17185

04/23/2025 তালাবদ্ধ ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন

তালাবদ্ধ ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন

সাতক্ষীরা থেকে

১ জুন ২০২৩ ১৮:৫৪

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় রাতের আঁধারে ঘরে তালা দিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনায় আহত আব্দুল কাদের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

তিনি বৃহস্পতিবার (১ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। নিহত আব্দুল কাদেরের স্ত্রী শারমিন খাতুনের অবস্থা আশঙ্কাজনক রয়েছে বলে জানা গেছে।

নিহত আব্দুল কাদের সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে।

এর আগে গত রোববার (২৮ মে) মধ্য রাতে কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর গ্রামের আব্দুল কাদেরের ঘরে তালাবদ্ধ করে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন তার ভগ্নিপতি সবুজ হোসেন। অভিযুক্ত ভগ্নিপতি সবুজ হোসেন যশোরের শার্শা উপজেলার নারায়ণপুর পোড়াবাড়ি এলাকার আব্দুল বারীর ছেলে। তিনি পেশায় আফিল জুট মিলের শ্রমিক।

চন্দনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডালিম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘরে তালাবদ্ধ করে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়ার ঘটনায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন আব্দুল কাদের ও তার স্ত্রীর শারমিনসহ তাদের শিশু কন্যা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আব্দুল কাদের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। আব্দুল কাদেরের স্ত্রী শারমিন খাতুনের অবস্থা আশাঙ্কাজনক। শারমিনের শরীরের অধিকাংশ অংশ পুড়ে গেছে। তার বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা খুব কম রয়েছে বলে জানিয়েছে ডাক্তার।

কলারোয়া থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পেট্রোল আগুনে দগ্ধ হওয়া আব্দুল কাদের ঢাকাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে বিষয়টি শুনেছি। পেট্রোল আগুন নিক্ষেপের ঘটনায় আব্দুল কাদেরের বোন সুফিয়া খাতুন (সবুজের স্ত্রী) বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে সবুজের সহযোগী সোহাগকে আটক করা হয় পরবর্তীতে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ মামলার প্রধান আসামি সবুজকে আটকের জন্য তৎপর রয়েছে পুলিশ।

চন্দনপুরের ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, রোববার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে কাদের হোসেনের ঘরে বাইরে থেকে তালা দিয়ে কে বা কারা জানালা দিয়ে পেট্রোল ছুড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা কাদের, তার স্ত্রী ও কন্যা শিশু দগ্ধ হয়। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা উঠে এসে জানালার রড ও দরজার তালা ভেঙে তাদের উদ্ধার করে। দগ্ধ ৩ জনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কাদের হোসেনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে নেওয়া হয়।

তিনি আরও জানান, বোনকে স্বামীর বাড়িতে পাঠানোকে কেন্দ্র করে কাদেরের সঙ্গে তার বোনের স্বামী বেনাপোলের সবুজ হোসেনের কয়েকদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। এমনকি মোবাইল ফোনে কাদেরকে হুমকি-ধামকিও দিত সবুজ। বিষয়টি কাদের অতিসম্প্রতি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকেও জানিয়েছিলেন। কয়েকদিনের মধ্যে একটি শালিস-বৈঠকের কথা ছিল।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার দিন আব্দুল কাদেরের বোন সুফিয়া খাতুন জানান, তার স্বামী সবুজ তাকে কারণে-অকারণে নির্যাতন করে। একারণে সে স্বামীর ঘর করতে চায় না। এসব নিয়ে তাদের ঝামেলা চলছিল। তার স্বামী সবুজ তার ভাই কাদেরকে প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোনে জীবননাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় আমার ভাইয়ের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার স্বামী সবুজ জঘন্যতম এই কাজ করেছে।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]