17085

04/23/2025 তালাবদ্ধ ঘরে ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন

তালাবদ্ধ ঘরে ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন

সাতক্ষীরা থেকে

২৯ মে ২০২৩ ০২:২০

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় রাতের আধারে তালাবদ্ধ ঘরে আগুন ধরিয়ে শিশু কন্যাসহ তিনজনকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্ত ভগ্নিপতি সবুজ হোসেন যশোরের শার্শা উপজেলার নারায়ণপুর পোড়াবাড়ি এলাকার আব্দুল বারীর ছেলে। তিনি পেশায় আফিল জুট মিলের শ্রমিক। আগুনে পুড়ে দগ্ধ হয়েছেন চন্দনপুর গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে কাদের হোসেন, তার স্ত্রী শারমিন ও কন্যা ফাতেমা।

এ ঘটনায় অভিযুক্তকে রাতে আশ্রয় দানকারী আব্দুল মান্নান বিহারীর ছেলে সোহাগ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

স্থানীয় চন্দনপুর ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, রোববার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে ওই গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে কাদের হোসেনের ঘরের দরজায় বাইরে তালাবদ্ধ করে জানালা দিয়ে কে বা কারা পেট্রোল ছুড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘুমন্ত অবস্থায় ঘরে থাকা শিশু আগুনে দগ্ধ হলেও দরজা বাইরে থাকায় তারা ঘর থেকে বের হতে পারেনি। পরে তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা উঠে এসে জানালার রড ও তালা ভেঙে উদ্ধার করে। তাদেরকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আশংকাজনক অবস্থায় কাদের হোসেনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।

ইউপি সদস্য আরও জানান, বোনকে স্বামীর বাড়িতে পাঠানোকে কেন্দ্র করে আহত কাদেরের সঙ্গে তার বোনের স্বামী সবুজ হোসেনের কয়েকদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। এমনকি মোবাইল ফোনে কাদেরকে হুমকি-ধামকিও দিতেন সবুজ। বিষয়টি কাদের সম্প্রতি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকেও জানিয়েছিলেন। কয়েকদিনের মধ্যে একটি শালিস বৈঠকের কথা ছিল।

ভুক্তভোগী পরিবার ও প্রতিবেশীদের ধারণা, ভগ্নিপতি সবুজ হোসেন দরজায় তালা মেরে জানালা দিয়ে পেট্রোল ছুড়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ডালিম হোসেন বলেন, সোহাগ ও সবুজ পরস্পর বন্ধু ছিল। কিন্তু সম্প্রতি বোনকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ঝামেলা চলছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় সোহাগকে সঙ্গে নিয়ে চান্দুড়িয়া বাজার থেকে পেট্রোল ও তালা কিনেছিলেন ভগ্নিপতি সবুজ।

অগ্নিদগ্ধ কাদের হোসেনের বোন সুফিয়া খাতুন জানান, তার স্বামী সবুজ তাকে কারণে অকারণে নির্যাতন করে। একারণে তিনি স্বামীর ঘর করতে চান না। এসব নিয়ে তাদের ঝামেলা চলছিল।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আল আহমেদ আল মাসুদ জানান, কাদেরের অবস্থা মারাত্মক অবনতি হওয়ায় রোববার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অন্য দুজনের অবস্থাও শঙ্কামুক্ত নয়।

কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পেয়ে সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আহত কাদেরের বোন সুফিয়া খাতুন (সবুজের স্ত্রী) বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে সবুজের সহযোগী সোহাগকে আটক করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত সবুজ হোসেনকে আটকের চেষ্টা চলছে।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]