15829

04/20/2025 বঙ্গবাজার নেই, আছে শুধু ধ্বংসস্তুপ আর হাহাকার

বঙ্গবাজার নেই, আছে শুধু ধ্বংসস্তুপ আর হাহাকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

৫ এপ্রিল ২০২৩ ১৮:৪৮

গত পরশুও যেখানে রঙিন কাপড়গুলো মোড়ানো ছিল স্বচ্ছ পলিব্যাগে, আজ সেই সব কাপড়ের রঙ একই কালো। পরশুও ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে যে বাজার ছিল জমজমাট আজ সেখানে ধ্বংসস্তুপ আর হাহাকার।

নতুন কাপড়ের গন্ধের বদলে সেখানে শুধুই পোড়া গন্ধ। বঙ্গবাজারের পাশপাশি ভয়াবহ এই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের সাততলা এনেক্সকো টাওয়ারেও। অগ্নিকাণ্ডের পর ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এনেক্সকো টাওয়ারের ৫ম ও ওপরের তলাগুলোতে পানি ছেটানো অব্যাহত রেখেছে ফায়ার সার্ভিস।

৩য়, ৪র্থ ও ৫ম তলা থেকে একের পর এক বস্তা ফেলা হচ্ছে নিচে। অগ্নিকাণ্ডের পর অবশিষ্ট কাপড়সহ যেসব মালামাল রয়েছে মূলত সেগুলোই বস্তায় করে নিচে ফেলা হচ্ছে। চারদিকে অসংখ্য উৎসুক মানুষের উপস্থিতি। সব মিলিয়ে মানুষের চিৎকার-চেঁচামেচির চেনা আবহেও অপরিচিত এক বঙ্গবাজার দাঁড়িয়ে আছে ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষত নিয়ে।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তারা। পরে প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর থেকেই পুরো বঙ্গবাজার এলাকার দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়ে গেছে।

বঙ্গবাজার মার্কেটসহ আশপাশের মার্কেটে কুলির কাজ করতেন আক্কাস আলী নামের একজন। তিনি বলেন, এখন ঈদের বাজার, এই সময় এসব মার্কেটে মানুষে গমগম করতো। সারা দেশ থেকে বিক্রেতারা পাইকারি মাল নিতে আসতো, এছাড়া খুচরা বিক্রিসহ বিদেশি ক্রেতাদের আনাগোনা থাকতো এসব মার্কেটে।

সব দোকানে কাস্টমারদের ভিড় লেগে থাকতো, আমরা তাদের মালামাল এক স্থান থেকে অন্য স্থানে এনে দিতাম। কিন্তু আজ সব থেমে আছে, চারদিক থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। সবার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কোনো ক্রেতা বিক্রেতার কোনো ব্যস্ততা নেই। আমরাও আজ বেকার, সবার ক্ষতি।

এনেক্সকো টাওয়ারের পাশেই অস্থায়ী চায়ের দোকান ছিল সাহাবুদ্দিন মিয়ার। তিনিও বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে মানুষের ভিড়, ব্যস্ততা লেগে থাকতো। কিন্তু আজ সব পুড়ে গেছে, কিছুই নেই, নেওয়ার মতো আর কিছুই নেই। ক্রেতা-বিক্রেতার কারও ব্যস্ততা নেই। আগুনে সব শেষ করে দিয়েছে এখানকার সবার। ছাই আর ধোঁয়া ছাড়া আর কিছুই নেই, ব্যবসায়ীরা পথে বসে গেছে আজ।

গতকালের আগুনে বঙ্গবাজারসহ আশপাশের ৬টি মার্কেটের ৫ হাজার ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। প্রাথমিকভাবে আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]