।

ইতোমধ্যে যা কিছুই চালু করা হয়েছে প্রায় সবখানেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বালাই নেই বললেই চলে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অন্তত এর ব্যতিক্রম হওয়াটা অত্যন্ত জরুরি।

সাময়িক সময়ের জন্য চালু করে পরিস্থিতি বিবেচনা করে আবার সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া যেতে পারে।

কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে?

প্রথমত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু হওয়াটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে সেই দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ওপর। আর যদি চালু করাই হয়, তবে দৈনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা ও বন্ধ হওয়া সময়ে ভিন্নতা আনা যেতে পারে।


অফিস যাওয়ার সময় আর স্কুলে যাওয়া সময় একই হলে রাস্তায় মানুষের ভিড় বাড়বে, সঙ্গে সংক্রমণের আশঙ্কাও বাড়বে। আবার স্কুলের টিফিনের সময়টা একাধিক হতে পারে, যাতে একসঙ্গে স্কুলের সব শিক্ষার্থী একত্রিত না হয়।

স্কুলের পুরো সময়টা শ্রেণিকক্ষের বদ্ধ পরিবেশে না হয়ে কিছু ক্লাস খোলা স্থানেও নেওয়া যেতে পারে।

আবার ক্লাসের শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমিয়ে কয়েক ‘শিফ্ট’য়ে ক্লাস নেওয়া যেতে পারে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং শিক্ষার্থীদের তা মেনে চলা নিশ্চিত করা হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রধান দায়িত্ব। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব থাকতে হবে সবার ওপরে।

ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, মুখে হাত না দেওয়া, হাঁচি-কাশির সময় হাত নয়, কনুইয়ের ভাঁজে মুখ ঢাকা ইত্যাদি সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অভ্যাস গড়তে হবে।

সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভবনের প্রতিটি অংশ, প্রতিটি আসবাব যেন পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত থাকে সেবিষয়ে থাকতে হবে কড়া নজর।

প্রশ্ন ও জবাবদিহিতা

প্রতিটি সচেতন অভিভাবকের উচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করা যে তারা শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কী কী ব্যবস্থা নিচ্ছে? তাদের মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে কী ব্যবস্থা থাকবে? ক্লাসে কেউ অসুস্থ থাকলে তার এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীদের কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? আর ওই অসুস্থ শিক্ষার্থীর কারণে যে আতঙ্কের সৃষ্টি হবে সেটা সামলানো হবে কীভাবে?

শুধু প্রশ্ন থাকলেই হবে না, কর্তৃপক্ষকেও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। আবার অভিভাবকরাও যে প্রশ্ন করেই দায়িত্ব শেষ করে ফেলবেন সেটাও হবে না। নিরাপদ পরিবেশে নিশ্চিত করতে তাদেরও কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করতে হবে যতটুকু সম্ভব।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]